Prothomalo:
2025-10-24@18:51:50 GMT

‘ভয় যত কম, মানবাধিকার তত বেশি’

Published: 24th, October 2025 GMT

যে সমাজে প্রশ্ন করতে ভয় হয়, রাতে নির্ভয়ে পথ চলতে ভয় হয়, নিজের মত প্রকাশ করতে ভয় হয়, বুঝতে হবে, সেখানে মানবাধিকারের ঘাটতি রয়েছে। ভয় যত কম, মানবাধিকার তত বেশি—মানবাধিকারের এমন সহজ অথচ গভীর ব্যাখ্যা তুলে ধরে ভয়হীন সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন।

আজ শুক্রবার রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ে রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনকক্ষে জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে ‘মানবিক সংকট উত্তরণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রথম আলোর রাজশাহী জেলা বন্ধুসভা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী নিউ গভ.

ডিগ্রি কলেজ, রাজশাহী আলোর পাঠশালাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্যে ফিওদর দস্তয়েভস্কির বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য ইডিয়ট’-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বৈচিত্র্যই পৃথিবীকে সুন্দর রেখেছে এবং এই সৌন্দর্যকে গ্রহণ করার মাধ্যমেই মানবতা মুক্তি পাবে। পৃথিবীর সব সংঘাত ও হানাহানির মূল সমাধান হলো ‘বিউটি অব ডাইভারসিটি’ বা বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যকে মেনে নেওয়া। অন্যের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রাকে সম্মান জানানোর মাধ্যমেই একটি শান্তিময় পৃথিবী গড়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই নিজের জানা সীমিত জ্ঞান দিয়ে অন্যকে বিচার করি, যা সমাজে অসহিষ্ণুতা তৈরি করে। অন্ধের হস্তী দর্শনের মতো আমরা খণ্ডিত সত্যকে আঁকড়ে ধরে থাকি।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি ক্লাসরুমের চেয়ে লাইব্রেরিতে বেশি শিখেছি। বই পড়ার মাধ্যমে পৃথিবীকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ তৈরি হয়।

ফেসবুকের ফেক নিউজ থেকে শুরু করে সমাজের নানা কুসংস্কার—এসব আবর্জনা মস্তিষ্ক থেকে ডিলিট করতে না পারলে সত্যের জন্য জায়গা তৈরি হয় না। জীবন খুব ছোট। এই ছোট জীবনে পরাজয়, অপমান, আনন্দ আর বেদনাকে সঙ্গী করেই এগিয়ে যেতে হয়। নিজের ভেতরের অমিত সম্ভাবনাকে আবিষ্কার করুন এবং ভয়হীন জীবনযাপন করুন।’

তরুণদের উদ্দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তা পাঁচটি পরামর্শ দেন—নিজের শরীরকে ভালোবাসা ও এর যত্ন, প্রশ্ন করার মানসিকতা তৈরি, নিজের পায়ে দাঁড়ানো, পৃথিবী ভ্রমণ ও নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন এবং সম্পর্ককে বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিচালনা করা।

আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলো রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নব ধ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানতে চাপ দিতে হবে

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশকে ইসরায়েলকে গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বন্ধে আরও কঠোরভাবে চাপ দিতে হবে। প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা বা অস্ত্র বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে এ পদক্ষেপ নিতে হবে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার সবচেয়ে তীব্র সমালোচক দেশের একটি হচ্ছে ন্যাটো সদস্য তুরস্ক। শুরুতে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলেও এখন তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সরাসরি অংশ নিচ্ছে। গত মাসে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এরদোয়ানের বৈঠকের পর থেকে এই ভূমিকা আরও জোরদার হয়েছে।

এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। হামাস পক্ষ যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে, বরং তারা প্রকাশ্যেই তাদের অঙ্গীকার জানাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে।

এরদোয়ান আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলকে সম্পূর্ণভাবে যুদ্ধবিরতি ও চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য আরও পদক্ষেপ নিতে হবে। ইসরায়েলকে তার প্রতিশ্রুতি রাখতে বাধ্য করতে হবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে।

তুরস্ক জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে নজরদারি করতে একটি টাস্কফোর্সে যোগ দেবে। প্রয়োজনে তুর্কি সেনারা সামরিক বা বেসামরিক উভয় ভূমিকায় কাজ করতে পারে। পাশাপাশি, গাজা পুনর্গঠনে তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দেন, গাজায় তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো ভূমিকাকে তিনি সমর্থন করেন না।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এরদোয়ান বলেন, ‘গাজায় কাজ করবে যে টাস্কফোর্স, তার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর কাঠামো এখনো স্পষ্ট নয়। এটি বহুমাত্রিক একটি ইস্যু, তাই ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আমরা গাজাকে যেকোনোভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’

তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোকে গাজা পুনর্গঠনে অর্থায়নের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এই বিশাল কাজটি কোনো একক দেশের পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ও তুরস্কের দীর্ঘদিনের মিত্রতা নতুন নিম্নস্তরে নেমে এসেছে। আঙ্কারা অভিযোগ করেছে, নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে—যা ইসরায়েল বারবার অস্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ