কুয়েটে আবার অস্থিরতা, তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
Published: 15th, May 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আবার অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। একাডেমিক কার্যক্রম চালু, নতুন একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন ও আগে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা তাঁদের তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
অবস্থান কর্মসূচির এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্য দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনেন এবং তাঁদের কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু সময় চান।
অন্যদিকে শিক্ষকদের কর্মবিরতির আজ ছিল অষ্টম দিন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ৫ মে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভা শেষে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে সংঘটিত অপ্রত্যাশিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারীদের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে চিহ্নিত করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানানো হয়। শিক্ষকদের দেওয়া সেই সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কুয়েট প্রশাসনকে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা আজ শেষ হবে। আগামী শুক্র ও শনিবার আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। এরপর রোববার শিক্ষক সমিতির সভায় সাধারণ শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। তাঁরা বলেন, সাবেক উপাচার্যের পতনের পর নতুন উপাচার্য আসার পরেও সেই পুরোনো প্রহসনের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তাঁদের শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে। দফায় দফায় তাঁরা স্থানীয়দের হামলার হুমকিও পাচ্ছেন। ৪ মে থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও এখনো শুরু হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা আতঙ্কিত। দ্রুত এ অবস্থার অবসান চান তাঁরা।
কুয়েটে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হজরত আলী। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের নিচে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে আম নামানো শুরু
রাজশাহীর বিখ্যাত আমের জন্য অপেক্ষার অবসান হলো। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল থেকে নগর ও আশপাশের উপজেলার বাগানগুলোতে শুরু হয়েছে গাছপাকা গুটি আম নামানোর কার্যক্রম।
পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে নামানো হবে হিমসাগর, গোপালভোগ, আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনাসহ বিভিন্ন জাতের আম।
বাগানিদের মতে, এবার আমের ফলন গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও বাজারমূল্য তুলনামূলক কম। তবে সময়মতো আম পাড়ার সুযোগ পাওয়ায় সন্তুষ্ট তারা।
গত আট বছরের মতো এবারও অপরিপক্ক আম বাজারজাতকরণ ঠেকাতে জাতভেদে আম নামানোর নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এই সময়সূচিই ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ নামে পরিচিত। সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শুক্রবার (১৫ মে) থেকে গুটি আম পাড়া শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী নগর, পুঠিয়া ও বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, আমচাষিরা গাছপাকা গুটি আম নামিয়ে বানেশ্বর হাটসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।
রাজশাহী নগরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার এক বাগানে আম নামাচ্ছিলেন চাষি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “আমাদের বাগানে এখন যেসব আম নামানো হচ্ছে, সবই গুটি জাতের। এর মধ্যে আছে সাগরিকা, চোষা বা চোরষা, বৈশাখী ও চাপড়া। এসব আমকে অনেকেই আঁটি আমও বলেন। এই গুটি জাতের প্রায় ৩০০ রকমের আম আছে। যেগুলো অন্য জাতের চেয়ে আগেভাগেই পাকতে শুরু করে।”
তিনি আরও বলেন, “এবার যে সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তা সময়মতোই কার্যকর হওয়ায় আমাদের জন্য সুবিধা হয়েছে। গাছে আমও ভালোভাবে পেকেছে।”
জেলার বাঘা উপজেলার আমচাষি আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, “প্রথমদিন বাগান থেকে বড় আকারের গুটি আম মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। আর ছোট আমের দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। গত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই দাম কিছুটা কম।”
তিনি আরও বলেন, “এবার এলাকার অন্য বাগানগুলোতে আমের ফলন ভালো হলেও আমার বাগানে কিছুটা কম হয়েছে। তবুও বাজারে যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে দাম কমে শুরু হওয়ায় আমরা একটু হতাশ।”
ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গোপালভোগ আম নামানো যাবে ২২ মে থেকে। লখনা (লক্ষণভোগ) ও রানীপছন্দ ২৫ মে থেকে, হিমসাগর ও খিরসাপাত ৩০ মে থেকে, ল্যাংড়া ও ব্যানানা ম্যাংগো ১০ জুন থেকে, আম্রপালি ও ফজলি ১৫ জুন থেকে, বারি-৪ আম ৫ জুলাই, আশ্বিনা ১০ জুলাই এবং গৌড়মতি ১৫ জুলাই থেকে, এছাড়া কাটিমন ও বারি আম-১১ জাতের আম পাকলেই নামাতে পারবেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানিয়েছেন, চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে আমের চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে।
ঢাকা/কেয়া/এস