বাড়িতে গন্ধ ছড়ানোর পর উদ্ধার আইনজীবীর গলিত মরদেহ
Published: 8th, May 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পৌরসভার বালুবাগান এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মঈন উল বারি (৪৭) নামের এক আইনজীবীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার বালুবাগান আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর গেটের সামনের একটি বাড়ি থেকে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, আইনজীবী মঈন উল বারি চার দিন আগে মারা গেছেন।
মৃত মঈন উল বারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বালুবাগান এলাকার মৃত ইউসুফ আলী বিশ্বাসের ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র থেকে জানা যায়, বালু বাগান ৪ নম্বর গেটের সামনের বাড়িটি থেকে দুর্গন্ধ পান এলাকাবাসী। পরে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশকে খবর দেয়। পরে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং রাজশাহীর সিআইডির একটি টিমকে খবর দেয়। এরপর খবর পেয়ে রাজশাহী থেকে একটি সিআইডির টিম এসে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে খাটের ওপর মঈন উল বারির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী নাজমা বলেন, বাড়িটি থেকে গন্ধ ছড়ানোয় অনেকে কোন পশু মরে আছে ভেবে বাড়ির আশেপাশে তল্লাশি করে। কিন্তু বাড়ির আশেপাশে কিছু না পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহটিতে দেখে মনে হচ্ছে, ছোট ছোট পোকার সৃষ্টি হয়েছে। শরীরের মাংসগুলো কালো হয়ে গেছে। ধারনা করা হচ্ছে, তিনি কয়েকদিন আগেই মারা গেছেন।
মঈন উল বারির বোন শামিমা নাজনিন বলেন, আমার ছোট ভাই ট্যাক্সের আইনজীবী ছিলেন এবং ঢাকায় প্র্যাকটিস করতেন। পরে ঢাকা থেকে তিনি বাড়ি চলে আসেন। এরপর ৪ বছর আগে আমার বাবা মারা যান এবং ৭ মাস আগে আমার মা মারা যান। এছাড়া আমার ভাই ও ভাবির অনেক আগে ডিভোর্স হয়ে যায় এবং একমাত্র মেয়ে ঢাকায় পড়াশুনা করে। তাই, আমার ভাই বাড়িতে একাই থাকতেন এবং একাকী জীবনযাপন করতেন। গত কয়েকদিন থেকে আমার ভাইকে ফোন করছি। কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না। পরে এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমরা খবর পাই। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাড়িটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। আজ সকালে সিআইডির টিমসহ সদর মডেল থানা পুলিশ মঈন উল বারির মরদেহটি উদ্ধার করে।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি প্রায় ৪ দিন আগে মারা গেছেন। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ ১১ট র দ ক আইনজ ব মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ারাধীন: শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে প্রসিকিউটর
একটি মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে নিয়োগ দেওয়া আইনজীবী আমিনুল গনি (টিটু) ফেসবুকে ক্ষমতাচ্যুত এই প্রধানমন্ত্রীর ফাঁসি চেয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন একজনকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ারাধীন। এটাতে প্রসিকিউশনের করণীয় কিছু নেই।’
রোববার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মিজানুল ইসলাম এ কথা বলেন।
ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার পক্ষে যে আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি আগেই তাঁর ফাঁসি চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এসব বিষয় ট্রাইব্যুনালের নজরে এনেছেন কি না, কিংবা এসব বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না।
জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল তো আজকে প্রকাশ্যেই ছিলেন। আপনারাও উপস্থিত ছিলেন। এটা ট্রাইব্যুনালের বিষয়। ট্রাইব্যুনাল বিবেচনা করবেন তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ এসেছে বা কী আদেশ দেওয়া উচিত বা কী আদেশ দিয়েছেন—এটা ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত দেবেন। এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ারাধীন। এখানে প্রসিকিউশনের করণীয় কিছু নেই।’
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে নারী কণ্ঠের একজনকে বলতে শোনা যায়, সারা দেশে তাঁর নামে ২২৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি ২২৭টি হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এই অডিও ফরেনসিক পরীক্ষা করে। তাতে তারা নিশ্চিত হয় যে এ কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে আসামি করে একটি আদালত অবমাননার মামলা করে। এই মামলায় দুই আসামিকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনাল। এর পরও তাঁরা হাজির না হলে তাঁদের পলাতক দেখিয়ে গত বৃহস্পতিবার তাঁদের পক্ষে ‘স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল’ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল গনিকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল।