পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হামলা চালায় ভারত। ওই সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে আশপাশের পাহাড়গুলোর দিকে ছুটে যান।

হামলার সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা দিয়ে রয়টার্সকে স্থানীয়রা জানান, চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ হচ্ছিল, ভূমি কেঁপে উঠছিল। তখন মসজিদের মাইকে লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়।

৪৬ বছর বয়সী বাসিন্দা মুহাম্মদ শায়ের মীর বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে আমরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসি। পরে আরও বিস্ফোরণ হয়। পুরো ঘর কেঁপে উঠছিল। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমরা বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যাই।

মুজাফফরাবাদের বাসিন্দা শায়ের মীর বলেন, হামলার পর তিনি ও তার পরিবার চার ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন। তার কিছু প্রতিবেশী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে ভুগছেন।

তিনি বলেন, গরিব, নিরীহ মানুষদের সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। আমাদের অসহায় মায়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, বোনেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমাদের ঘরগুলো কেঁপে উঠেছিল, দেয়ালে ফাটল ধরেছে।

বুধবার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি মসজিদে জড়ো হন অনেকে। মসজিদটির ছাদ ধসে পড়েছে, মিনার ভেঙে পড়েছে। এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে রাখে। 

স্থানীয় এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, মসজিদটির কাছে তিনজন নিহত হয়েছেন।

মুজাফফরাবাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানকার হাসপাতালগুলো চালু আছে। আজ সকালে কিছু ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে ভারত। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের ২৬ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে পাকিস্তানের কামানের গোলা হামলায় ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪৩ জন আহত হয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম জ ফফর ব দ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

জমিয়ত–ই–তালাবার সঙ্গে ছাত্রশিবির নেতাদের সাক্ষাৎকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলল ছাত্রদল

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা সম্প্রতি জামায়াত–ই–ইসলামী পাকিস্তানের ছাত্রসংগঠন ইসলামী জমিয়ত–ই–তালাবা পাকিস্তানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাতের মাধ্যমে শিবিরের সভাপতি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।

আজ সোমবার রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় নাছির উদ্দীন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যায় নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র সংঘের মূল অংশটি হলো আজকের জমিয়ত–ই–তালাবা পাকিস্তান। সেই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শিবিরের সভাপতি গোপনে সাক্ষাৎ করেছেন। আসলে তাঁরা এখনো তাঁদের প্রিয় অভিভাবককে ভুলতে পারেননি।’

গতকাল রোববার জমিয়ত–ই–তালাবার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুসলিম যুব সামিটের এক ফাঁকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ তিনজন নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইসলামী জমিয়ত–ই–তালাবা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান বিলাল হাশমি। ইসলামী জমিয়ত–ই–তালাবার সেক্রেটারি জেনারেল ওয়াসিম হায়দার ও করাচি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আবিশ সিদ্দিকীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রশিবিরের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন আজিজুর রহমান আজাদ (প্রচার সম্পাদক) ও মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী (আন্তর্জাতিক সম্পাদক)।

ইসলামী জমিয়ত–ই–তালাবা পাকিস্তানের ফেসবুক থেকে নেওয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ