পিতা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন এক সময়ের গোল মেশিন। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে যিনি রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়েছেন। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের প্রথম সাফল্যের গল্প লিখলেন ছেলে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো জুনিয়র। ১৪ বছর বয়সেই জাতীয় দলের জার্সিতে দুই গোল করে এনে দিলেন শিরোপা। তাও আবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে।

ক্রোয়েশিয়ায় আয়োজিত ভ্লাতকো মার্কোভিচ অনূর্ধ্ব-১৫ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দল। ম্যাচের নায়ক ছিলেন রোনালদো জুনিয়র। যিনি করেছেন জোড়া গোল।

এই টুর্নামেন্টের প্রথম তিন ম্যাচে তেমন চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেননি রোনালদো জুনিয়র। গোল না পাওয়া, সহায়তা না করতে পারা—সবকিছু মিলিয়ে নিরুত্তাপই ছিল শুরুটা। কিন্তু ফাইনালের মতো চাপের ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরলেন রোনালদোর ছেলে। যেন বড় মঞ্চের জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন।

আরো পড়ুন:

মেসিদের আরও একটি হতাশাজনক হার

বার্সেলোনার হোঁচট, রিয়ালের জয়ে পিচিচির দৌড়ে এগিয়ে এমবাপ্পে

ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন তিনি। কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে নেওয়া শট পেরিয়ে যায় গোলরক্ষককে। গোলের পর বাবার মতো করেই ‘সিউউউ’ উদযাপনে মাতেন জুনিয়র রোনালদো। এ যেন শুধুই একটি গোল নয়, বরং এক কিংবদন্তির উত্তরাধিকারের ঘোষণাও। প্রথমার্ধের শেষ দিকে হেডে করেন দ্বিতীয় গোলটি। ফাইনালে এই জোড়া গোলই ছিল ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত।

এই টুর্নামেন্ট দিয়েই প্রথমবারের মতো পর্তুগালের জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন রোনালদো জুনিয়র। জাপানের বিপক্ষে বদলি হিসেবে অভিষেক হয় তার। বাবার মতোই গায়ে ছিল সাত নম্বর জার্সি।

১৭ জুন ১৫ বছরে পা দিতে চলা এই কিশোর ফুটবলারের ক্যারিয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও জুভেন্টাস একাডেমিতে। এরপর আল-নাসর একাডেমিতে। এবার জাতীয় দলের হয়ে প্রথম আসরে শিরোপা জয় করলেন। এ যেন তার ভবিষ্যতের দিকেই একটি দৃঢ় পদক্ষেপ।

রোনালদো জুনিয়রের এই অর্জনে রোমাঞ্চিত তার বাবা। সামাজিক মাধ্যমে ছেলের অভিষেকের ছবি পোস্ট করে তিনি আগেই বলেছিলেন— “গর্বিত বাবা।’’

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল ফ ইন ল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ