সিদ্ধিরগঞ্জে শেখ হাসিনার সাথে যুবদল নেতা স্বপনও আসামি!
Published: 22nd, May 2025 GMT
গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সজল মিয়া (২০) এর মৃত্যুর ঘটনার নয় মাস সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মেয়র আইভীর সাথে আসামি করা হয়েছে ২ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আলী বেপারীকে। মামলায় স্বপনকে যুবলীগ কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও এ মামলাও আরও আসামি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবুসহ ৬২ জনকে।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে হত্যা মামলায় যুবদল নেতা স্বপন আলী বেপারীকে আসামি করায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভসহ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তৃনমূলসহ দলের নেতাকর্মীরা বলছেন বিএনপির সক্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দমন করতেই ষড়যন্ত্র করে এ মামলায় স্বপনকে আসামি করা হয়েছে। এরআগেও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত ফজলুর রহমান ভূঁইয়ার মামলায় আসামি করে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিলো।
এদিকে সজল মিয়া হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত মামলাটি বিতর্কের মুখে পড়েছে। মামলার এজাহারে আসামির তালিকায় ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও বাদী রুনা বেগম বলছেন, তিনি মামলায় আসামিদের কারও নাম দেননি। কীভাবে নাম এসেছে, সে ব্যাপারেও কোনো ধারণা নেই তার।
তবে, পুলিশ বলছে, বাদী নিরাপত্তাজনিত কারণে এমন কথা বলছেন। গত ১৬ মে রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন রুনা বেগম। আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এ নারীর বড় ছেলে সজল মিয়া (২০) গত বছরের বিকেলে ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি ওই এলাকার একটি জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, স্বপন আলী দীর্ঘদিন আমাদের সাথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। সে ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর পর সে আর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল না।
তাঁকে কখনো আওয়ামী লীগ কিংবা যুবলীগ করতে আমরা দেখিনি। কেউ হয়তো তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে এর রহস্য বের হয়ে আসবে বলে জাহাঙ্গীর আলম জানান।
অভিযুক্ত দুই নং ওয়ার্ড যুবদলের সর্বশেষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন বলেন, আমি অধ্যাপক মামুন মাহমুদ স্যারের সাথে রাজনীতি ও আন্দোলন সংগ্রাম করছি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরা তাদের সেল্টার দাতাদের মাধ্যমে আমাকে হয়রানি করছে।
জুলাই আন্দোলনে যারা প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে তারা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যারা আমরা গত ১৫ বছর সংগ্রামে ছিলাম তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।
এর আগে আমাকে একটি মামলায় আসামি কওে র্যাব দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। এখন আবার বৈষম বিরোধী বিরোধী আন্দোলনে শহীদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। এটা বিএনপি'র নেতা কর্মীদের মনোবল ভাঙ্গার অপচেষ্টা। আমি আল্লাহর কাছে বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, বাদী নিজে সশরীরে থানায় এসে মামলাটি দায়ের করেছে। এখন হয়তো নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলার আসামিদের বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করছেন।
সজল মিয়া হত্যা মামলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আলী বেপারীকে আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে যারা নির্দোষ প্রমানিত হবে তাদেরকে বাদ দিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন য বদল ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ য বদল র স কর ম দ র সজল ম য় ন ত কর ত কর ম ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। গণতন্ত্রে উত্তরণের যখন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখন একটা কালো ছায়া এসে দাঁড়াচ্ছে। সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন, জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত এক সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতেই সরকারের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে একটি মহল। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সজাগ থাকতে হবে, সেইসঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে, সমস্ত চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য। সীমান্তের ওপার থেকে যে ষড়যন্ত্র চলছে- সে ব্যাপারেও সজাগ থাকতে হবে। কেউ যেন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৗমত্ব বিলীন করতে না পারে।
এদিকে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আট দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। সেই থেকে বিএনপি এই দিবসটিকে ‘শাহাদাৎ দিবস' হিসেবে পালন করে।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দল ও অঙ্গ-সংগঠনের যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচি ঘোষণা করে রিজভী বলেন, যেহেতু ৭ জুন কোরবানি ঈদ হওয়ায় আমাদের কর্মসূচি কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। কর্মসূচি হবে আট দিনব্যাপী। অর্থাৎ ২৫ তারিখ থেকে ২ জুন পর্যন্ত।
৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আলোচনা সভা, দুস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুইদিন নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনিমিত রেখে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ করবে এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা নেবে দলটি।
কর্মসূচির মধ্যে আছে, ২৯ মে বিকাল তিনটায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো হবে এবং মসজিদে মসজিদে গণদোয়ার আয়োজন করা হবে।