২০৩০ সালের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে ১৫০ পৌরসভা
Published: 14th, May 2025 GMT
দেশের নিম্ন আয়ভিত্তিক শহুরে জনগোষ্ঠীর জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি এবং আচরণ পরিবর্তনের লক্ষ্যে আগামী পাঁচ বছরের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ওসাপ বাংলাদেশ। এর আওতায় ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রংপুরসহ দেশের ৩২টি পৌরসভায় কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি। চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা ও কলারোয়া পৌরসভায় পানি, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ১৫০টি পৌরসভায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনাই এর লক্ষ্য।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কান্ট্রি বিজনেস প্ল্যান ২০২৫–২০৩০’ ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) এহেতেশামুল রাসেল খান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মাশিয়াল ম্যানেজার কাজী শহিদুল ইসলাম এবং কোকা-কোলা কোম্পানি বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড মমশাদ আলী খান।
অনুষ্ঠানে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ১৫০টি পৌরসভায় ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ বা সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) এহেতেশামুল রাসেল খান।
তিনি বলেন, আমরা মূলত প্রচলিত পদ্ধতিতে পানি ও স্যানিটেশন সেবা দিয়ে থাকি। সরকারি সহায়তা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় বর্তমানে ৩৬০০টি গ্রামীণ এলাকায় এই সেবা চালু রয়েছে। আমরা পৌরসভাগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণ করে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে থাকি। তবে শুধু অবকাঠামো নির্মাণ যথেষ্ট নয়, এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষ জনবল এবং প্রশিক্ষণ অপরিহার্য।
এহেতেশামুল রাসেল আরও জানান, বর্তমানে ৫০টি পৌরসভায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং অতিরিক্ত ৮০টি পৌরসভায় এই কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। 'আমরা আশা করছি, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫০টি পৌরসভায় কাজ শেষ হবে। এতে নতুন নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে।
তিনি আরও জানান, সরকারি সক্ষমতা সীমিত হলেও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এ বিষয়টি অনুধাবন করেছে এবং শুধু অবকাঠামো নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা ও স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
ওসাপ গ্লোবালের চিফ অপারেটিং অফিসার জেরেমি হর্নার বলেন, এই বিজনেস প্ল্যান শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি আমাদের বৈশ্বিক কৌশলেরই একটি অংশ। আমরা চাই পার্টনারশিপ, প্রমাণভিত্তিক উদ্যোগ ও কমিউনিটি নেতৃত্বে ওয়াশ সেবা পৌঁছে দিতে।
বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ম্যানেজার উত্তম কুমার সাহা বলেন, আগামী পাঁচ বছর আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মডেলে আরও বেশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে চাই। এটি শুধু ওয়াশ নয়, বরং দারিদ্র্য বিমোচন ও শহর উন্নয়নের বিষয়।
কোকা-কোলা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড মমশাদ খান বলেন, নিরাপদ পানি সকলের অধিকার। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার প্রতিনিধিসহ স্থানীয় কমিউনিটি সদস্য, গার্মেন্টস মালিক, উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। তাঁরা ওয়াশ সেবায় নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রসভ অন ষ ঠ ন প রসভ য়
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত: মৃত্যু ঝুঁকিতে দেড় কোটি মানুষ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিদেশি মানবিক সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ তহবিল কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিবিসি জানায়, দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদক্ষেপের ফলে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই শিশু।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত মার্চ মাসে জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, ইউএসএআইডি’র ৮০ শতাংশেরও বেশি কর্মসূচি বাতিল করেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন।
ল্যানসেট প্রতিবেদনের সহ-লেখক ডেভিড রাসেলা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য, এর ফলে যে ধাক্কা আসবে তা বিশ্বব্যাপী মহামারি বা একটি বড় সশস্ত্র সংঘাতের সাথে তুলনা করা যেতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “এই তহবিল হ্রাসের কারণে গত দুই দশকে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য খাতে অর্জিত অগ্রগতি হঠাৎ থেমে যেতে পারে, এমনকি তা উল্টে যেতে পারে।”
গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা সম্মেলন হচ্ছে স্পেনের সেভিয়া শহরে। জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের বহু নেতারা। ঠিক এমন সময় এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো।
২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩৩টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখিয়েছেন, ইউএসএআইডি’র সহায়তা ওই সময়ের মধ্যে ৯ কোটি ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে সহায়তা করেছে।
তারা আরো বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৮৩ শতাংশ বাজেট ছাঁটাই যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখ প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঘটতে পারে।
এই মৃত্যুর মধ্যে ৪৫ লাখের বেশি শিশু থাকবে যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে—অর্থাৎ বছরে গড়ে ৭ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন, এর আগে ইলন মাস্কের নেতৃত্বে খরচ কমানোর উদ্যোগ হিসেবে ফেডারেল কর্মী সংখ্যা কমাতে কাজ করেছিল। প্রশাসনের দাবি, ইউএসএআইডি ‘উদারপন্থী প্রকল্পগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে’।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে কাজ করেছে, যার বেশিরভাগই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে।
রুবিও বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে এখনও হাজারটা কর্মসূচি রয়েছে। যা কংগ্রেসের পরামর্শক্রমে ‘আরো কার্যকরভাবে’ পরিচালিত হবে। কিন্তু জাতিসংঘের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মতে, বাস্তব পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না।
গত মাসে, জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছিলেন, কেনিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে শত শত মানুষ ধীরে ধীরে অনাহারে মরছে, কারণ মার্কিন সহায়তা কমে যাওয়ায় খাদ্য সরবরাহ রেকর্ড পরিমাণে কমে গেছে।
ঢাকা/ইভা