দূরে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, নাহলে বিপদ হতে পারে: সরকারকে রিজভী
Published: 12th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা অনেক দূরে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, নাহলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোনো ঘটনায় আবেগবশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত ও ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজকল্যাণ কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু-মিত্র সবার সেবা করেছেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। সেখানে নার্সিংয়ের যে মহিমান্বিত রূপ দেখেছি, তা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার কথা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা, মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন।
নার্সদের বৈষম্যের দৃষ্টিতে দেখা হয় উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, দেশে নার্সদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াজুড়েই একই অবস্থা। নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনি নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটিও দিতে হবে।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, উড়াল সেতু, মেগা প্রজেক্ট কি চিবিয়ে চিবিয়ে খাবো নাকি। যে দেশের হিউম্যান উন্নতি হয় না, সে দেশ কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে দেশ উন্নতি লাভ করত। করোনার সময় স্বাস্থ্যখাতে অনিময় করেছে, যার নায়ক দরবেশ এখন জেলে আছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাত কীভাবে দেখবে, অথচ অত্যন্ত জরুরি এই সার্ভিসটা। কেন আমি ডলার খরচ করে ইন্ডিয়াতে যাবো? কেন তাদেরকে টাকা দিয়ে আসবো? তারা প্রতিমুহূর্তে আমাদেরকে নিয়ে নেগেটিভ বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছে। তাদের পেছনে যদি এই আমরা ডলার খরচ না করে, এই টাকাগুলো আমাদের নার্স-ডাক্তারদের পেছনে খরচ করি, তাহলে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার তো কোনো কারণই থাকতে পারে না। ডাক্তারদের লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিক করতে পারলেই তো কেউ ওই (ভারত) দিকে যেত না । সেই কাজগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের করা দরকার ছিল।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কেবল ব্যক্তির বদল নয়, পুলিশের সংস্কারও প্রয়োজন: সামান্তা শারমিন
কেবল ব্যক্তির বদল নয়, বরং পুরো পুলিশ প্রশাসনের প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। গুম–খুন–নির্যাতনের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে পুলিশ বাহিনী। শুধুমাত্র একজন মানুষ পরিবর্তন করলেই যে এটা সংস্কার, তা আমরা কেউ বিশ্বাস করি না। এরকম কত মানুষ পরিবর্তন হলো! আওয়ামী লীগ তো কম পরিবর্তন করেনি। এভাবে পরিবর্তন হবে না। নীতিমালা ও আইনে পরিবর্তন আনতে হবে।
আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নির্যাতন থেকে প্রতিরোধ: স্মৃতি, ন্যায়বিচার ও প্রতিবাদের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এনসিপির মানবাধিকারবিষয়ক সেলের আয়োজন করে।
সামান্তা শারমিন বলেন, একজন মানুষ গুম–খুনের শিকার হলে তার পরিবারও অসহায় হয়ে পড়ে। এসব পরিবারের ক্ষতিপূরণ কে দেবে? এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতনের শিকার হওয়া সবাইকে স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, কেউ কি বলতে পারবেন যে, পুলিশ সংস্কার নিয়ে আমাদের শেষ আলাপটা কবে দেখেছেন? সর্বশেষ কোন রাজনৈতিক দল পুলিশ সংস্কার কমিশন নিয়ে আলাপ করেছেন? কিন্তু পুলিশ সংস্কার যদি না হয়, তাহলে যেই দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা পুলিশকে রাজনৈতিকভাবেই ব্যবহার করবে। এটা বাংলাদেশের বাস্তবতা। এ সময় তিনি গুম, খুন এবং নির্যাতন প্রতিরোধে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক চুক্তির আহ্বান জানান।
সভায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার পিএইচডি গবেষক খন্দকার আবদুর রকিব, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসাইন ও এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার প্রমুখ।