রংপুরে লাইব্রেরি ও স্কুল নির্মাণে বাধা, ৩২ বিশিষ্ট নাগরিকের প্রতিবাদ
Published: 14th, May 2025 GMT
রংপুরের অন্নদানগরে কমিউনিটি লাইব্রেরি ও স্কুল নির্মাণে বাধা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র নির্মাতাসহ ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, আধিপত্যবাদমুক্ত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এমন ঘটনা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বিরুদ্ধ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসঙ্গে এই অপচেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তারা।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন– অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শহীদ ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অভী চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সৈকত আরেফিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, লেখক ও সাংবাদিক রাজীব নূর, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী শাহেদ কায়েস, কবি সঞ্জীব পুরোহিত, শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আইনজীবী রোকনুজ্জামান রোকন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি শিবলী চৌধুরী, বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য নাহিদ হাসান নলেজ, গবেষক সামিও শীশ, কবি ও চিত্রশিল্পী নির্ঝর নৈঃশব্দ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অনার্য মুর্শিদ প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, জ্ঞানচর্চার সঙ্গে জ্ঞানের বিকাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পাঠাগারের ভূমিকা কম নয়। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বাধা দেওয়ার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা নানাসূত্রে জানতে পেরেছি, রংপুরে কমিউনিটি লাইব্রেরি ও স্কুল নির্মাণে সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে কাজে বাধা দিয়েছেন রওশন জামিলসহ তার সহযোগী ফ্যাসিস্ট দলের কিছু কর্মী। আমরা জেনেছি যে, কবি ও সমাজকর্মী মীর রবির দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় অন্নদানগরের শরলার বিল আশ্রয়ণ প্রকল্পে কমিউনিটি লাইব্রেরি ও স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় পাঠাগারের ঘর নির্মাণ শুরু হয়েছিল। তবে বিতর্কিত ওই ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঠিকাদারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে মবের ভয় দেখিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য করে। একইসঙ্গে কবি ও সমাজকর্মী মীর রবিকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কমিউনিটি লাইব্রেরি ও স্কুলের নির্মাণ যদি সম্পন্ন না হয় বা বাতিল হয়, তাহলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৫০টি ভূমিহীন পরিবারের শিশু-কিশোররা উন্মুক্ত শিক্ষা ও সংস্কৃতি থেকে বঞ্চিত হবে, যা সমাজে বৈষম্যের শিকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জ্ঞান চর্চা ও সাংস্কৃতিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ধ র অভ য গ সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে পশু হাসপাতালে কম্পউন্ডারই চিকিৎসক
সোনারগাঁ উপজেলা পশু হাসপাতালের কম্পউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস। যার দায়িত্ব হাসপাতালে ডিউটি করা এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী অসুস্থ পশুকে ওষুধ প্রয়োগ করা। এ ছাড়া প্রাথমিক পরামর্শ দিতে পারবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলা পশু হাসপাতালের কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস তার যে দায়িত্ব তা সঠিক ভাবে পালন না করে টাকার বিনিময়ে পশুর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। হাসপাতালে অফিস চলাকালে কোন ধরণের টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন যাবত এ কাজ করে যাচ্ছেন।
যে কেউ পশু নিয়ে হাসপাতালে আসলেই তার কাছে ছুটে যান রাজিব চন্দ্র দাস। কন্টাক্ট করে শুরু করেন পশুর চিকিৎসা। অনেক ক্ষেত্রে ইনজেকশন না লাগলেও তিনি টাকা কামানোর ধান্ধায় পশুকে ইনজেকশন দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজেই সরকারী লগো সম্বলিত প্যাডে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।
এ কাজ করতে গিয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলা মেঘনা নলচরের নিজামের ২টি গরু ও চালিভাংগার এলাকার জিতুর ৩টি গরু তার অপচিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ।
অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভা এলাকার রোকেয়া নামের একজনের ছাগল তার অপচিকিৎসা মারা যায়। তার জন্য তিনি ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অফিসের বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া তো দূরে থাক অফিসের বাহিরে যাওয়ারও তার নিয়ম নেই।
নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তিনি যেখান থেকেই খবর পান সেখানেই চিকিৎসা দিতে ছুটে যান। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। এসবের পিছনে তার একমাত্র উদ্দেশ্য টাকা ইনকাম করা।
এ ধরণের অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্রকে শোকজ করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তৎকালীন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ ইউসুফ হাবিব শোকজ দেওয়ার পরও তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে এখনো বহালে।
অভিযোগে আরো রয়েছে, হাসপাতালে পশুর চিকিৎসা নিতে গিয়ে কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাসের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলার জৈনপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহেদ আলী। তার কাছ থেকে চিকিৎসা দিয়ে ৩৫ হাজার টাকার ওষুধ দেন। তার পরও তার পশুর রোগ ভাল হয়নি। পশু দেখা বাবদ সাহেদ আলীর কাছ থেকে ১৫০০ টাকা ভিজিট নেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসা দিয়ে লোক বুঝে কারো থেকে ৫শ, কারো থেকে ৩শ, কারো থেকে ১ হাজার, কারো থেকে দেড় হাজার, দুই হাজার পর্যন্ত টাকা ভিজিট নেন কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস।
এ ছাড়া প্রতিদিন তার অফিসে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে হাতিয়ে নেন বিপুল অংকের টাকা। টাকা দিলেই যে কোনো কোম্পানীর ওষুধ লিখেন তিনি। এ ধরণের অনিয়ম দূর্নীতিবাজ কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাসের বিচার চেয়েছে অনেক ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজিব চন্দ্র দাস বলেন, আমি প্যাড ব্যবহার করছি এ কথা সত্য তবে আমি কোথাও ডাক্তার উল্লেখ করিনি। ওষুধের টাকা নিয়েছি কোনো ভিজিট নেইনি।
সোনারগাঁ উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মদ নইফা বেগম বলেন, কমপাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস প্রাথমিক পরামর্শ দিতে পারেন। সরকারী প্যাড ব্যবহার করে চিকিৎসা দেওয়া সম্পূর্ন বেআইনি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।