ঢাকা এবং পাশ্ববর্তী শিল্প এলাকা তথা গোটা বাংলাদেশের মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের স্বার্থে পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রনয়নের দাবি জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনরা।

শনিবার (১৭ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলিনায়তনে ‘পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নগরায়ন, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও তাদের পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

বাকৃবিতে ঢাবির পুনঃভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৭৩.

০৮ শতাংশ

মেয়েকে ঢাবিতে পড়ানোর স্বপ্ন পাহাড়ি মায়ের

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পল্যুশন স্টাডিস-ক্যাপস), পরিবেশ আন্দোলন ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ', সামাজিক আন্দোলন ‘নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ-নাবিক' এবং সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সিজিডি যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।

ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাবিকের সহ-সভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সল।

সংলাপের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরিবেশ বিষয়ক চিন্তা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত হওয়া, পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে নীতিগত উদ্যোগ ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গণপরিবহন, কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজ অবকাঠামো নির্মাণে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করা।

এছাড়া, যুবসমাজ ও নাগরিক সমাজকে রাজনৈতিক নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় আরো সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা এবং সব পক্ষের মধ্যে একটি টেকসই পরিবেশ ভাবনার সংলাপ তৈরি করাও ছিল এই আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য।

সংলাপে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সাবেক এমপি ও বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি আব্দুল হক, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. শেখ মঈনুল খোকন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সেক্রেটারি ফয়সাল খান।

মিশন গ্রীনের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি, পরিচালক কেফায়েত শাকিল প্রমুখ। আয়োজকের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন নাবিকের সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হাসান প্রমুখ।

ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “দূষণের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ প্রায়শ প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। একটি পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তাদের সদিচ্ছাই পারে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে।”

সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। বিল, ডোবা, পুকুরসহ সব জলাশয় দূষণমুক্ত রাখতে হবে এবং খেলার মাঠগুলো উদ্ধার করতে হবে। দেশের ২০ কোটি মানুষ যদি দুটি করেও গাছ লাগায়, তাহলে ৪০ কোটি নতুন গাছ লাগানো সম্ভব। নেতাদের নিজেদের গাছ লাগাতে হবে এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”

তিনি এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরণ, পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর ওপর জোর দেন, যাতে সমাজের সব স্তরের মানুষ তা ব্যবহারে আগ্রহী হয়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি শহর পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে, অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

ঋতুপর্ণার গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করল বাংলাদেশ

ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। মিয়ানমারের ঘরের মাঠ বলে কথা! প্রথম ১৫ মিনিট স্বাগতিক দর্শকদের গর্জনে প্রকম্পিত থাকে গ্যালারি। মাঠেও দুই দল সমানতালে লড়ে যায়। ততক্ষণ পর্যন্ত গোলমুখে কেউই সুবিধা করতে পারেনি।

শেষমেশ ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ পেয়ে যায় সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুরো থুউন্না স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দেন ঋতুপর্ণা চাকমা, বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। বিরতিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্কোরলাইন সমান করার অনেক চেষ্টা করেও পারেনি মিয়ানমার।  

ম্যাচের ১১ ও ১২ মিনিটে দুই দুবার বাংলাদেশের রক্ষণ দেয়াল ফাঁকি দিয়ে আক্রমণ শানায় মিয়ানমার। দুটি আক্রমণই পোস্ট ছেড়ে এসে রুখে দেন বাংলাদেশের গোলকিপার রুপনা চাকমা। ১৭ মিনিটে ড্রিবল করে ডি বক্সে ঢোকার পথে ফাউলের শিকার হন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাতে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ।

১৮ মিনিটে সেই ফ্রি-কিক থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে মিয়ানমারের জালে বল জড়ান ঋতুপর্ণা। প্রথম দফায় ঋতুপর্ণার শট প্রতিপক্ষের রক্ষণ লেগে ফিরে আসে। ফিরতি শটে পোস্টের কোনাকুনি দিয়ে বল জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড।

২৩ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠার পর ঋতুপর্ণার ক্রসে শট নিলেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। ৩৫ মিনিটে মিয়ানমার বল জালে জড়ালেও অফসাইডে সেই গোল কাটা পড়ে। এর এক মিনিট পর আরও একবার বাংলাদেশের ছেঁড়া রক্ষণের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকেরা। ৪২ মিনিটে ফ্রি কিক পাওয়া মিয়ানমার তিন-তিনবার বাংলাদেশের গোলমুখে শট নিয়েও লক্ষ্যে বল পৌঁছাতে পারেনি।

এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। সেই দিনই মিয়ানমার ৮–০ গোলে হারায় তুর্কমেনিস্তানকে। ‘সি’ গ্রুপে থাকা দুই দলের পয়েন্ট সমান তিন হওয়ায় আজকের ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ধারেভারে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে মিয়ানমার। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান এখন ৫৫। আর বাংলাদেশ আছে ১২৮ নম্বরে। দুই দলের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ের তফাৎটা ৭৩।  

এই ম্যাচের আগে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ খেলেছে একবার; ২০১৮ সালে অলিম্পিক বাছাইয়ে। সেই ম্যাচে মিয়ানমারের মাটিতে ৫-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ মেয়েরা। এশিয়ান বাছাইয়ে বাংলাদেশর অতীতও সুখকর ছিল না। এবারের আগে ২০২২ ও ২০১৪ আসরে পাঁচ ম্যাচে একটিও জয় পায়নি। উল্টো হজম করে ২৫ গোল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ