পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের হামলার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ সময় নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে আশপাশের পাহাড়গুলোর দিকে ছুটে যান তাঁরা। রয়টার্সকে স্থানীয় বাসিন্দারা এ কথা জানান।

হামলার সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ হচ্ছিল, ভূমি কেঁপে উঠছিল। তখন মসজিদের লাউড স্পিকারগুলোতে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছিল।

৪৬ বছর বয়সী বাসিন্দা মুহাম্মদ শায়ের মীর বলেন, ‘(বিস্ফোরণের শব্দ শুনে) আমরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসি। তখন আরও বিস্ফোরণ হয়। পুরো ঘর কেঁপে উঠছিল। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমরা বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যাই।’

আজ বুধবার সূর্যোদয়ের পর বহু মানুষ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একটি মসজিদের কাছে জড়ো হন। মসজিদটির ছাদ ধসে পড়েছে, মিনার ভেঙে পড়েছে। এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে রাখে। স্থানীয় এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, মসজিদটির কাছে তিনজন নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সূর্যোদয়ের পর বহু মানুষ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একটি মসজিদের কাছে জড়ো হন। মসজিদটির ছাদ ধসে পড়েছে, মিনার ভেঙে পড়েছে। এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে রাখে। স্থানীয় এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, মসজিদটির কাছে তিনজন নিহত হয়েছেন।

ভারতের দাবি, তারা পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী শিবির’ লক্ষ্য করে এসব হামলা চালিয়েছে। শিবিরগুলো ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠনের নিয়োগ কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ ও মতাদর্শ প্রচারের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে অস্ত্রও ছিল।

পাকিস্তান এ হামলাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার স্পষ্ট পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে, যেসব স্থানে হামলা হয়েছে, সেগুলো কোনো সন্ত্রাসী শিবির ছিল না।

আরও পড়ুনমুজাফফরাবাদ ও পাঞ্জাবে ভারতের হামলায় মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত: বিবিসিকে প্রত্যক্ষদর্শী৩ ঘণ্টা আগে

সম্প্রতি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলাকে কেন্দ্র করে পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

মুজাফফরাবাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানকার হাসপাতালগুলো চালু আছে। আজ সকালে কিছু ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।

গরিব, নিরীহ মানুষদের সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। আমাদের অসহায় মায়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, বোনেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন…আমাদের ঘরগুলো কেঁপে উঠেছিল, দেয়ালে ফাটল ধরেছে।শায়ের মীর, মুজাফফরাবাদের বাসিন্দা

শায়ের মীর বলেন, হামলার পর তিনি ও তাঁর পরিবার চার ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন। তাঁর কিছু প্রতিবেশী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে ভুগছেন।

শায়ের মীর মনে করেন, গরিব, নিরীহ মানুষদের সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। বলেন, ‘আমাদের অসহায় মায়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, বোনেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন…আমাদের ঘরগুলো কেঁপে উঠেছিল, দেয়ালে ফাটল ধরেছে।’

আরও পড়ুনরাতে ২৫ মিনিটের মধ্যেই পাকিস্তানের ৯ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়: ভারতের ব্রিফিংয়ে তথ্য২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ফফর ব দ আম দ র মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম, মহাসচিব রুহুল আমিন

জাতীয় পার্টিতে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশের সম্মেলনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং মহাসচিব হয়েছেন রুহুল আমিন হাওলাদার।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েল পার্টি সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা নির্বাচিত হন। পাশাপাশি এই অংশের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশিদ এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়েছেন সাবেক মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু।

তবে জি এম কাদের অংশ এই সম্মেলনসহ পুরো প্রক্রিয়াকে ‘বেআইনি’ এবং ‘গঠনতন্ত্রবিরোধী’ বলে মনে করছে। তারা এই সম্মেলনে অংশও নেয়নি।

গত ৩০ জুলাই ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এক আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন, যা পরবর্তী ধার্য তারিখ ১২ আগস্ট পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে গঠনতান্ত্রিক পন্থায় সম্মেলন করে দলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হয়েছে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ

আজকের সম্মেলনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কাউকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে না। যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে দলের ভালো পদে দেওয়ার চেষ্টা করব। আরেকটি দিক হলো, আমরা অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা উপহার দেব, পাশাপাশি একটি আদর্শিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করব। আমরা চেষ্টা করব বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের।’

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার

সম্পর্কিত নিবন্ধ