সাম্য হত্যার দায় এড়ানো উপাচার্যের গন্তব্য
Published: 15th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) নিহত হয়েছেন। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। সংবাদমাধ্যমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জানিয়েছেন, কয়েকজন সহপাঠী রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁর ডান কানের পেছনে, বুকের বাঁ পাশে এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া ডান পায়ের ঊরুতে ধারালো অস্ত্রের এক থেকে দেড় ইঞ্চির মতো গভীর ক্ষত দেখা গেছে (সমকাল, ১৫ মে ২০২৫)।
সাম্যর সঙ্গে থাকা আহত বন্ধু জানিয়েছেন, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলেন আরেক বন্ধুর দোকানে কাবাব খেতে। মোটরসাইকেলে ফেরার সময় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মোটরসাইকেল তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর ছাত্রদলের কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, এর পেছনে প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের হাত থাকতে পারে। আবার ছাত্রশিবিরে যুক্ত লোকজন যেভাবে এটাকে মাদকসেবীদের কাজ বলে চালিয়ে দিতে চাইছে এবং সাম্যর চরিত্র হননমূলক ইঙ্গিত করছে, তাতে বিষয়টি রহস্যজনক হয়ে উঠছে।
অনলাইনে দুই ছাত্র সংগঠনের পরস্পরবিরোধী দাবির বাইরে অফলাইনে যে বিষয়টি চোখে পড়বে, তা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায় এড়ানোর অপচেষ্টা। প্রথমে বলা হলো– ঘটনাস্থল ক্যাম্পাসের বাইরে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায় নেই। এর পর উপাচার্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সামনে যেভাবে হাজির হলেন, তা আরও হতবাক করে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু সরকার গঠনের প্রায় ৯ মাস হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে– এমন দাবি করা যাবে না। যথাযথ পদক্ষেপ নিতে না পারায় একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ নিরসন কিংবা ঢাকায় বিভিন্ন কলেজে সংঘর্ষ মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ যেমন অপ্রতুল, তেমনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অকার্যকর। আমরা শিক্ষা উপদেষ্টার পরিবর্তন হতে দেখেছি; কিন্তু শিক্ষাঙ্গনের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে– বলা যাবে না।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অনেকেই ষড়যন্ত্রতত্ত্ব সামনে আনছেন। এর আগেও পতিত সরকার ষড়যন্ত্রতত্ত্ব দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা ও পরোক্ষ জনসমর্থন নিয়ে। এই সরকারের কেন ষড়যন্ত্রতত্ত্বের প্রয়োজন হবে? কেবল শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সরকার এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। নইলে গণঅভ্যুত্থানের ফ্রন্টলাইনে থাকা ছাত্রনেতা খুন হওয়ার পর তাঁকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধেও সরকারের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না কেন?
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নতুন বাস্তবতায় শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছাত্রদল শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে আসছে। নিজেদের ছাত্রনেতা খুনের শিকার হলেও তারা এখনও কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে।
সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে যে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যেভাবে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের পর উপাচার্য প্রত্যাশিত ভূমিকা দেখাতে পারেননি। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সহপাঠী খুনের ঘটনায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সামনে যে চরিত্রে উপাচার্যকে দেখা গেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় উপাচার্যের শোকাহত হওয়ার কথা ছিল; তিনি হলেন উদ্ধত। তাঁর আচরণ ক্ষমতার দম্ভ প্রকাশ ছাড়া আর কী?
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের প্রথম শর্ত। পিতা-মাতা তাদের আদরের ধনকে জীবন গড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান; জীবন দেওয়ার জন্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রাণ হারানোর অঘটন এবারই প্রথম নয়। গত দুই দশকে পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় বিচারিক পরিণতি দেখা যায় না। প্রতিটি ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি করে। আইন অনুযায়ী মামলা করা হয়। কিছু অভিযুক্তকে আটকও করা হয়। তবে মামলাগুলো চূড়ান্ত বিচারের মুখ দেখে না। বিচার পায় নাভুক্তভোগী পরিবার। আবার কোনো কোনো ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়েছে।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রভুক্ত ২১ ছাত্রের মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তারা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, বাকিরা পলাতক। প্রকাশ্যে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে অনেক শিক্ষার্থী জড়িত থাকার বিষয়টি প্রশাসন জানার পরও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। অনেকে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ঘুরছেন বলেও জানা যায়। এ হত্যার বিচার না হলে ক্যাম্পাসে এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটা যে স্বাভাবিক, তার শেষ প্রমাণ সাম্য জীবন দিয়ে আমাদের দেখিয়ে গেলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ জ্ঞানপীঠ। এখানকার ঘটনা সারাদেশের দৃষ্টান্ত। বর্তমান উপাচার্যের মাত্র ৯ মাসের মেয়াদে দুটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের পর একই প্রশাসন বহাল রাখলে তা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা প্রমাণ করবে না। বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সংগ্রাম ও লড়াকু মনোভাব বিষয়ে অবহিত। সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ইতোমধ্যে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে, তিনি তার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন বলেই আশা করি। পাশাপাশি নিরাপদ শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে আওয়াজের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে না, এমন নিশ্চয়তা কে দেবে?
দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে নিরাপদে পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় যত দ্রুত আনা সম্ভব হবে, ততই আইনের শাসন দৃঢ় হবে। জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন করেছে। অনেকেরই শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নেওয়াই সরকারের কর্তব্য।
এহ্সান মাহমুদ: সহকারী সম্পাদক,
সমকাল; কথাসাহিত্যিক
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য হত য ক ণ ড র স ম য হত য র উপ চ র য পর স থ ত পদক ষ প র ঘটন য় সরক র র ঘটন য় ব প রক শ ন র পর হত য র র পর ব গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে : গিয়াসউদ্দিন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সাংসদ ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানি শাসকদের থেকে দেশকে মুক্ত করে একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার জন্য।
আজ স্বৈরাচার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের চতুর্থ দিন। ২০২৪ সালে এমনই একদিনে আন্দোলনরত অবস্থায় ছিলাম। এক দফা আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে যারা নিহত হয়েছেন তাদের আজকে স্মরণ করি এবং তাদের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। যারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন মহান আল্লাহ পাকের নিকট এই কামনা তাদেরকে যেন আল্লাহ দয়া করেন এবং সুস্থতা দান করেন।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ী এলাকায় ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজি সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
এছাড়াও তিনি বলেন, ১৬ বছর পর্যন্ত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। চূড়ান্ত আন্দোলন হওয়া ৩৬ দিনব্যাপী পহেলা জুলাই থেকে ৫ ই আগস্ট পর্যন্ত। অনেক রক্ত অনেক ত্যাগ অনেক মানুষের আত্মাহতির বিনিময়ে আমরা ৫ ই আগস্ট স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছি। এখন জনগণের মনে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা এবং দাবি স্বৈরাচার হত্যা করেছে, ঘুম করেছে, অর্থ সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়েছে।রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের এই অপরাধের জন্য দ্রুত বিচার হোক এটাই সবার দাবি। এই দলের নেতৃত্বে আছেন এখন তাদের সুযোগ্য সন্তান আমাদের প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বলতো তারা কোনদিন অন্যায় করে নাই। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের নিয়োগ প্রাপ্ত তিনজন নির্বাচন কমিশন বলছে সেদিন ভোট হয় নাই। দিনের ভোট রাত্রে হয়েছে। আজকে তারা জেলে। স্বৈরাচার হাসিনা অনেক শক্তিধর ছিল। আমরা যারা যেদিন আন্দোলন করেছি সে সবাইকে তুচ্ছ মনে করেছে। তারা অন্যায় অত্যাচার করেছে। নিপীড়ন করেছে । মানুষ হত্যা করেছে। রাষ্ট্রীয় অর্থ লুণ্ঠন করে বিদেশেষে অর্থ। পাচার করে দিয়েছে।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ১৬ বছর অবৈধভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে রেখে কি পরিমান নির্যাতন-নিপীড় করেছে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর এবং কি পরিমান দেশের অর্থ সম্পদ চুরি করে, ডাকাতি করে লুণ্ঠন করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করে বিদেশে পাচার করেছে।
ঐ সময় দেশের বৃহত্তম রাজনীতি দল বিএনপি। সেই কারণে বিএনপির উপর দায়িত্ব পরতায় এই স্বৈরা শাসকের এসকল অন্যায়ের অপকর্ম অপরাধের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করা।
আমাদের প্রিয় নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বিদেশে থেকে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য।
তিনি পথ দেখিয়েছেন কিভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অপকর্মের বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। আরে স্বৈরাচার এত অত্যাচার করেছে যা পৃথিবীর ইতিহাসে গণহত্যার মতো অপরাধে সে জড়িত হয়েছে।
অপরদিকে লক্ষ লক্ষ বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হামলা দিয়ে জেলে নিক্ষেপ করে আমাদের নিধন করতে চেয়েছিল। আমাদের মধ্যে অনেকের বাড়িঘর ছেড়ে পলাতক জীবন যাপন করতে হয়েছে।নিতান্তই কষ্টের জীবন যাপন করতে হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দেশ এবং জনগণের জন্য কাজ করা।এই দায়িত্ববোধ থেকে শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও নিপীড়ন অত্যাচার জেল জুলুম সহ্য করে ফ্যািসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলেছি।
সারা বাংলাদেশে কত উত্তপ্ত ছিল রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল নিষ্ঠুর নির্মমভাবে স্বৈরাচার নিরীহ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছিল নির্যাতন অত্যাচার করেছিল যা আপনাদের হৃদয়ে বেসে উঠবে।
নির্মম নিষ্ঠুরতা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে যে স্বৈরাচারের পতন হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর প্রধান, বিজেপির প্রদান, পুলিশ প্রধান অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের দেখে শেখ হাসিনা বলেছিল। এই আন্দোলন থামাতে হবে। আন্দোলন যেন কার্যকরী না হয়। যত মানুষের উপর গুলি চালাতে হয় চালাতে হবে। যেভাবে হোক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হবে। এত নিষ্ঠুর, এত রক্ত পিপাসু, এত পাষণ্ড হৃদয়ের শাসক ইতিপূর্বে বাংলাদেশ আর কখনো আসে নাই। নারী-পুরুষ, শিশুর উপর গুলি চালিয়েছে, গণহত্যা করেছে। নিরপেক্ষ প্রতিবাদে উঠে এসেছে জুলাইয়ের ৩৬ দিনের আন্দোলনে ২০০০এর উপরে মানুষ শাহাদাত বরণ করেছেন ।
এছাড়াও তিনি বলেন, স্বৈরাশাসক তাদের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য আয়না ঘরের মতো জঘন্য স্থান তৈরি করেছে। সাধারণ মানুষকে যারা প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে ধরে এনে বছরকে বছর নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে নির্যাতন করেছে। কোন হিংস্র পশু এমন কাজ করতে পারে না। যা শেখ হাসিনা তার নেতৃত্ব সরকার করেছে। ঘটনা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছে মানুষ। এছাড়াও আরো কত ঘটনা রয়েছে যা নির্মম ইতিহাস। যা প্রকাশিত হয় নাই।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তিন তিনটি নির্বাচন ২০১৪-২০১৮-২০২৪ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচন করেছে।দিনের ভোট রাতে করেছে। কোন ভোটারকে ভোট প্রয়োগ করতে দেয়নি।নিজেরাই ফলাফল তৈরি করে ঘোষণা করেছে তারা বিজয়ী। আমি তুমি ডামি নির্বাচন হয়েছে। পাতানো নির্বাচন হয়েছে। তারা সেই কথা আজ স্বীকার করছে। আমি বর্তমান সরকারকে বলতে চাই এই পাতানো নির্বাচন করতে গিয়ে তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যত টাকা খরচ করেছে অবৈধভাবে সংসদ পরিচালনা করতে গিয়ে যে টাকা ব্যয় করেছে। সঠিক তদন্ত করে বিচারের মাধ্যমে তাদের থেকে সেই টাকা আদায় করতে হবে।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট এর পরে দলীয় কোনো সরকার ক্ষমতায় নেই। অন্তর্বর দিনকালীন সরকার নির্দলীয় একটি সরকার এই সরকার সবাই সমর্থন দিয়েছে আমরা বিশেষ করে সর্ব বৃহত্তম দল বিএনপির সমর্থন দিয়েছে। আমরা সমর্থন দিয়েছি এই জন্য যে আমাদের জনগণের মনে যে প্রত্যাশা জন্মেছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর। এই প্রত্যাশা যেন এ সরকার পূরণ করে।
জনগণের ভোট অধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি স্বৈরাচার সরকার এখন স্বৈরাচার পালিয়েছে তাই এদেশের জনগণ ভোট দিয়ে তাদের নির্বাচিত পছন্দের মানুষকে যেন তারা নির্বাচিত করতে পারে এবং দেশ পরিচালনা করার ক্ষমতা দিতে পারে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবচেয়ে বড় দাবি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দ্বিতীয় এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করবেন।
এটার জন্য বারবার তাগিদ দিচ্ছে সর্ব বৃহত্তর দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারেক জিয়ার সাথে লন্ডনে বৈঠকে বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের মাননীয়া প্রধান উপদেষ্টা একটি তারিখ নির্ধারণ করেছেন নির্বাচনের জন্য।
সময় ঘোষণা করেছেন এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে।কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু ষড়যন্ত্র। যাতে নির্বাচন ব্যাহত হয়। নির্বাচন এ সময়ের মধ্যে না হয়।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করছে পলাতক স্বৈরাচার ও এদেশের প্রশাসনিক কিছু লোভী ব্যক্তি। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে যদি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বুঝতে না পারে।তবে মনে রাখতে হবে এই অন্তবর্তী কালীন সরকারকে অনেক অনেক দূরনামের ভাগ নিয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
সরকারের সবচেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী বিএনপি এবং জনাব তারেক রহমান কারণ বারবার জনগণের কথা তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। যাতে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সুনামের সাথে তারা বিদায় নিতে পারে। এই জন্যই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
এর চেয়ে বড় বন্ধু যদি আর কাউকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ভাবে তাহলে মস্ত বড় ভুল করবে এটাই আমাদের ধারণা
৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ডি,এইচ,বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীনের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায় মাশুকুল ইসলাম রাজিব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম,এ,হালিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল, জি,এম,সাদরিল, এস,এম,আসলাম, এ্যাডঃ মাসুদুজ্জামান মন্টু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক কামরুল হাসান শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তুু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপু, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মোল্লা, শ্রমিক নেতা মোসলেউদ্দিন সেলিম ও আকাশ প্রধান প্রমূখ।