দাবি করতেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আসলে তিনি একজন প্রতারক
Published: 27th, March 2025 GMT
প্রতারণার অভিযোগে আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার চিশতিনগর মাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলেছে, ‘মিনহাজ একজন ভয়ংকর প্রতারক।’ তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মিনহাজ নিজেকে কখনো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কখনো কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক বলে পরিচয় দিতেন। দাবি করতেন, নিজের নামে সুইস ব্যাংকে ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার গচ্ছিত আছে।
শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন মোল্লা আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, নড়িয়া থানা-পুলিশের সহায়তা নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল প্রতারক মিনহাজকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ দুপুরে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শরীয়তপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। মিনহাজ বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
পুলিশসহ একাধিক সূত্র জানায়, তারেক রহমানের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠ পরিচয় আছে দাবি করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বড় পদ পাওয়ার আশ্বাস দিতেন মিনহাজ। দাবি করতেন, তিনি তারেক রহমানকে দল চালানোর বিষয়ে পরামর্শ দিতেন।
পরে তারেক রহমানের নির্দেশে মিনহাজের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা হয়েছে। আজ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মো.
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও নিজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে দাবি করতেন মিনহাজ। তিনি নতুন নতুন কায়দায় প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করতেন। তিনি কোথাও নিজেকে কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক বলে পরিচয় দিতেন। আবার কোথাও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দাবি করতেন।
মিনহাজের বাড়ি নোয়াখালীর মিরওয়ারিশপুরে। কথিত বিসিএস ক্যাডার স্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলার আসামি করে, আবার ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতেন মিনহাজ। সম্প্রতি মিনহাজ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
নিউ ইয়র্কে মেয়র নির্বাচন আজ, কুওমোকে সমর্থন ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আজ মঙ্গলবার। আগাম ভোট শুরু হয়েছে আগেই। নির্বাচনে গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন জরিপে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। এ অবস্থায় তাকে ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থন করেছেন।
মঙ্গবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
৬০ হাজার ৮০২ টন গম নিয়ে দেশে এল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় জাহাজ
আমি থাকাকালে তাইওয়ানে হামলার ‘পরিণতি কী হবে’ চীন জানে: ট্রাম্প
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিউ ইয়র্ক বাসীদেরকে বামপন্থি প্রার্থী জোহরান মামদানিকে নির্বাচিত না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্প স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেন, “আপনি ব্যক্তিগতভাবে অ্যান্ড্রু কুওমোকে পছন্দ করুন বা না করুন, আপনার আসলে কোনো বিকল্প নেই। আপনাকে অবশ্যই তাকে ভোট দিতে হবে এবং আশা করি তিনি দুর্দান্ত কাজ করবেন। তিনি এটি করতে সক্ষম, মামদানি নন!”
নিউ ইয়র্কের সাবেক গভর্নরের প্রতি ট্রাম্পের এই সমর্থন বহুল আলোচিত মেয়র নির্বাচনের প্রাক্কালে এসেছে।
এর আগে রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, মামদানি নির্বাচিত হলে তিনি তার শহর নিউ ইয়র্কে ফেডারেল তহবিল পাঠাতে অনিচ্ছুক হবেন।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ট্রাম্প বলেন, “প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিউ ইয়র্কে প্রচুর অর্থ দেওয়া আমার জন্য কঠিন হবে, কারণ যদি নিউ ইয়র্ক পরিচালনা করেন একজন কমিউনিস্ট, তাহলে আপনি কেবল সেখানে পাঠানো অর্থ নষ্ট করছেন।”
উগান্ডায় জন্ম নেয়া নেয়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত মা-বাবার সন্তান মামদানি একজন মুসলিম।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, মামদানি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত অ্যান্ড্রু কুওমোর তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে আছেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দীর্ঘদিনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কুওমো, ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে মামদানির কাছে হেরে যাওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া পিছিয়ে আছেন।
ট্রাম্প রিপাবলিকান হওয়া সত্ত্বেও দলীয় প্রার্থী স্লিওয়াকে সমর্থন করেননি।
ফেডারেল তহবিল সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “মামদানি নির্বাচিত হলে আমি ফেডারেল তহবিলে অবদান রাখার সম্ভাবনা খুবই কম।”
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্য বা শহরগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে ফেডারেল অনুদান কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক সিটি এই অর্থবছরে ফেডারেল তহবিলে ৭.৪ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যা শহরের মোট ব্যয়ের প্রায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে মামদানি জয়ী হলে এই সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মামদানি ২৪ জুন প্রাইমারিতে এক অবিশ্বাস্য জয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের হতবাক করে দেন।
মামদানি তার প্রচারণার মাধ্যমে নিউ ইয়র্কবাসীদেরকে কুওমোর মতো প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছেন, কুওমো তিনবার নিউ ইয়র্কের গভর্নর নির্বাচিত হয়েছিলেন কিন্তু ২০২১ সালে নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের একটি প্রতিবেদনের পর পদত্যাগ করেন।
নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের জন্য সস্তায় খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান- এ তিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মামদানি। শনিবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ফোন করেন মামদানিকে। জিতলে তাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন ওবামা। মামদানির মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ