আহমদ রফিকের কাজ ও আদর্শ আরও বড় মাপে থেকে যাবে
Published: 24th, October 2025 GMT
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক এখন নেই। কিন্তু তাঁর কাজ ও আদর্শ আরও বড় মাপে থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। শুক্রবার বিকেলে আহমদ রফিকের শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক শোকসভা জাতীয় কমিটি’র আয়োজনে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আহমদ রফিকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শোকসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। দুটি রবীন্দ্রসংগীত ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু বিরহ দহন লাগে’ এবং ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে হারাই ক্ষণে ক্ষণ’ পরিবেশন করেন অসীম দত্ত। এরপর আহমদ রফিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ২ অক্টোবর ৯৬ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।
এরপর শুরু হয় আলোচনাপর্ব। আলোচকেরা আহমদ রফিককে নিয়ে স্মৃতিচারণা, তাঁর সমাজতান্ত্রিক, রাজনৈতিক মতাদর্শ ও ব্যক্তিজীবন, কাব্য ও সাহিত্যচর্চা, রবীন্দ্র গবেষণাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তাঁর জীবনকর্ম পাঠ করেন সংস্কৃতিকর্মী ইশরাত রহমান। সঞ্চালনা করেন শোকসভা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ইসমাইল সাদী।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আহমদ রফিক ছিলেন আমাদের সবার অত্যন্ত আপনজন। বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও সবাই তাঁকে “ভাই” বলে ডাকতেন, তিনিও “ভাই” বলে আপন করে নিতেন। এক অসাধারণ ব্যক্তিক্রম চরিত্রের মানুষ ছিলেন তিনি। আহমদ রফিক দুই অর্থেই ভাষাসংগ্রামী ছিলেন। একদিকে তিনি সরাসরি মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের যুক্ত ছিলেন। দ্বিতীয়ত তিনি ছিলেন সাহিত্যিক। সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তিনি ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করা, সমৃদ্ধ করা, ভাষার ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মানুষের সাংস্কৃতিক চর্চাকে উন্নত করতে আজীবন সংগ্রাম করেছেন।’
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আহমদ রফিকের সংস্কৃতিচর্চার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল। তিনি সমাজবিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন। সেই সমাজবিপ্লবের জন্য সাংস্কৃতিক চর্চার ভেতর দিয়ে জনমানসের প্রস্তুতির ক্ষেত্র তৈরি করার কাজ করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে বিশ্বাস করতেন না। নিজে জীবনে তা প্রতিষ্ঠা করেছেন। কোনো ব্যক্তিগত সম্পদ তাঁর ছিল না। জীবনের পরিণামের কথা না ভেবে সব ব্যক্তিগত সম্পদ তিনি দান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ কারণে জীবনের অন্তিম পর্যায়ে তাঁকে অর্থকষ্টেও পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এখন সভ্যতার সংকটের চেয়ে মানবিকতার সংকটই প্রধান। এমন সংকটময় সময়ে আহমদ রফিকের মতো মানুষের কাজ ও আদর্শ আমাদের অনুসরণ করতে হবে।’
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আহমদ রফিকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শোকসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়ালটন শোরুম থেকে আর্থিক সহায়তা পেল ২ পরিবার
ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় দুই মৃত ক্রেতার পরিবারকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সিলেটে ওয়ালটনের দুই ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম- কবির এন্ড ব্রাদার্স এবং সিদ্দিকী ইলেকট্রনিকস কর্তৃপক্ষ।
পরিবারদ্বয়ের পক্ষ থেকে মো. জালাল মিয়ার (মৃত) স্ত্রী মরিয়াম আক্তার হনুফা ও ফজলু মিয়ার (মৃত) স্ত্রী মরিয়ম বেগম আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন। আর্থিক সহায়তা পেয়ে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
আরো পড়ুন:
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ ও জেনারেল হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে ওয়ালটনের স্মার্ট ইনভার্টার চিলার
সিরাজগঞ্জে স্মার্টফোনের নতুন ‘নেক্সজি ব্র্যান্ডশপ’ চালু
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) শহরের পীরের বাজারে ওয়ালটনের ‘কবির এন্ড ব্রাদার্স’ শোরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি পরিবারকে মোট দুই লাখ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করা হয়। পরিবার দুটির বকেয়া কিস্তির টাকাও মওকুফ করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী এবং ওয়ালটন ডিষ্টিবিউটর নেটওয়ার্কের হেড অব সেলস মো. ফিরোজ আলম।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, খাদিমপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বদরুল ইসলাম আজাদ, ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শহীদুজ্জামান রানা, ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ডিভিশনাল সেলস ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার পিয়াল কুমার দাস, কবির অ্যান্ড ব্রাদার্স এর ভাইস চেয়ারম্যান জামাল আহমদ সিদ্দিকী ও সিদ্দিকী ইলেকট্রনিকস এর স্বত্বাধিকারী কবির আহমদ সিদ্দিকী প্রমুখ।
জানা গেছে, চামেলিবাগ এলাকার ক্রেতা জালাল মিয়া গত মে মাসের ১৭ তারিখে কবির অ্যান্ড ব্রাদার্স শোরুম থেকে কিস্তিতে ২৪ হাজার ৯৯০ টাকার একটি এলইডি টিভি কেনেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অন্যদিকে, সিলেট সদর শহরের পূর্ব লামা পাতা এলাকার ফজলু মিয়া বাসায় ব্যবহারের জন্য চলতি বছলের মার্চের ৩০ তারিখে সিদ্দিকী ইলেকট্রনিক শোরুম থেকে কিস্তিতে ৪৩ হাজার ৫৭০ টাকা দামের একটি ফ্রিজ কেনেন। তিনিও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ১ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দুই মৃত ক্রেতার পরিবারের বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন। বকেয়া কিস্তি মওকুফসহ তাদেরকে দেওয়া হয়েছে নগদ আর্থিক সহায়তা।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, “ওয়ালটনের ক্রেতাদের পরিবারের মৃত্যুতে এই বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে শোরুম কর্তৃপক্ষ এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ব্যাপার। শুধু তাই নয়, বাকি কিস্তির টাকাও মওকুফ করে দিয়েছে তারা। এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। এসব সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ওয়ালটন তার ক্রেতাদের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে স্থান করে নিচ্ছে। এসব কাজ একমাত্র ওয়ালটনের দ্বারাই সম্ভব। ওয়ালটন নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।”
এ সময় অন্যান্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের হেড অব সেলস মো. ফিরোজ আলম বলেন, “দেশ ও মানুষের সেবায় মানবিক দিক বিবেচনায় ওয়ালটন এসব অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। শুধু মুনাফা অর্জনই ওয়ালটনের লক্ষ্য নয়। ক্রেতাদের কারণেই ওয়ালটন আজ দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড। তাই ক্রেতাদের ও তার পরিবারের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তাদেরকে উচ্চমানের পণ্য ও সঠিক সেবা দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ওয়ালটন পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা আরো বৃদ্ধি, গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করার লক্ষ্যেই দেশব্যাপী এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওয়ালটন। এসব কার্যক্রম চলামন থাকবে।”
ঢাকা/মাহফুজ/এসবি