দেশের নিম্ন আয়ভিত্তিক শহুরে জনগোষ্ঠীর জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি এবং আচরণ পরিবর্তনের লক্ষ্যে আগামী পাঁচ বছরের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ওসাপ বাংলাদেশ। এর আওতায় ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রংপুরসহ দেশের ৩২টি পৌরসভায় কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি। চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা ও কলারোয়া পৌরসভায় পানি, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ১৫০টি পৌরসভায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনাই এর লক্ষ্য।

বুধবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কান্ট্রি বিজনেস প্ল্যান ২০২৫–২০৩০’ ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) এহেতেশামুল রাসেল খান। 

বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মাশিয়াল ম্যানেজার কাজী শহিদুল ইসলাম এবং কোকা-কোলা কোম্পানি বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড মমশাদ আলী খান। 

অনুষ্ঠানে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ১৫০টি পৌরসভায় ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ বা সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) এহেতেশামুল রাসেল খান। 

তিনি বলেন, আমরা মূলত প্রচলিত পদ্ধতিতে পানি ও স্যানিটেশন সেবা দিয়ে থাকি। সরকারি সহায়তা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় বর্তমানে ৩৬০০টি গ্রামীণ এলাকায় এই সেবা চালু রয়েছে। আমরা পৌরসভাগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণ করে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে থাকি। তবে শুধু অবকাঠামো নির্মাণ যথেষ্ট নয়, এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষ জনবল এবং প্রশিক্ষণ অপরিহার্য।

এহেতেশামুল রাসেল আরও জানান, বর্তমানে ৫০টি পৌরসভায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং অতিরিক্ত ৮০টি পৌরসভায় এই কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। 'আমরা আশা করছি, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫০টি পৌরসভায় কাজ শেষ হবে। এতে নতুন নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে।

তিনি আরও জানান, সরকারি সক্ষমতা সীমিত হলেও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এ বিষয়টি অনুধাবন করেছে এবং শুধু অবকাঠামো নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা ও স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

ওসাপ গ্লোবালের চিফ অপারেটিং অফিসার জেরেমি হর্নার বলেন, এই বিজনেস প্ল্যান শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি আমাদের বৈশ্বিক কৌশলেরই একটি অংশ। আমরা চাই পার্টনারশিপ, প্রমাণভিত্তিক উদ্যোগ ও কমিউনিটি নেতৃত্বে ওয়াশ সেবা পৌঁছে দিতে।

বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ম্যানেজার উত্তম কুমার সাহা বলেন, আগামী পাঁচ বছর আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মডেলে আরও বেশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে চাই। এটি শুধু ওয়াশ নয়, বরং দারিদ্র্য বিমোচন ও শহর উন্নয়নের বিষয়।

কোকা-কোলা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড মমশাদ খান বলেন, নিরাপদ পানি সকলের অধিকার। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার প্রতিনিধিসহ স্থানীয় কমিউনিটি সদস্য, গার্মেন্টস মালিক, উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। তাঁরা ওয়াশ সেবায় নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রসভ অন ষ ঠ ন প রসভ য়

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের সম্মেলন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে, আশা নিরাপত্তা উপদেষ্টার

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গাবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে কক্সবাজারের অনুষ্ঠেয় সম্মেলনটি জাতিসংঘের একটি বৃহত্তর সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশবিশেষ। এই সম্মেলন রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এ সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেওয়ার একটি বড় সুযোগ।

২৫ আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে ঢাকায় থাকা কূটনীতিকদের এ বিষয়ে আজ রোববার সকালে ব্রিফ করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরে কক্সবাজারের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাস্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশ এবং জোট মিলিয়ে ৫০টি মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, একসময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক আলোচনার এজেন্ডা থেকে প্রায় বাদ পড়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সব সদস্যরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই আহ্বানে তাৎক্ষণিকভাবে ও সর্বসম্মতিক্রমে সাড়া পাওয়া যায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই সম্মেলন আহ্বানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিশ্বের ১০৬টি দেশ এই সম্মেলনকে স্পন্সর করেছে। এখন যথেষ্ট পরিমাণ আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, সম্মেলনটি রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেওয়ার একটি বড় সুযোগ। এই কারণে রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর, তাদের কথা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের স্বপ্নগুলোকে সে সম্মেলনে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চলছে।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোই এ ধরনের সম্মেলনে অংশ নেয়। রোহিঙ্গারা তো আর সদস্য নয়। কিন্তু কাউকে তো তাদের ভয়েসটা নিয়ে যেতে হবে। আমরা এ ধরনের প্রক্রিয়ায় সে কাজটা করছি। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি।’

ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া এক রাষ্ট্রদূত জানান, কক্সবাজার সম্মেলনের শিডিউল দেওয়া হয়েছে। এতে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ