মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহতদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ
Published: 27th, July 2025 GMT
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টা ১০ মিনিটে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান তিনি।
হাসপাতালে পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনের কাছ থেকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা শোনেন এবং আহত রোগীদের বর্তমান অবস্থা জানতে চান।
আরো পড়ুন:
অভিযানে ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে
রূপগঞ্জে লোহা গলানোর ভাট্টি বিস্ফোরণে ৩ শ্রমিক দগ্ধ
অধ্যাপক নাসির জানান, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। রোগীদের আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সবার সম্মিলিত মূল্যায়নে বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে চারজন ক্রিটিক্যাল, ৯ জন সিভিয়ার এবং ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরির রোগী আছেন। এই মূল্যায়ন রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা চিকিৎসার জন্যে কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, ওষুধ বা অন্যকিছুর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না জানতে চান।
পরিচালক বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্যে প্রয়োজনীয় সব কিছু সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর বাইরে যে দুয়েকটি সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল, সেগুলো সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা হতাহতের বিস্তারিত জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো.
তিনি আরো জানান, প্রায় ১০টি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তীতে অন্য হাসপাতালে রোগীদের দ্রুত স্থানান্তরিত করার কারণে প্রথমদিকে নিহত ও আহত রোগীর সংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। কয়েকটি দেহাবশেষ ছিল, যেগুলো ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়েছে, যার ফলে কিছু সময় লেগেছে।
অধ্যাপক সায়েদুর জানান, রোগীদের স্থানান্তরের সময়ে অ্যাম্বুলেন্সের অভাব প্রকটভাবে বোঝা গেছে। এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাগুলো দৃশ্যমান হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস অবিলম্বে এবিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
নিহতদের পরিবার ও আহতদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে ও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিংয়ের প্রতি জোর দেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ কার্যক্রমে সব নিহতের পরিবার, আহত ও আহতদের পরিবার এবং মাইলস্টোন স্কুলের প্রত্যেককে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি, দগ্ধ রোগীদের নিকটাত্মীয়দের হাসপাতালে অবস্থানের সময়ে তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে পরিচালককে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্সসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। একইসঙ্গে, বিদেশ থেকে যারা এই বিপদের সময়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ম ন ব ধ বস ত আহতদ র হ ম মদ ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর চৌরাস্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহীদ আহত সেলের উদ্যোগে এ দোয়া ও স্মরণসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জুলাই শহীদদের পরিবারের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব মো: জাবেদ আলমের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো: নূর কুতুবুল আলম, নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হোসাইন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এড. আব্দুল্লাহ আল আমিন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. মো: ইকবাল হোসেন ভুঁইয়া, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মো: শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনুসহ প্রমূখ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এড. আব্দুল্লাহ আল আমিন তার বক্তব্যে বলেন, আমরা কাধে কাধ মিলিয়ে রাজপথে নেমেছি, হেলিকপ্টারের গুলিকে তোয়াক্কা করি নাই, হাসিনার বাহিনীকে তোয়াক্কা করি নাই। সেই বাংলাদেশকে আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সে বাংলাদেশটা হয় নাই।
এখন আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব সেরকম একটা বাংলাদেশ গড়ে তুলার। এই বাংলাদেশে যেই রাজনৈতিক দলের নামেই সন্ত্রাস করুক, চঁদাবাজী করুক তাকে প্রতিহত করতে হবে। রাজনৈতিক দলের নামে যেই গায়ের জোর দেখাতে চায় তাকে প্রতিহত করতে হবে।
বাংলাদেশ হবে বৈষম্য মুক্ত। সকলের মানবিক মর্যাদা থাকবে, সকলের নাগরিক অধিকার সমান থাকবে, একজন নাগরিক হিসেবে তার যতটুকু প্রাপ্য রাজনৈতিক দলগুলো, সমাজ এবং প্রশাসন তাকে সেটা দিতে বাধ্য থাকবে। এ ধরণের একটা বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।