গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে  সজল মিয়া (২০) এর মৃত্যুর ঘটনার নয় মাস সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মেয়র আইভীর সাথে আসামি করা হয়েছে ২ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আলী বেপারীকে। মামলায় স্বপনকে যুবলীগ কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়াও এ মামলাও আরও আসামি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবুসহ ৬২ জনকে।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে হত্যা মামলায় যুবদল নেতা স্বপন আলী বেপারীকে আসামি করায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভসহ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

তৃনমূলসহ দলের নেতাকর্মীরা বলছেন বিএনপির সক্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দমন করতেই ষড়যন্ত্র করে এ মামলায় স্বপনকে আসামি করা হয়েছে। এরআগেও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত ফজলুর রহমান ভূঁইয়ার মামলায় আসামি করে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিলো।

এদিকে সজল মিয়া হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত মামলাটি বিতর্কের মুখে পড়েছে। মামলার এজাহারে আসামির তালিকায় ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও বাদী রুনা বেগম বলছেন, তিনি মামলায় আসামিদের কারও নাম দেননি। কীভাবে নাম এসেছে, সে ব্যাপারেও কোনো ধারণা নেই তার।

তবে, পুলিশ বলছে, বাদী নিরাপত্তাজনিত কারণে এমন কথা বলছেন। গত ১৬ মে রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন রুনা বেগম। আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এ নারীর বড় ছেলে সজল মিয়া (২০) গত বছরের বিকেলে ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি ওই এলাকার একটি জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন।

২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, স্বপন আলী দীর্ঘদিন আমাদের সাথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। সে ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর পর সে আর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল না।

তাঁকে কখনো আওয়ামী লীগ কিংবা যুবলীগ করতে আমরা দেখিনি। কেউ হয়তো তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে এর রহস্য বের হয়ে আসবে বলে জাহাঙ্গীর আলম জানান।

অভিযুক্ত দুই নং ওয়ার্ড যুবদলের সর্বশেষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন বলেন, আমি অধ্যাপক মামুন মাহমুদ স্যারের সাথে রাজনীতি ও আন্দোলন সংগ্রাম করছি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরা তাদের সেল্টার দাতাদের মাধ্যমে আমাকে হয়রানি করছে।

জুলাই আন্দোলনে যারা প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে তারা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যারা আমরা গত ১৫ বছর সংগ্রামে ছিলাম তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। 

এর আগে আমাকে একটি মামলায় আসামি কওে র‌্যাব দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। এখন আবার বৈষম বিরোধী বিরোধী আন্দোলনে শহীদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। এটা বিএনপি'র নেতা কর্মীদের মনোবল ভাঙ্গার অপচেষ্টা। আমি আল্লাহর কাছে বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, বাদী নিজে সশরীরে থানায় এসে মামলাটি দায়ের করেছে। এখন হয়তো নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলার আসামিদের বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করছেন। 

সজল মিয়া হত্যা মামলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আলী বেপারীকে আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে যারা নির্দোষ প্রমানিত হবে তাদেরকে বাদ দিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন য বদল ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ য বদল র স কর ম দ র সজল ম য় ন ত কর ত কর ম ব এনপ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।

লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা