নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের লিজ দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনের আহ্বান
Published: 17th, May 2025 GMT
মিয়ানমারে রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে ‘মানবিক করিডর’ ও চট্টগ্রাম বন্দরে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। এ ছাড়া ইপিজেডে সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে দাবি করে এটি এবং স্টার লিংকের চুক্তি বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন জোট ও মোর্চার নেতারা।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাম জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী মোর্চার এক যৌথ সভায় এ দাবিগুলো জানানো হয়। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে এ সভা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত, চট্টগ্রাম বন্দরে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের লিজ দেওয়া, ‘ইপিজেডে সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ’ এবং স্টার লিংক চুক্তি বাতিল করতে হবে। এসব পরিকল্পনা হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায়। এগুলো দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সঙ্গে নিয়ে এসব পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ নাসু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)