নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর মানুষ সবচেয়ে বেশি আশান্বিত হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সব আশা নিরাশায় পরিণত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, শ্রমিকের জীবনে বৈষম্য থেকে গেছে। আওয়ামী দোসররা সচিবালয়ে বহাল থেকে গেছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন। ‘মহান মে দিবস ও প্রাসঙ্গিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অনেকে প্রধান উপদেষ্টাকে অনতিবিলম্বে শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বলছেন। আবার কেউ বলছেন, পাঁচ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে। এই বক্তব্যগুলো আবেগের। একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি ছাড়া এসব বক্তব্য বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।

এখনো টাকা না দিলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে না অভিযোগ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, পুলিশ এখনো আগের মতোই থেকে গেছে। তারা এখনো জনগণের শত্রুর অবস্থান থেকে নিজেদের বের করতে পারেনি।

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের সমালোচনা করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যাঁদের দিকে তাকিয়ে মানুষ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, তাঁদের অবস্থাও একই রকম। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ছিল। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থান পরে অনেক জায়গায় ঘুষের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। প্রধান উপদেষ্টাও দেশের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তেমন আলোচনা করছেন না। তিনি উদ্যোগ নিলে অনেক সমস্যা সহজেই সমাধান হয়ে যেত।

দলমতের বিতর্ক করার সময় এখন নয় উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই মুহূর্তে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, যেখানে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে। ভোট ডিসেম্বরে হবে নাকি মার্চে, সেটাও বিতর্কের বিষয় হওয়া উচিত নয়। বরং নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি।

আলোচনা সভায় শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশন কাজ শুরুর আগেই কয়েকটি মূলনীতিকে ধারণ করেছে। তার একটি হলো একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তোলা, যেখানে শ্রমিক তাঁর ন্যায্য পাওনা বুঝে পাবেন।

প্রতিটি ঘরে ও প্রতিটি দপ্তরে বৈষম্য বিরাজ করছে উল্লেখ করে সুলতান উদ্দিন বলেন, সাত কোটি শ্রমিক জানেন না, বার্ধক্যে তাঁরা কীভাবে বেঁচে থাকবেন। তাঁদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। তাঁদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা জরুরি। শ্রম সংস্কার কমিশন সেই নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।

নাগরিক ঐক্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর কাদিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম, জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী (দীপু), সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মেহেদী, সম্পাদক ইউছুব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের (জবি প্রেসক্লাব) ২০২৫-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

এতে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. মেহেদী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইউছুব ওসমান।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেল ৪টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাহিদুল ইসলাম সাদেক আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জবি প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপদেষ্টা নোমান আল আব্দুল্লাহ, রায়হান উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, আরমান হাসান, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ও সদ্য সাবেক সভাপতি সুবর্ণ আস-সাইফ, সহকারী নির্বাচন সমন্বয়ক ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহনাফ ফাইয়াজসহ সংগঠনের সদস্যরা।

নির্বাচনে অন্যান্য পদে নির্বাচিতরা হলেন—সহ-সভাপতি শেখ শাহরিয়ার হোসেন (ঢাকা টাইমস), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিদুয়ান ইসলাম (চ্যানেল আই), সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান সরকার শুভ (সারাবাংলা ডট নেট), দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাতেমা আলী (দেশ রূপান্তর), অর্থ সম্পাদক সোহানুর রহমান (বার্তা২৪), কার্যনির্বাহী সদস্য লিমন ইসলাম (রাইজিংবিডি) এবং জুনায়েদ মাসুদ (দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস)।

ফলাফল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাহিদুল ইসলাম সাদেক বলেন, “সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। আশা করি, নতুন নেতৃত্ব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণেও ভূমিকা রাখবে।”

প্রধান উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে জবি প্রেসক্লাব সবসময় কাজ করেছে। নতুন নেতৃত্বও বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ও দেশের কল্যাণে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ