কোনো কিছু গায়ের জোরে চাপিয়ে দেওয়া হলে দায়দায়িত্ব সরকারের: মির্জা ফখরুল
Published: 11th, November 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দীর্ঘ নয় মাস আপনারা (সরকার) সংস্কারের নামে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন এবং অনেকগুলো বিষয়ে একমত হলেন; সেই একমত হওয়া বিষয়গুলোর বাইরের কোনো কিছু যদি গায়ের জোরে মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে চান, তাহলে সব দায়দায়িত্ব আপনার।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
জামায়াতের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা কিন্তু ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমরা মনে করি, আমার কর্মেই হবে আমার বেহেশত। আমার কর্মের মধ্য দিয়ে আমি বেহেশতে যাব। আমি যদি মানুষকে ভালোবাসি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, মিথ্যা কথা না বলি, সুদ না খাই, তাহলে বেহেশতে যাওয়ার একটি পথ তৈরি হবে। জামায়াতের টিকিট কাটলেই কি কেউ বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের কাছ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।’
পিআর পদ্ধতিতে এ দেশের মানুষ পরিচিত নয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা (পিআর পদ্ধতি) আমরা গ্রহণ করব না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বলছে, পিআর পদ্ধতিতেই ভোট করতে হবে। সেটা না করলে নাকি ভোট হবে না। ভাই, ভোটকে এত ভয় পাচ্ছ কেন? কারণ, তারা জানে, ভোট হলে তাঁদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।’
আরও পড়ুনজুলাই সনদ: সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় দলগুলো৮ ঘণ্টা আগেএনসিপির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁওয়ের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘ওরা তো ভোটেই পাবে না। এই কারণে ওরাও জামায়াতের সঙ্গে সুর মিলায় কহচে, পিআর আগত দিবা হবে, সনদ বাস্তবায়ন করিবা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো শুধুই বিভ্রান্ত করা। ভোট পেছানো আর আগের ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত। আমরা সংস্কারের যেগুলোতে একমত হয়েছি, বিএনপি শুধু সেগুলোর পক্ষে থাকবে। অন্য কিছুর দায় বিএনপি নেবে না। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শিশুদের সুস্থ করে গড়ে তোলার জন্য শারীরিক শিক্ষা খুবই দরকার। সেই সঙ্গে শিশুরা গান শিখলে অসুবিধা কোথায়? অসুবিধা তো নাই, বরং তারা ভালো কিছু শিখতে পারছে।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের শেষ চেষ্টা, বিএনপি–জামায়াত–এনসিপি কী ভাবছে৯ ঘণ্টা আগেনির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সামনে সব সময় সুযোগ আসে না। এবার একটি সুযোগ এসেছে। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক একটি সরকার গঠন করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে গিয়ে হরতাল ঘোষণা করেছে, দেখলাম ঢাকাতে কিছু গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এখন যারা গাড়ি পোড়াবে, দেশের সম্পদ নষ্ট করবে, তাঁকে কি আমরা এ দেশে আসতে দেব? সাহস থাকলে আসো। এ দেশের জনগণের সামনে এসে রাজনীতি করো। দিল্লিতে বসে দেশের সর্বনাশ আর কোরো না।’
মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহম্মদ আলীসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুনজামায়াত দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল১৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ব এনপ ব এনপ র ব হ শত ফখর ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-জামায়াত দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে: মজিবুর রহমান
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, দুটি রাজনৈতিক দলের ভোট এবং কর্মী বেশি। এই অহংকারে তারা দেশকে জিম্মি করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াতসহ পুরোনো দলগুলো দেশকে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন মজিবুর রহমান। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দুই রাজনৈতিক দলের অহংকার চূর্ণ করে দিতে জনগণের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
আজ মঙ্গলবার এবি পার্টির ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন মজিবুর রহমান মঞ্জু। মতবিনিময় সভাটি সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজন করা হয়। এ সময় তিনি ঢাকা-৫ আসনে এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থী লুৎফর রহমান আব্বাসীকে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
সংঘাতমুখী রাজনীতিকে না বলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতার পর থেকে দেশকে সংঘাত ও বিভেদের রাজনীতি উপহার দিয়েছে। তারা জাতিকে বিভক্ত করেছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন সেই পুরোনো সংঘাতমুখী বিভেদের রাজনীতি আর দেখতে চায় না।
ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতি থেকেই স্বৈরাচার জন্ম নেয় উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ব্যক্তির যখন পতন ঘটে, তখন পুরো দলের পতন হয়। কিন্তু এবি পার্টি কোনো ব্যক্তিনির্ভর দল নয়। তারা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়তে চাই, যেখানে কেউ ফুটপাতে কুকুরের সঙ্গে ঘুমাতে বাধ্য হবে না। জনগণের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনই এবি পার্টির লক্ষ্য।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব বারকাজ নাসির আহমদ, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক আজিজা সুলতানা, কেন্দ্রীয় সহকারী প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ এবং কেন্দ্রীয় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিষয়ক সহসম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার আহ্বায়ক সুলতান আরিফসহ দলীয় নেতারা।