রশিদ-জাম্পাকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের রিশাদ
Published: 24th, October 2025 GMT
বাংলাদেশি তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন যেন হয়ে উঠেছেন দলের নতুন ভরসা। মিরপুরের ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তার জাদুকরী পারফরম্যান্সে ফিরেছে বাংলাদেশের পুরনো ছন্দ, ফিরেছে হাসিও। দীর্ঘ ১৯ মাস পর ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা। আর সেই জয়ের নেপথ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম রিশাদ হোসেন।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বৃহস্পতিবার মিরপুরে বল হাতে আবারও আগুন ঝরালেন এই ২২ বছর বয়সী লেগস্পিনার। ইনিংসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ক্যারিয়ারসেরা ৬ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে যোগ করেন আরও ৩টি শিকার। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে মোট ১২ উইকেট নিয়ে গড়লেন ইতিহাস। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বিশ্বের যেকোনো স্পিনারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড এখন রিশাদের।
আরো পড়ুন:
সৌম্য-সাইফের তাণ্ডব থামল, রেকর্ডের পাতায় তাদের অর্জন
১৭ বছরে এই প্রথম কোহলির এমন অস্বস্তিকর রেকর্ড
এই রেকর্ডের আগের মালিক ছিলেন বিশ্বের দুই নামকরা লেগস্পিনার অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা ও আফগানিস্তানের রশিদ খান। দুজনই ১১ উইকেট করে নিয়ে ভাগ করে নিয়েছিলেন শীর্ষস্থান। কিন্তু মিরপুরে রিশাদের ঝড়ো পারফরম্যান্সে সেই রেকর্ড এখন এককভাবে বাংলাদেশের তরুণ তারকার দখলে।
তবে এখানেই শেষ নয়। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকায় এখন রিশাদ দ্বিতীয়। তালিকার শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশেরই মোস্তাফিজুর রহমান। যিনি ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে অমর কীর্তি গড়েছিলেন।
রিশাদের নাম এখন সেই তালিকায় মোস্তাফিজ, ভাসবার্ট ড্রেকস ও মাশরাফি বিন মুর্তজার পাশে।
বল হাতে যেমন সফল, ব্যাট হাতে তেমনি কার্যকর অবদান রেখেছেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। তার সাহসী পারফরম্যান্সেই বাংলাদেশ পেয়েছে প্রতীক্ষিত সিরিজ জয়, আর তিনি নিজে হয়েছেন ‘সিরিজসেরা’।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড উইক ট ন র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
কী অপেক্ষা করছে মিরপুরে?
যদি এভাবেও বলা হয় নিজেদের পাতা ফাঁদে বাংলাদেশ! তাহলে ভুল হবে না নিশ্চয়ই। স্পিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাকাল করার ভাবনা থেকে মিরপুরের ২২ গজকে বাংলাদেশ চেনা রূপে সাজিয়েছিল। কিন্তু ড্যারেন স্যামির মস্তিষ্ক খেল দেখাল।
স্পিনের বদলায় স্পিন দিয়েই ঘায়েল করলো প্রতিপক্ষ শিবিরকে। তাইতো প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা আনতে পারে ক্যারিবীয়নারা। আজ সিরিজে শেষ ম্যাচ একই মাঠ মিরপুরে। দুপুর দেড়টা থেকে শুরুর অপেক্ষায় থাকা সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচকে ঘিরে একটাই প্রশ্ন, উৎকণ্ঠা আজ কী অপেক্ষা করছে মিরপুরে?
একদিনে আগেই বাংলাদেশ ম্যাচ হারলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে। ম্যাচ টাইয়ের পর প্রথমবার সুপার ওভার খেলতে পারে। সুপার ওভারে অবশ্য সুপার ফ্লপ ছিল স্বাগতিকরা। ম্যাচ পরিস্থিতি বোঝার ঘাটতি, বোলিং পরিবর্তনে আনাড়িপনা, সুপার ওভারে ভুল ব্যাটসম্যান নির্বাচন- সর্বোপরি অতীতের সকল ব্যর্থতা আর বিতর্ককেই ছাপিয়ে গেছে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। তবুও আশা দেখিয়েছেন অধিনায়ক, ‘‘আমরা পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি।’’ দু’দলেরই সামনে সুযোগ সিরিজ নিশ্চিতের, পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগের।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৩৫টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। ১৮টিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। জয় পাওয়া সিরিজে তিন ম্যাচের সিরিজ আছে ২৪টি। এর বাইরে ৫, ৪, ২ ও ১ ম্যাচের সিরিজ আছে ১১টি।
তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে এগারবার। ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশও আছে ১১টি। এছাড়া তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জিতেছে দুইটি।
বাংলাদেশ আজ জিতলে জিতবে ৩৬তম ওয়ানডে সিরিজ। ১-১ সমতায় থাকা সিরিজের পারফরম্যান্স, অতীত রেকর্ড একেবারেই খারাপ নয়। তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ানোর রেকর্ড আছে ৬টি। সিরিজ জয়ের কীর্তি ৫টি। এছাড়া পিছিয়ে থেকে সিরিজ জয়ের রেকর্ড আছে ২টি, সিরিজ নিশ্চিতের পর শেষ ম্যাচ হেরেছে ৪টি।
অতীতেও বলা, পরিসংখ্যান কেবলই একটি সংখ্যা। যা শুধু আত্মবিশ্বাস দিতে পারে। বাংলাদেশের জন্য এই মুহূর্তে এসব পরিসংখ্যান খুব একটা মাইনে রাখবে না। মাঠের ২২ গজে পারফরম্যান্সই এখন বড় বিষয়। বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলতে নেমে দল কতটা জয়ের জন্য লড়তে পারেন, জান দিয়ে খেলতে পারেন সেটাই দেখার। এ বছর ওয়ানডেতে রেকর্ড খুবই বাজে। ১০ ম্যাচে মাত্র ২ জয় পেয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে আজ নিজেদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের রান করতে হবে। স্পিনাররা আবার কঠিন পরীক্ষা নেবে বলার অপেক্ষা রাখে না। দেখার বিষয়, স্পিন-স্পিন আক্রমণে শেষ হাসিটা কারা হাসতে পারে?
ঢাকা/ইয়াসিন