অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচনে বিরোধীদের ভরাডুবি, লিবারেল পার্টিতে টানাপোড়েন
Published: 4th, May 2025 GMT
অস্ট্রেলিয়ায় সদ্য অনুষ্ঠিত ফেডারেল নির্বাচনে বিরোধী দল লিবারেল পার্টি তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের মুখে পড়েছে। শুধু দল নয়, নিজ আসনেও হেরে গেছেন দলনেতা পিটার ডাটন। তাই গত ২৪ বছর ধরে কুইন্সল্যান্ডের ডিকসন আসনের সংসদ সদস্য থাকা ডাটন এখন আর পার্লামেন্টের সদস্য নন।
বিবিসি জানায়, অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিরোধী দলনেতা যিনি নির্বাচনে নিজের আসন খুইয়েছেন। যা দেশটির রাজনীতিতে নজিরবিহীন। একে বলা হচ্ছে ‘ডাটন এক্সপেরিমেন্টে’র চূড়ান্ত ব্যর্থতা।
লিবারেল এমপি কিথ ওলাহান বলেছেন, ‘মানুষ আমাদের একটি বার্তা দিয়েছে, সেটি শুনতে হবে’। অনেকে মনে করছেন, ডাটনের ট্রাম্পসুলভ প্রচার ভোটারদের বিরক্ত করেছে। নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলটি নিজেদের পুনর্গঠনের চাপে পড়েছে এবং ডাটনের পরিবর্তে নতুন নেতৃত্ব খুঁজছে।
রয়টার্স জানায়, নির্বাচনে বড় জয় পেয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ শুরু করেছে অ্যান্থনি আলবানিজের সরকার। রোববার সিডনির নিজ নির্বাচনী এলাকায় একটি কফি শপে সমর্থকদের সঙ্গে নাস্তা করে সাংবাদিকদের আলবানিজ বলেন, অস্ট্রেলিয়ান জনগণ বিভাজনের নয়, ঐক্যের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, নতুন সরকার গৃহনির্মাণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কাজ করবে।
এখন পর্যন্ত ৯০টির বেশি আসনে লেবার পার্টি এগিয়ে রয়েছে, যেখানে লিবারেল জোটের আসন সংখ্যা নেমে এসেছে ৪০টিরও নিচে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন শুধু এক দলের পরাজয় নয় বরং পুরো অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণের অভিযোগ, দুইদিনেও উদ্ধার হয়নি পল্লী চিকিৎসক
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।'
অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।
এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।
পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে।
তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’