বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে সান্দিকোনা এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে।

আটক তরুণের নাম সুমন আহমেদ (১৮)। তিনি একই উপজেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে। দুই বছর আগে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমন নিজের ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য ও ব্যঙ্গাত্মক ইমোজি জুড়ে আবু সাঈদের একটি ছবি পোস্ট করেন বলে অভিযোগ। এ খবর শুনে গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কেন্দুয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। তাঁরা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে অভিযুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে রাত ৯টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে সুমনকে আটক করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েকজনের ভাষ্য, সুমন ও তাঁর পরিবারের লোকজন কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় আটক সুমনের বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মন্দির

মানুষের মন্দির

এটি ছিল এক বিষণ্ন রাত

ফ্যাকাশে আলোর সঙ্গে,

হৈমন্তী চাঁদের আলোয়

আলোকসজ্জিত আকাশ।

আমরা আনন্দে একত্র হয়েছিলাম

শরতের রোদে রাঙা দুপুরে

আমাদের ঘামের ফসল হাতে

. . . . . . . . . . .

আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি

আমাদের বপনের ঋতুতে

আমাদের যত্নের ঋতুতে,

আমরা ছিলাম অধ্যবসায়ী

আমরা ছিলাম নিবেদিত

আমাদের প্রচেষ্টা প্রতি,

এখন সময় এসেছে ফসল তোলার।

এই সব দিনে

আমরা ভোগ করি পরিশ্রমের ফসল

আমাদের আগে ছিল যারা,

বুঝি না আত্মত্যাগের মানে

যা জন্ম নিয়েছে

নিজের গড়া গৌরবের ছায়া হতে।

আমারও লোভার্ত হাত পৌঁছেছিল সেই আলমারিতে

একটি নিরবচ্ছিন্ন চেতনা নিয়ে,

প্রাচুর্যের মানে বুঝতে অপারগ,

এক নিঃশব্দ অস্বীকৃতির ভারে।

. . . . . . . . . . . .

এই সময়ে

কিছু মানুষ আছে,

আমার প্রতিবেশীরা,

আমার সহপথিক মানবেরা

অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তবু ভোগে যন্ত্রণায়।

এদিকে আমার কঠিন চেতনা

আসে আর যায়

সহানুভূতির প্রাঙ্গণ দিয়ে,

ফেলে রেখে যায়

আমার জন্মগত ও ঈশ্বরপ্রদত্ত করুণা,

আমার অসংবেদনশীলতার দ্বারে।

.. . . . . . . . . . .

দশমাংশ কী,

এ কি শুধু এইটুকুই...

আমাদের সীমিত পকেট আর পার্স খালি করা

চাঁদার ঝুড়িতে ফেলার জন্য?

. . . . . . . .

আমি আমার দশম ভেড়া কোথায় দেব,

আমার দশম ছাগল,

আর কোন মন্দিরে...?

এ কি মানুষের তৈরি মন্দির,

ইট, চুনসুরকি আর কাঠ দিয়ে গড়া,

যেখানে আমরা জমায়েত হই

আমাদের স্বেচ্ছায় জমানো অস্থিরতা উজাড় করতে,

নাকি এটা তার চেয়ে বড় কিছু,

একটি মন্দির যা বিরাট কোনো চেতনার জগতে বিরাজমান,

যা আমাদের সকলকে আপন করে জড়িয়ে ধরে?

যখন

যখন সবকিছু ধসে পড়বে,

তখন তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে?

যখন আকাশ নিজেকে গুটিয়ে নেবে,

তখন তুমি কীভাবে নিশ্বাস নেবে?

যখন তারারা তাদের আলো নিভিয়ে দেবে,

তখন কি আমাদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাটাও

অদৃশ্য হয়ে যাবে?

যখন হাসি ব্যথার জন্ম দেবে,

তখন কি আমরা

অর্থবোধক অনুভূতি থেকে

সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যাব?

যখন আমরা আর আহারের জন্য ক্ষুধার্ত থাকব না,

তখন কি আমরা সময়ের মৃত্যুযাত্রায়

নীরবে আত্মসমর্পণ করব?

যখন দিগন্তের শেষ

আমাদের সামনে দাঁড়াবে,

তখন কি আমরা ছুটে বেড়াব

সবকিছু মনে করতে, ফিরে পেতে

যা আমরা অবহেলা করেছি,

ধ্বংস করেছি, ভুলে গেছি?

যখন সব ‘কেন’র উত্তর মিলবে,

তখন কি আমরা অবশেষে বুঝতে পারব?

যেমন মি. স্মিথ বলেছিল নিওকে,

আমরা একধরনের ভাইরাস,

একটা বিপজ্জনক জাত

যাদের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো

ধ্বংস করার দক্ষতা।

এই আত্মনির্মিত দুঃস্বপ্ন

কবে শেষ হবে?

কবে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ