ইলিয়াস আলীর প্রসঙ্গ টেনে আসাদুল হাবিবকে সাবধান করলেন মির্জা আব্বাস
Published: 4th, May 2025 GMT
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির গণপদযাত্রায় যোগ দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘পানি কখনো মারণাস্ত্র হতে পারে না। পানি কখনো যুদ্ধাস্ত্র হতে পারে না। একমাত্র সারা বিশ্বে ভারত দেখিয়ে দিল, পানিকে তারা মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। পানিকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। কতটুকু অমানবিক হলে তারা এ কাজটি করতে পারে!’
আজ রোববার বিকেলে রংপুর নগরের শাপলা চত্বরে গণপদযাত্রা শুরুর আগে এক সমাবেশে মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি। এতে রংপুর ছাড়াও তিস্তাপারের জেলা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারী বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মির্জা আব্বাস সিলেটের গুমের শিকার বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আরও একজন মানুষকে স্মরণ করি, তিস্তাপারের ভাইদের সামনে, সে আমার আরেক পরম স্নেহময় ইলিয়াস আলীকে। এই ইলিয়াস আলীকে গুম ও হত্যা করা হলো শুধু সুরমার পানি নিয়ে সে প্রতিবাদ করেছিল, এ জন্য। আপনাদের সামনে দুলুকে (আসাদুল হাবিব) সাবধান করব, কারণ ভারত কখনো এ ধরনের প্রতিবাদী মুখ সহ্য করতে পারে না।’
‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু)। গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি আসাদুল হাবিবের ডাকে রংপুরের ৫ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তাপারের ৫ জেলার ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টা টানা অবস্থান কর্মসূচি নেয় বিএনপি।
আরও পড়ুনইলিয়াস আলী নিখোঁজের ১৩ বছর আজ, সিলেটে বিএনপির নানা কর্মসূচি১৭ এপ্রিল ২০২৫গণপদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে সারা বাংলাদেশেকে শুধু তিস্তা নয়, সারা বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা তিস্তা বন্ধ করেছে, ফারাক্কা বন্ধ করেছে, সুরমা-কুশিয়ারা বন্ধ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই পানির ন্যায্য হিস্যা ইনশা আল্লাহ আমরা আদায় করে ছাড়ব।’ হাসিনার মতো এক স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশে না এলে অনেক আগেই তিস্তার পানির হিস্যা আদায় করা যেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনকে একটি ‘অহিংস’ প্রতিবাদ উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একটি অহিংস দাবি সারা বিশ্বের সামনে আজ উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ব জানতে পারবে যে ভারত আমাদের পানির অভাবে কী কষ্ট দিচ্ছে। আমরা চোখের পানিতে কারও আছে কিছু চাইব না। আমরা ভিক্ষা চাই না, হিসাবের পাওনা চাই। আমাদের হিসাবের পাওনা দিতে হবে। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলন থামবে না।’
বিএনপি একটি সরকারের অপেক্ষায় আছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শুধু আমরা একটা সরকারের অপেক্ষায় আছি, যে সরকার আমাদের দেশের মানুষের কথা বুঝতে পারবে। মানুষের ভাষাকে বুঝতে পারবে। যে সরকার মানুষের দাবিদাওয়াকে পূরণ করার সক্ষমতা রাখবে।’
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে গণপদযাত্রা। গতকাল বিকেলে রংপুরে নগরের স্টেশন সড়কে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে আজ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এ বছর প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছয় রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেন।
এছাড়া জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিনিধি দলে যুক্ত হন।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেয়।
সূচি অনুযায়ী অধ্যাপক ইউনূস আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।