ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। এসব সংঘাতের অন্যতম প্রধান কারণ কাশ্মীর ভূখণ্ড নিয়ে বিরোধ। কাশ্মীর নিয়ে দেশ দুটি একাধিকবার সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িয়েছে। তাছাড়া দেশ বিভাগ, ধর্ম ও আদর্শিক পার্থক্য দেশ দুটিকে বারবার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরই কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিলে এই যুদ্ধ হয়। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ‘অপারেশন জিব্রাল্টার’ শুরু করে। দেশটির সেনারা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করলে দুই দেশ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে ১৯৬৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর যুদ্ধবিরতি হয়।
১৯৭১ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বেসামরিক জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ করে। ভারত পূর্ব পাকিস্তানে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে এবং ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।
১৯৮৯ সালে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মীর উপত্যকায় সশস্ত্র লড়াই হয়। পাকিস্তানের সমর্থনে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের উত্থানের ফলে সংঘাত বাড়ে। ভারতীয় সেনারা নৃশংস প্রতিক্রিয়া দেখালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক সংঘর্ষ তীব্রতর হয়।
১৯৯৯ সালের যুদ্ধটি কার্গিল যুদ্ধ নামে পরিচিত। পাকিস্তানি সেনা ও বিদ্রোহীরা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কার্গিল সেক্টরে অনুপ্রবেশ করে। তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর রসদ সরবরাহ লাইন ব্যাহত করতে কৌশলগত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। ভারত অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে ‘অপারেশন বিজয়’ শুরু করলে তীব্র লড়াই হয়।
২০০১ সালে দিল্লির সংসদে হামলা হয়। সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হলেও বড় সংঘর্ষ হয়নি। ২০১৬ সালে উরিতে সেনাঘাঁটিতে হামলার পর পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারত ‘অপারেশন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ পরিচালনা করে। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর বালাকোটে বিমান হামলা করে ভারত। পাকিস্তানও জড়িয়ে পড়ে যুদ্ধে।
সর্বশেষ গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে গত মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে ভারত। হামলায় ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার দাবি করে ভারত। অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ১০ জন নিহত হয় বলে দাবি করে ইসলামাবাদ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ই-সিগারেটের চালান আটক
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইলেকট্রিক সিগারেট (ই-সিগারেট), রিফিল, কার্টিজ, কয়েলের একটি চালান আটক করা হয়েছে।
রোববার সকালে আবুধাবি থেকে আসা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের একজন যাত্রীর কাছ থেকে এই চালান আটক করা হয়েছে। ওই যাত্রীর নাম মোহাম্মদ আইয়ুব। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়।
বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানবন্দরে বেল্ট থেকে ওই যাত্রী ব্যাগেজ সংগ্রহ করে কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেল পার হচ্ছিলেন আইয়ুব। এ সময় বিমানবন্দর এনএসআই টিম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তার ব্যাগেজ তল্লাশি করে ২০টি ইলেকট্রিক সিগারেট, ৪৯০টি সিগারেট রিফিল লিকুইড, ২৮০টি সিগারেট কার্টিজ এবং ৩০টি সিগারেট কয়েল পাওয়া যায়। এসব পণ্যের বাজার মূল্য আনুমানিক ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। তবে প্রথমবারের মতো অভিযুক্ত হওয়ায় পণ্যসামগ্রী রেখে দিয়ে ওই যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।