জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাবিতে হামলাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতা
Published: 4th, March 2025 GMT
গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার দায়ে গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দুই নেতা জেলে ও অসুস্থতার মিথ্যা অভিনয় করে হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে, জাবি শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহান। তিনি জেলে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর অসুস্থতার মিথ্যা অভিনয় করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছেন লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ইয়া রাফিউ শিকদার আপন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামালউদ্দিন রুনু। আদালতের রায়ে শরিফুল ইসলাম সোহান পরীক্ষা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
‘ছাত্রদল চাইলে গুপ্ত সংগঠনের অস্তিত্ব থাকবে না’
চার দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী মিছিল
জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি পরীক্ষা দিতে এসে আটকের পর পরবর্তী পরীক্ষার আগেই আদালত থেকে জেলে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি আনেন সোহান। তার আইনজীবী এসে অনুমতি পত্রের কপি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দেন। সেই সঙ্গে এর অনুলিপি বিভাগ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে প্রেরণ করেন। এরপর থেকে নিয়মিত জেলে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।
এছাড়া হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাউফু শিকদারকে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তবে অসুস্থ না হলেও তিনি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের কাছে হামলাকারীরা পরীক্ষা দিতে পারবে না- এমন কোন নির্দেশনা নেই। তাই বিশেষভাবে পরীক্ষার দেওয়ার আবেদন কাছে আসলে আমাদের সেই কাজ করতে হয়। মূলত বিভাগ ও রেজিস্ট্রারের কাছে এর অনুমতি সংক্রান্ত আবেদন আসে। আমরা কেবল তা বাস্তবায়ন করি “
শরিফুল ইসলাম সোহানের বিষয়ে পরিশেবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি জামালউদ্দিন রুনু বলেন, “আমাদের কাছে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতিপত্র এসেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে। আমরা শুধু পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছি।”
আপনের বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হরে কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, “একজন পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আর পরীক্ষা কমিটির সভাপতি বিস্তারিত বলতে পারবেন।”
উল্লেখ্য, ইয়া রাফিউ শিকদার আপন শাখা ছাত্রদলের করা জুলাই মামলার ১৩৭ নাম্বার আসামি।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে জার্মানির একটি স্টেট, কেন
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফটের টিমসসহ বেশ কয়েকটি সফটওয়্যারের ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেট। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী তিন মাস পর পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করতে পারবেন না। তথ্য সংরক্ষণে বিদেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্টের ডিজিটাল রূপান্তরবিষয়ক মন্ত্রী ডির্ক শ্রোয়েডটার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই। এ জন্যই মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছি।’ নতুন সিদ্ধান্তের আওতায় প্রাথমিকভাবে শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেটের ৬০ হাজার সরকারি কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী এই পরিবর্তনের আওতায় আসবেন। পরবর্তী ধাপে আরও প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষককে একই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্ট ২০২৪ সাল থেকেই ধাপে ধাপে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ব্যবহারের বিকল্প খুঁজে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অফিস ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের পরিবর্তে ‘লিব্রে অফিস’ এবং ই–মেইল ও ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাপনায় ‘মাইক্রোসফট আউটলুক’–এর জায়গায় ‘ওপেন-এক্সচেঞ্জ’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পরবর্তী ধাপে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বাদ দিয়ে একটি লিনাক্সভিত্তিক বিকল্প চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ডির্ক শ্রোয়েডটার জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে জ্বালানিনির্ভরতা নিয়ে যেমন সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তেমনি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এই যুদ্ধ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, আমরা শুধু জ্বালানিতেই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতেও কতটা নির্ভরশীল। এখন সময় এসেছে এসব নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার।’ স্টেট গভর্নমেন্ট জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো ক্লাউড সেবার বদলে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ক্লাউড প্ল্যাটফর্মেই তারা সরকারি তথ্য সংরক্ষণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ইউরোপের নির্ভরতা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশেষত মাইক্রোসফটের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রতিযোগিতাবিষয়ক তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, মাইক্রোসফট তাদের ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে টিমস সফটওয়্যার বান্ডিল করে বিক্রি করে, যা বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ কমিয়ে দেয়। ডির্ক শ্রোয়েডটার বলেন, ‘শেলসভিগ-হোলস্টেইনের নেওয়া এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া