ক্ষমা প্রার্থনা ও অবস্থান স্পষ্ট করে কুয়েট শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি
Published: 5th, May 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষমা প্রার্থনা ও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে শিক্ষকদের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন।
সোমবার (৫ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. হযরত আলীর কাছে চিঠিটি তুলে দেওয়া হয়। এর আগে সকালে উপচার্যের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় সম্মত হন শিক্ষার্থীরা।
চিঠির সঙ্গে শিক্ষার্থীরা পূর্বে প্রকাশিত খোলা চিঠি ও কিছু চিহ্নিত ভুয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আইডির তালিকা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে নার্স-মিডওয়াইফ শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন
রুয়েটের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এনসিপির মিছিলে কর্মকর্তা
শিক্ষার্থীদের দেওয়া চিঠি হুবহু তুলে ধরা হল-
“সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে খোলা চিঠি
প্রাপক: শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ
প্রেরক: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা
তারিখ: ০৫ মে ২০২৫
বিষয়: সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষমা প্রার্থনা ও অবস্থান স্পষ্টকরণ।
শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ,
আপনারা আমাদের গুরু, আমাদের পিতৃতুল্য, আমাদের আলোকবর্তিকা। আপনাদের শিক্ষা, দিক নির্দেশনা ও স্নেহই আমাদের জীবনের পাথেয়। আমরা আপনাদের ছত্রছায়ায় মানুষ হতে চাই, বড় হতে চাই।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা পূর্বেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। আজ আমরা আবারো আপনাদের সামনে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে, হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যদি আমাদের কোনো আচরণ, কোনো বক্তব্য বা পরিস্থিতি আপনাদের মনে সামান্যতম কষ্ট দিয়ে থাকে তবে আমরা তার জন্য লজ্জিত, দুঃখিত এবং অনুতপ্ত।
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, একটি কুচক্রী ও স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের অসততা ঢাকতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া আইডির মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ককে আরও বিপন্ন করার ঘৃণ্য চেষ্টা করছে। আমাদের আন্দোলন কখনই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছিল না; আমাদের আন্দোলনটি ছিল একটি ব্যার্থ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে ভবিষ্যতেও কখনো শিক্ষকদের সঙ্গে কোনোরকম প্রশ্নবিদ্ধ আচরণকে আমরা প্রশয় দিব না এবং এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে প্রস্তুত। আমরা চাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হোক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও পারস্পরিক সম্মানের এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।
শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ,
আমরা আপনাদের সন্তানের মতো, এবং সন্তান ভুল করতেই পারে। কিন্তু সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ফেরার চেষ্টাটাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। আজ আমরা সেই ভুল স্বীকার করে, আপনাদের সম্মুখে এসে, আবারো বলছি আমরা সত্যিই দুঃখিত। আমরা অনুতপ্ত। আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে আপনাদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
আপনারা যেন আমাদের সেই ক্ষমা দিয়ে আবার পথ দেখান, ভালোবাসায় বুকে টেনে নেন এটাই আমাদের বিনীত, প্রাণভরা প্রার্থনা।
শ্রদ্ধার সাথে,
সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র আপন দ র অবস থ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে হাজার হাজার ভারতীয় থাকার নেপথ্যে কী?
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রভাব বিশ্বের প্রায় সব দেশের উপরেই পড়ছে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। কারণ ইহুদি এই রাষ্ট্রে প্রচুর ভারতীয় কর্মী কাজ করেন।
“আমার ছয় বছরের মেয়েটাকে বহুদিন দেখিনি। ভেবেছিলাম সামনের মাসে বাড়ি যাব। কিন্তু ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে গেল। কবে যেতে পারব জানি না।” ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে বিবিসি বাংলাকে এভাবেই বলছিলেন রাঘবেন্দ্র নাইক নামের এক ভারতীয় নাগরিক।
সেখানে তিনি কেয়ার গিভারের কাজ করেন। দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের বাসিন্দা তিনি, কর্মসূত্রে ইসরাইলে আছেন গত ১৩ বছর ধরে। ইসরাইয়েল ও ইরানের সংঘাতের মধ্যে উদ্বেগে রয়েছেন নাইক।
আরো পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
ইরানে গ্রেপ্তার ইসরায়েলের ২২ গুপ্তচর
রাঘবেন্দ্র নাইক বলেন, “রাতে কান খাড়া করে থাকতে হয়, কখন সাইরেন বাজে। সাইরেনের আওয়াজ শুনলেই ভূগর্ভস্থ শেল্টারের দিকে দৌড়াই। গত কয়েক রাত আমি বা আমার আশপাশের কেউই ঘুমাতে পারিনি। যে হারে ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা হচ্ছে, তাতে এক এক সময় ভয় হয়, ফিরতে পারব তো?”
ইসরায়েল তেলেঙ্গানা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোমা রভির গল্পটাও প্রায় একই। তেল আবিবের কাছেই থাকেন তিনি।
রভি বলছিলেন, “গত সপ্তাহে আমার মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে এসেছে। ওর সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে গেল। কবে যেতে পারব জানি না।” প্রায় ২০ বছর আগে ইসরায়েল এসেছিলেন কাজের সূত্রে রভি।
তাদের মতো আরো অনেক ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষই ইসরায়েলৈ থাকেন। ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাতে ইরান থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
ভারতের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আটকে থাকা ভারতীয়দের ইসরায়েল থেকে স্থল সীমান্ত হয়ে প্রথমে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে। তারপর সেখান থেকে বিশেষ বিমানে তাদের দেশে ফেরানো হবে। তেল আবিবের ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা এই বিষয়ে নজর রাখবেন। যারা ফিরে আসতে চান, তাদের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে।
কাজ বা পড়াশোনার জন্য বহু ভারতীয়ই ইসরায়েলে রয়েছেন। ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রায় ২০০০০ হাজার কর্মী ইসরায়েলে আছেন। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে।
ওই দেশে ভারতীয় কর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগই কেয়ার গিভারের কাজ করেন। তাছাড়া, নির্মাণ শ্রমিক হিসাবেও সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ভারতীয়ই ইসরায়েলে পাড়ি দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে নার্স, কেয়ার গিভার এবং অদক্ষ শ্রমিকের জন্য ইসরায়েল কিন্তু ভারতীয়দের উপরই নির্ভরশীল। ইসরায়েলের প্রবীণ নাগরিকদের একটা বড় অংশই এই কেয়ার গিভারদের উপর নির্ভর করেন।
অশীতিপর নিসিন মোসেরি মুম্বাই থেকে ইসরায়েল গিয়েছিলেন ১৯৬৩ সালে। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমার ছেলেরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। আমার দেখাশোনা তো বটেই, সাইরেন বাজলে বোমা থেকে বাঁচতে ভূগর্ভস্থ আশ্রয়স্থলে যেতে হলেও আমাকে আমার কেয়ার গিভারেরই সাহায্য নিতে হবে।”
ইসরায়েলে ভারতীয়দের সংখ্যা
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আনুমানিক ১৮,০০০ থেকে ২০,০০০ ভারতীয় কর্মী ইসরায়েলে আছেন। তবে এই সংখ্যা আরো বেশি বলেই অনুমান করা হয়। কারণ, ২০২৩ সালে ভারতের সঙ্গে সে দেশের চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায়, বহু ভারতীয় কর্মী সেখানে গেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরমধ্যে ২০২৫ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত, ৬,৬৯৪ জন ভারতীয় কর্মী ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়োগ করেছে।
পাশাপাশি ১৯৫টি ইসরায়েলি কোম্পানিতেও ভারতীয় কর্মী নিয়োগ হয়েছে। নির্মাণকর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগই নির্মাণ খাতে নিযুক্ত, কাঠামো নির্মাণ, লোহা বাঁকানো এবং প্লাস্টার করার মতো কাজ করেন।
এরপর গতবছর ইসরায়েল নির্মাণকর্মী এবং কেয়ার গিভার মিলিয়ে প্রায় ১৫,০০০ ভারতীয় কর্মী সে দেশে পাঠানোর অনুরোধ জানায় ভারতকে। তাদের মধ্যে কতজন ইসরায়েলে কাজে যোগ দিয়েছেন, সে বিষয়ে জানা যায়নি।
কী কাজ করেন সেখানে তারা
ইন্ডিয়ান ইকনোমিক ট্রেড অর্গানাইজেশন-এর প্রেসিডেন্ট ড. আসিফ ইকবাল বলেছেন, ভারত থেকে মূলত কেয়ার গিভারের কাজ করেন তারা। মেল নার্স, নার্সিং অ্যাসোসিয়েট হিসাবে ভারতীয়দের চাহিদা রয়েছে। ইসরায়েলে প্রবীণ নাগরিকদের দেখাশোনা করার মানুষের অভাব। তাই ভারত থেকে, বিশেষত দক্ষিণ ভারত থেকে বহু ব্যক্তি কেয়ার গিভারের কাজ করেন। এরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
তিনি বলছেন, দ্বিতীয় যে সেক্টরে এখন কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। সেটা হলো, কন্সট্রাকশন। ইসরায়েলের বিভিন্ন অংশে ভবন তৈরি, মেরামতের কাজে বহু ভারতীয় কর্মী নিযুক্ত। ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ পুনর্গঠনের জন্যও কর্মীদের নিয়োগ করা হচ্ছে। তবে এই কর্মীদের সংখ্যাটা নার্সের তুলনায় অনেকটাই কম। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক হলেও কর্মী রয়েছেন।
কেন ইসরায়েলমুখী ভারতীয়রা?
ইসরায়েলকে কর্মক্ষেত্র হিসাবে বেছে নেওয়ার কী কারণ, জানতে চাইলে ম্যাঙ্গালরের বাসিন্দা পিএন লরেন্স বলেন, “এখানে মাইনে অন্যান্য অনেক দেশের চাইতে ভালো। আমি ইসরায়েলে ১৩ বছর কেয়ারগিভারের কাজ করার পর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে এসেছিলাম, কিন্তু ইসরায়েলে ফিরে যাব ঠিক করেছি।”
পিএন লরেন্স আরো বলেন, “যুদ্ধের কথা মাথায় রেখেও বলব, ইসরায়েল কাজের জায়গা ভালো। এখানে সরকার বিদেশি কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমা-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়, যা অন্য দেশে নেই। এখানে আমরা যা আয় করি, তার উপর ভারতে থাকা আমাদের পরিবার নির্ভর করে। কোথায় যাব?”
পেঠা টিকোয়ার যে অংশে ইয়াকভ টকার থাকেন, সেখানে আরো অনেক ভারতীয়ই থাকেন। মুম্বাই থেকে ১৯৬৩ সালে ইসরায়েলে আসা টকার বলেন, গত ২০-২২ বছর ধরে ভারতীয় কর্মীদের সংখ্যা বেড়েছে, মূলত কেয়ার গিভারদের। তার কারণ, পরিবারের সবাই কাজ করেন। বাড়ির বয়স্কদের দেখাশোনার কেউ নেই। এর আগে এত সংখ্যক ভারতীয় কর্মী কিন্তু ইসরায়েলে দেখা যেত না।
তেল আবিবে বাস করেন বেন্নি নাইডু। পেশায় ব্যবসায়ী তিনি। ম্যাঙ্গালোর থেকে ইসরায়েলে এসেছিলেন ৯০-এর দশকে।
তিনি বলেছেন, “তেল আবিব বা তার নিকটবর্তী অঞ্চলেই ভারতীয়রা বাস করেন। যারা কেয়ার গিভার তারা গোটা সপ্তাহ কাজ করার পর সপ্তাহান্তে ভাড়া করা বাড়িতে ফেরেন। সেই সময় আমার দোকানে আসেন কথাবার্তা হয়। আমরা সমস্ত উৎসব একসঙ্গে উদযাপন করি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা সকলেই উদ্বেগে আছি।”
তার মতে, “গাজা নিয়ে সংঘাতের সময় থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে। ইরানের সঙ্গে সংঘাতের পর পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হয়েছে এটা স্বীকার করা ছাড়া উপায় নেই।”
নাইডু বিয়ের পর দেশ ছাড়েন। তার কথায়, “আমার স্ত্রী ইহুদী। বিয়ের পর এখানে চলে আসি। নাগরিকত্ব নিই। প্রথমে টেলিফোনের একটা কোম্পানিতে কাজ করতাম। পরে ব্যবসা শুরু করি। আমার তিন ছেলে। দু’জনই মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দিয়েছে, ছোটজনও দেবে। আমিও এখানকার নাগরিকত্ব নেওয়ার পর মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দিয়েছি।”
‘চতুর্দিকে মৃত্যু ফাঁদ। কোথায় যাব’
এই মুহূর্তে ইসরায়েলের পরিস্থিতি কেমন জানতে চাইলে রাঘবেন্দ্র নাইক বলেন, “ইসরায়েলের পরিস্থিতির কথা নতুন করে কী বলব। আগে সাইরেন শুনলে এক দৌড়ে বাড়িতে ঢুকতাম কিন্তু এখন ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার খুঁজি কারণ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিশালী।”
ইয়াকভের বাড়ির কাছাকাছি দু’টো বাড়ি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “গাজায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এক সময় যেমন অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল, তেমনই এটাও অভ্যেস হয়ে যাবে। আমাদের চতুর্দিকে মৃত্যু ফাঁদ। কোথায় যাব?”
ইসরায়েলস্থিত ইন্ডিয়ান জিউইশ কমিউনিটি সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ওয়াস্কার জানিয়েছেন, তার পরিচিত কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে সাম্প্রতিক হামলায়। তিনি বলেন, “আমার পরিচিত কয়েকজনকে দিন কয়েক আগে হারিয়েছি। তার মধ্যে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া তরুণপ্রজন্মও আছে।”
তার নাতনি স্তাভ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখানে মেয়েদেরও সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক। আমি দুই বছর আগে আমার মেয়াদ শেষ করেছি। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি হয়তো আবার যেতে হতে পারে।”
এই সমস্ত কিছুর মাঝেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন নাইক। তিনি বলেন, “আমি ঠিক করেছি পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে ভারতে ফিরে যাব। সেখানেই কাজ খুঁজে নেব। আগে বছরে একবার অন্তত দেশে যেতে পারতাম কিন্তু একের পর এক সংঘর্ষের কারণে সবকিছু অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। এখন ভয় হয়।”
ঢাকা/ফিরোজ