পিসিবির দেওয়া আইনি নোটিশ ভিডিওতে ছিঁড়ে ফেললেন মুলতানের মালিক
Published: 24th, October 2025 GMT
পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দল মুলতান সুলতানসের মালিক আলী খান তারিন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পাঠানো আইনি নোটিশের জবাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি প্রকাশ্যে সেই নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেছেন। বোর্ডের সঙ্গে করা ১০ বছরের চুক্তির কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মূলত এ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।
আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে পিএসএলের প্রথম দশক। একই সঙ্গে শেষ হবে মুলতান সুলতানসের বর্তমান মালিকানার মেয়াদও। নতুন করে মালিকানা ধরে রাখতে হলে আবারও দরপত্রে অংশ নিতে হবে আলী তারিনকে।
মুলতান সুলতানসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মাসে পিসিবি তাদের মালিককে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে পিএসএল ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা সব সমালোচনামূলক মন্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানের ঘটনায় আইসিসির ওপর ক্ষুব্ধ পাকিস্তান১৯ অক্টোবর ২০২৫নোটিশে হুমকি দেওয়া হয়, তা না মানলে ফ্র্যাঞ্চাইজির চুক্তি বাতিল করা হবে। এমনকি আলী তারিনকে আজীবনের জন্য কোনো ক্রিকেট দলের মালিকানা পাওয়া থেকেও নিষিদ্ধ করা হবে। যদি এই কালোতালিকাভুক্তি কার্যকর হয়, তাহলে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষে নতুন দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগও হারাবেন তিনি।
কিন্তু কোনো হুমকিই আলী তারিনকে থামাতে পারছে না। বরং তিনি প্রকাশ্যে পিসিবির সিদ্ধান্তগুলোর বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত এক বছরে তিনি পিএসএল ব্যবস্থাপনার অন্যতম কড়া সমালোচক হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে যোগাযোগের ঘাটতি ও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন তুলেছেন।
মুলতান সুলতানসের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গঠনমূলক সমালোচনাকে অপরাধ হিসেবে দেখা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটি বর্তমান ব্যবস্থাপনার সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচায়ক। স্পষ্ট বোঝা যায়, পিএসএল এখন আর প্রশ্ন বা জবাবদিহির জন্য উন্মুক্ত নয়। এমনকি তাঁদের কাছ থেকেও নয়, যাঁরা লিগটিকে শক্তিশালী করতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। সৎ প্রতিক্রিয়া বন্ধ করে দিয়ে কোনো বড় লিগ গড়ে তোলা যায় না। আলী তারিন পাকিস্তানি ক্রিকেটের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, আর তাঁর একমাত্র লক্ষ্য পিএসএলকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যা খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা প্রাপ্য।’
আরও পড়ুনভেঙে গেল রিজওয়ানের বিশ্ব রেকর্ড, টি–টোয়েন্টিতে এখন এক বছরে সর্বোচ্চ রান কার৭ ঘণ্টা আগেপরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন আলী তারিন গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে এখন উল্টো আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যদি তোমরা আরও যোগ্য হতে, তাহলে জানতে, এ ধরনের বিষয় এভাবে সমাধান করা হয় না।’
আলী তারিন আরও জানান, তাঁর আইনজীবী দল ক্ষমা চাওয়ার কোনো আইনি ভিত্তি খুঁজে পায়নি। তবু পিএসএলের স্বার্থে বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। তবে ভিডিওর একেবারে শেষে তিনি নোটিশটি ছিঁড়ে ফেলেন। সঙ্গে রসিকতা করে বলেন, ‘আশা করি, আমার এই ক্ষমা প্রার্থনার ভিডিও আপনাদের ভালো লেগেছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ছাত্রী। তাদের অভিযোগ, ক্লাসে অশালীন কথা বলা এবং ফেসবুকে আপত্তিকর বার্তা পাঠাতেন ওই শিক্ষক।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।
আরো পড়ুন:
অবরোধ তুলে নেওয়ার খবর, তবে সড়কে আছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
পাবিপ্রবির মানবিক অনুষদের ডিন হলেন হুমায়ূন কবীর
ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে করা অভিযোগ করা হয়েছে, প্রভাষক লিমন হোসেন বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করছেন। তিনি তার কক্ষে ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। অনেক সময় তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন বার্তা পাঠান। যেমন, তার স্ত্রী তাকে সুখী করতে পারেন না। তিনি যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক একাকিত্বে ভোগেন। এছাড়াও অনেক আপত্তিকর কথা, যা প্রকাশ করার মতো নয়।
অপর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। সেখানে কয়েকটি অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, শিক্ষক লিমন হোসেন ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ক্লাসে পড়ানোর ছলে তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয় সকলের সামনে উপস্থাপন করে তাদের হেয় করেন।
অভিযোগ করা হয়, একজন শিক্ষক হিসেবে লিমন হোসেনের পড়ানোর পদ্ধতি কোনোভাবেই গবেষণা কেন্দ্রিক নয়। তিনি গলাদ্ধকরণ পদ্ধতিতে বিশ্বাস করেন। যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধাকে বিনষ্ট করে। এছাড়া লিমন হোসেন স্বজনপ্রীতি নীতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেন, যা পরবর্তীতে বড় অপরাধের জন্ম দেয়।
বিগত দিনে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত চক্রের সঙ্গে, এমনকি সম্প্রতি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও প্রভাষক লিমন হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং প্রকাশ্যে তাদের মদদ দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসের একটি মিলনায়তনে শিক্ষার্থীরা লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে তারা দ্রুত লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘উনি (লিমন হোসেন) মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী। যা আমাদের বিব্রত করে। এমনকি, নিজের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম-বিচ্ছেদের গল্পও বারবার বলে বিব্রত করতে থাকেন। কে কার সঙ্গে মিশবে, না মিশবে— সে ব্যাপারেও তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করেন।’’
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক লিমন হোসেন বলেন, ‘‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর বলেন, ‘‘উপাচার্যের কাছে দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই।’’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/সাব্বির/বকুল