অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা ‘শিংযুক্ত’ এক নতুন মৌমাছির প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেগাকাইল লুসিফার’।

অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডফিল্ডস অঞ্চলের ব্রেমার রেঞ্জেস এলাকায় একটি বিরল বুনো ফুল পর্যবেক্ষণ করার সময় গবেষকেরা এই মৌমাছির সন্ধান পান। এই ফুল শুধু ওই এলাকাতেই জন্মে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই মৌমাছির স্ত্রী প্রজাতির মাথায় রয়েছে ক্ষুদ্র কিন্তু স্পষ্ট ‘শিং’। এ শিং সম্ভবত আত্মরক্ষার কাজে, মধু বা পরাগ সংগ্রহে, কিংবা বাসা বানাতে রেজিন–জাতীয় উপাদান জোগাড়ে সহায়তা করে।

গবেষণার নেতৃত্ব দেন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কিট প্রেন্ডারগাস্ট। তিনি বলেন, স্ত্রী মৌমাছিটির মুখে ছোট ছোট শিং রয়েছে। নেটফ্লিক্সে লুসিফার নামের ধারাবাহিকটি দেখার সময় এটি আবিষ্কার করা হয়। তাই নামটি একেবারেই উপযুক্ত মনে হয়েছে।

‘লুসিফার’ শব্দটি লাতিন ভাষায় ‘আলো-বাহক’ অর্থে ব্যবহৃত হয়। গবেষক প্রেন্ডারগাস্ট জানান, এই নামের মাধ্যমে তিনি দেশীয় মৌমাছি সংরক্ষণের গুরুত্ব এবং বিপন্ন উদ্ভিদের পরাগায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চেয়েছেন।

এই আবিষ্কার–সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি জার্নাল অব হাইমেনোপটেরা রিসার্চ–এ প্রকাশিত হয়েছে। যে এলাকায় নতুন মৌমাছি ও বিরল বুনো ফুলটি পাওয়া গেছে, সেটিকে সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা এবং সুরক্ষিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকেরা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অফশোর ব্যাংকিংয়ের পরিধি বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক

এক ব্যাংকের অফশোর ইউনিট এখন থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহককেও ঋণ দিতে পারবে। আগে অফশোর ইউনিটগুলো থেকে শুধু নিজ ব্যাংকের গ্রাহকদের ঋণ বা সেবা দেওয়া যেত। এখন এই সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের কার্যক্রম সম্প্রসারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অফশোর ব্যাংকিং-সংক্রান্ত আগের নীতিমালা সংশোধন করে বাড়তি কিছু সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। মূলত বাণিজ্য অর্থায়ন কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আগের নিয়ম অনুযায়ী অফশোর ইউনিটগুলো শুধু তাদের নিজস্ব ব্যাংকের এডি শাখার মাধ্যমে বিশেষায়িত ও অ-বিশেষায়িত অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাণিজ্য অর্থায়ন করতে পারত। বাণিজ্য অর্থায়নের মধ্যে ছিল বায়ার্স ক্রেডিট, স্বীকৃত বিলে অর্থায়নসহ আরও নানা পদ্ধতি। নতুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংশোধিত নীতিমালায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের ব্যবসা বা সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে।

নতুন বিধান অনুযায়ী, অফশোর ইউনিটগুলো তাদের নিজস্ব ব্যাংকের এডি শাখা ছাড়াও অন্যান্য ব্যাংকের এডি (অনুমোদিত পরিবেশক বা অথরাইজড ডিলার) শাখার মাধ্যমে বাণিজ্য অর্থায়ন করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে সব ঝুঁকি ও ঋণসীমা মূল্যায়ন করে তা যথাযথভাবে দিতে হবে।

জানা যায়, বিশেষায়িত অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে অফশোর ইউনিট এখন সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন নয় এমন প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব এডি শাখা এবং অন্যান্য ব্যাংকের এডি কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্ধারিত মেয়াদের জন্য বাণিজ্য অর্থায়ন বা ট্রেড ফাইন্যান্স করতে পারবে। একইভাবে অ-বিশেষায়িত অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের জন্যও অফশোর ইউনিট এখন বায়ার্স ক্রেডিট, স্বীকৃত বিল অর্থায়ন এবং অন্যান্য অনুমোদিত বাণিজ্য অর্থায়ন করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ অফশোর অর্থায়ন কার্যক্রমে আন্তব্যাংক সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ পদক্ষেপ দেশের বাণিজ্য অর্থায়নের ইকোসিস্টেমকে গভীরতর ও বৈচিত্র্যময় করার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংকের এডি শাখার সঙ্গে অফশোর ইউনিটগুলোর কার্যক্রমের আওতা বাড়ানোর ফলে অফশোর তারল্য আরও দক্ষভাবে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে লেনদেনজনিত জটিলতা কমবে এবং আর্থিক খাতে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ উৎসাহিত হবে।

অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের অভ্যন্তরে পৃথক এক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ প্রদান এবং বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে। অফশোর ইউনিটের ব্যবসায়ের পুরোটাই হয়ে থাকে বৈদেশিক মুদ্রায়। ব্যাংকের প্রচলিত কোনো নিয়ম বা নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল হিসাবে। এখন দেশের প্রায় ৪০টি ব্যাংক অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে ব্যবসা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ