‘ঘেটুপুত্র কমলা’ এখন রড-সিমেন্টের কারবারি
Published: 22nd, September 2025 GMT
হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দিয়ে পরিচিতি পান অভিনেতা হাসান ফেরদৌস মামুন। ছবিটি তাঁকে এনে দেয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর নাটক-বিজ্ঞাপনে মাঝেমধ্যে দেখা গেলেও ধীরে ধীরে বিনোদন অঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন মামুন। আর সাত বছর ধরে তো অভিনয়েই নেই। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসায় ব্যস্ত এই অভিনেতা। যেখানে তাঁর ব্যস্ত থাকার কথা লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে, সেখানে তাঁর সময় কাটে রড-সিমেন্টের হিসাব কষে।
অভিনয়ের হাতেখড়ি টোকাই নাট্যদলে
মামুনের অভিনয়ের হাতেখড়ি চার বছর বয়সে। বড় বোনের হাত ধরে ‘টোকাই’ নাট্যদলে তাঁর আসা–যাওয়া শুরু। শুরুতেই দলটির হয়ে বেশ কিছু প্রযোজনায় সুযোগ পান তিনি। ছোট পর্দায় প্রথম সুযোগ আসে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হারমোনিয়াম’ নাটক দিয়ে। এরপর বিটিভির আরও কয়েকটি নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান মামুন। নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও ডাক পেতে থাকেন এই শিশুশিল্পী।
কি বাবা, বলছিলাম.
..
মামুনের প্রথম বিজ্ঞাপন, মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের ‘দিনবদলের পালা’। যা তাঁকে পরিচিতি এনে দেয়। বিজ্ঞাপনটিতে মামুনের সংলাপ ‘কি বাবা, বলছিলাম না আজকে অনেক মাছ উঠব, আমারে কিন্তু মেলায় নিয়া যাইতে হবে’ এখনো দর্শকদের নস্টালজিক করে।
বিজ্ঞাপনটির জন্য মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন মামুন। এর পরপর আরও কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় দক্ষতা দেখান এ অভিনেতা। এর মাঝে বেবি জিঙ্ক ও প্রাণ জুসের বিজ্ঞাপন উল্লেখযোগ্য। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রাণ জুসের বিজ্ঞাপন মামুনের ক্যারিয়ারে গতিপথ বদলে দেয়, বিজ্ঞাপনে ‘তাইলে দশ টাকা দেন, ম্যাঙ্গো জুস খামু’ মামুনের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তোলে। এরপর ছোট পর্দায় বাড়ে তাঁর ব্যস্ততা, ডাক পেতে থাকেন সিনেমায়।
ঘেটুপুত্র কমলা চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
১০ জনের কিংস ৪ গোলে উড়িয়ে দিল মোহামেডানকে
মোহামেডান ১–৪ বসুন্ধরা কিংস
ঘুরেফিরে একই ছবি। পার্থক্য শুধু গোলে। গত বছর কিংস অ্যারেনায় চ্যালেঞ্জ কাপ ফাইনালে এক গোলে এগিয়ে থেকেও ৩-১ গোলে হেরেছিল মোহামেডান।
আজ নিজেদের মাঠে একই প্রতিযোগিতায় ১-১ সমতার পর মোহামেডান ম্যাচটা হেরেছে ৪-১ গোলে। ১০ জন নিয়েই জয়ের গল্প লিখেছে মারিও গোমেজের বসুন্ধরা কিংস।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর কথা ছিল বেলা আড়াইটায়। শুরু হলো ২টা ৪১ মিনিটে। মাঠ প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে ১১ মিনিট বেশি। প্রথমার্ধে দেখা গেল এক অভিনব দৃশ্য—মোহামেডানের ডাগআউটের পাশে মাঠের বাইরে দুজন ঘাস কাটছেন! দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য সেই দৃশ্য আর দেখা যায়নি।
প্রথমার্ধে দুই দলই লড়েছে সমানতালে। ১৪ মিনিটের মধ্যে পাল্টাপাল্টি পেনাল্টিতে ১-১ সমতা। এরপর দুই দলই সুযোগ তৈরি করেছে, তবে বলের দখলে এগিয়ে ছিল কিংস।
ম্যাচের সপ্তম মিনিটে ডি-বক্সে দরিয়েলতন গোমেজকে ফাউল করেন মোহামেডানের মেহেদী হাসান। পেনাল্টি থেকে গোল করে কিংসকে এগিয়ে দেন দরিয়েলতন। কিন্তু সেই লিড বেশিক্ষণ টেকেনি।
১৩ মিনিটে মোহামেডানের এলি কেকেকে বক্সে ফেলে দেন তারিক কাজী। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি সায়মন হাসান। স্পট কিক থেকে গোল করে মোজাফফরভ ম্যাচে ফেরান মোহামেডানকে।
১-১ সমতার পর জমে ওঠে লড়াই। কিংস বলের দখলে এগিয়ে থাকলেও দুই দলই সুযোগ খুঁজছিল। ২৫ মিনিটে কিংসের রাফায়েল অগুস্তো ফ্রি-কিক নিলেন, ইমানুয়েল সানডে হেড দিলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। মোহামেডানও কর্নার পেয়েছে, কিন্তু গোলের কোনো সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে কিংস চাপ বাড়ায়, কিন্তু মোহামেডানের গোলকিপার সুজন হোসেন দারুণভাবে রুখে দেন কয়েকটা আক্রমণ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বোঝা যায়, লড়াইটা আরও জমবে। দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া। কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় ৬৩ মিনিটে। কিংসের সোহেল রানা সিনিয়র মাঝমাঠে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলেন। ১০ জনের দলে পরিণত হলো কিংস।
কিন্তু এরপর যা হলো, সেটা কিছুটা অবিশ্বাস্যই! ১০ জন নিয়ে তিন মিনিটের মধ্যে দুবার গোল করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় কিংস।
৭২ মিনিটে এগিয়ে যায় কিংস। সোহেল রানার কর্নার আটকাতে গিয়ে বল শরীরে লেগে সামনে চলে আসে মেহেদী হাসানের। সুযোগ হাতছাড়া করেননি অগুস্তো, বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান। এর দুই মিনিট পর স্বাগতিকদের রক্ষণের ভুলে গোল করেন সানডে।
৮৬ মিনিটে মোহামেডানের ভুলে চতুর্থ গোলও পায় কিংস। সানডের বাড়ানো বল থেকে দরিয়েলতন সহজেই জালে পাঠান।
তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পর মাঠে স্মোক ফ্লেয়ার ছোড়েন মোহামেডান সমর্থকেরা। খেলা বন্ধ থাকে পাঁচ মিনিট। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ম্যাচ কমিশনার সুজিত কুমার খেলা আবার শুরু করার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ দিকে আবারও স্মোক ফ্লেয়ার ছোড়া হয়, তবে এবার খেলা বন্ধ হয়নি।
গত মৌসুমে কিংস অ্যারেনায় একই প্রতিযোগিতায় মোহামেডানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা–উৎসব করেছিল কিংস। সেই ম্যাচেও স্মোক ফ্লেয়ার ছুড়েছিলেন স্বাগতিক দর্শকেরা। ম্যাচের পর যা নিয়ে অনেক সমালোচনাও হয়েছিল।