২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ভালো করেছে বাটা শু কোম্পানি। জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির আয় ও নগদ প্রবাহ—উভয় ক্ষেত্রেই ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এর পেছনে মূল চালিকা শক্তি ছিল রাজস্ব বৃদ্ধি।

বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাটা শু কোম্পানির মুনাফা হয়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬ দশমিক ৯২ টাকা; গত বছরের একই সময় যা ছিল ১৩ দশমিক ৪২ টাকা।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের পর অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে আজ এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ অর্থ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ টাকা; এটি আগের বছরের ১৯ দশমিক ৯৫ টাকা থেকে অনেকটাই বেশি। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নগদ প্রবাহ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি।

এ ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ২৪৭ দশমিক ১৫ টাকা, যেখানে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর তা ছিল ২২০ দশমিক ২২ টাকা। আয় ও নগদ প্রবাহের এই ইতিবাচক ধারা কোম্পানির স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয় বলেই বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে গত এপ্রিল মাসে বাটা শু (বাংলাদেশ) লিমিটেড ২০২৪ সালের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

কোম্পানির বিবরণ অনুযায়ী, গত বছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির ইপিএস ২৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২১ টাকা ৬২ পয়সা। আগের বছর যেখানে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ২৯ টাকা ৩১ পয়সা। তবে এবার বছরের প্রথম প্রান্তিকেই কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় শতভাগ বেড়ে যাওয়া ইতিবাচক বলেই মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।

এর আগে ২০২৩ সালে বাটা লভ্যাংশ দিয়েছে ৪৩৫ শতাংশ, ২০২২ সালে ৩৬৫ শতাংশ, ২০২১ সালে ৭৫ শতাংশ ও ২০২০ সালে ২৫ শতাংশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম প র ন ত ক প রব হ র বছর বছর র দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষ ২৪ লাখ

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা টানা চার বছর ধরে বেড়েছে। দেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। দুর্যোগে বাস্তুচ্যুতির বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। মূলত বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল মঙ্গলবার নরওয়েভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি) প্রকাশিত বৈশ্বিক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত প্রতিবেদন-২০২৫-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সালে দেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৪ লাখ। এর আগের বছর (২০২৩ সালে) দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮ লাখ। ওই বছরও বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম।

প্রতিবেদন অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ বেড়ে ২৪ লাখ হয়েছে। মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যায় এটা দেশে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ সালে বন্যায় এবং ২০২০ সালে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে এর চেয়ে বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত ছিলেন।

দুর্যোগ ছাড়াও দেশে গত বছর সংঘাত ও সহিংসতার কারণে ২ হাজার ৮০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে আইডিএমসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইডিএমসি বলেছে, গত বছরের বর্ষা মৌসুমে সৃষ্ট বন্যায় ১৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিশেষ করে সিলেট বিভাগে শুধু জুন মাসেই ৭ লাখ ২৩ হাজার জনকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ভূমির ওপরের অংশের পানি শোষণ করার মতো পর্যাপ্ত অবস্থা না থাকা এবং নালা ও খালে পানিপ্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বন্যার তীব্রতা বাড়িয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণেও বন্যার তীব্রতা বেড়েছিল। একই সময়ে বর্ষা শুরু হলে কয়েকটি নদী দিয়ে একসঙ্গে এত পানি নামার মতো পরিস্থিতি ছিল না।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি নিয়ে কাজ করছেন সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুতি হচ্ছে মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের কারণে। যখন জলবায়ুর সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুতি হচ্ছে, তখন এটা মোকাবিলায় একটা দিকনির্দেশনামূলক নীতিমালা রয়েছে। তিনি বলেন, সামনে এমন দুর্যোগ ও বাস্তুচ্যুতি আরও বাড়বে, শুধু রাষ্ট্র এটা মোকাবিলা করতে পারবে কি না, সেটা বড় প্রশ্ন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। সেটা জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মাধ্যমে হওয়া উচিত।

আইডিএমসি এবার দশম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্বে ৮ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা নজিরবিহীন। এক দশক আগে প্রথম প্রকাশিত বৈশ্বিক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সংখ্যার চেয়ে এটি প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ সংঘাত ও সহিংসতায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা আগের বছরের (২০২৩) চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। আর দুর্যোগের কারণে ৯৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা আগের বছরের চেয়ে (২০২৩) ২৯ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ১ কোটি ১০ লাখের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ফিলিপাইনে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮৯ লাখ ৯৬ হাজার জন। ভারতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ ৩১ হাজার জন বাস্তুচ্যুত হন। চতুর্থ স্থানে থাকা চীনে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৩৯ লাখ ২৬ হাজার জন।

গত বছর সংঘাত-সহিংসতার কারণে সবচেয়ে বেশি ৯১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সুদানে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ফিলিস্তিনে। ইসরায়েলি হামলায় শুধু গাজা উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অর্থাৎ গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় পুরোটাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লেবাননে।

আইডিএমসির প্রধান আলেক্সান্দ্রা বিলাক এক বিবৃতিতে বলেন, সংঘাত, দারিদ্র্য ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাবকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন অসহায় মানুষ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, প্রবেশপত্র ডাউনলোড শুরু
  • সিকদার ইন্স্যুরেন্সের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • আওয়ামী লীগ–অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে বিটিআরসিকে চিঠি
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে সরকার, আবেদন করুন
  • দেশে দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষ ২৪ লাখ
  • ভর্তিতে বিড়ম্বনা এড়াতে বিশেষ উদ্যোগ ঢাবি প্রশাসনের
  • তিতাস গ্যাসে খণ্ডকালীন চাকরি, অফিস ৪ ঘণ্টা, করুন আবেদন
  • বিদ্রোহ, বেদনা ও বীরত্বের ডিজিটাল আর্কাইভ
  • শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না মাইডাস ফাইন্যান্স