কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহী ও মুছাপুর ইউনিয়নবাসীর দুঃখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বামনী নদী। তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় গত ৩৫ বছর ধরে বিরামহীন ভাঙছে এই নদী। ভাঙনে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা হয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক লোক।
নদী ভাঙন রোধে তীরে ব্লক স্থাপন, বামনী নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ ও বামনী রেগুলেটর চালু করার দাবিতে চর এলাহী ইউনিয়নবাসী গত মঙ্গলবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
চর এলাহী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.
স্থানীয় আব্দুর রশিদ (৭০) বলেন, তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে চর ল্যাংটা গ্রামে বসবাস করছেন। পাঁচ একর জমি সরকার থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। পুরোজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ছয় ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে তিনি এখন ভূমিহীন। নদী ভাঙনের কারণে তিনবার তিনি বসতবাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে।
জসিম উদ্দিন (৬০) বলেন, ‘প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা নৌকায় ভোট দিলে বামনী নদীতে ক্রসডেম বাঁধ হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাঁধ আর হয়নি।’ মো. জহির বলেন, চর এলাহী ইউনিয়ন ভেঙে সন্দ্বীপের পাশে উড়িরচর জেগেছে। ওই চরের হাজার হাজার একর জমি সন্দ্বীপ, রামগতি এলাকার মানুষের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করেছেন কাদের মির্জা ও রেজ্জাক চেয়ারম্যান।’
বামনী নদী পাড়ের বাসিন্দা মৃত মাহমুদুল হকের স্ত্রী মরিয়মের নেছা (৮০) বলেন, তার বাড়ী ৭-৮ বছর আগে নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনি নদীর পাড়ে ছোট একটি ঝুপড়িতে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। সেফালী বেগম (৫০) বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও নদীর পারে ঝুপড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকার বাঁধ নির্মাণ করলে বছর বছর আমাদের ঘর স্থানান্তর করতে হতো না।’ ব্যবসায়ী ওমর ফারুক (৪০) বলেন, ‘বামনী নদী চর এলাহীর ৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক গিলে খেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকোশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, ‘বামনী নদীর ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণে একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ের মধ্যে রেগুলেটরটি খুলে দিতে। এতে নদী ভাঙন কমে আসবে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৪০ মিনিটেই তুর্কমেনিস্তানের জালে বাংলাদেশের সাত গোল
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এশিয়া কাপ নিশ্চিত হয়েছে এক ম্যাচ আগেই। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তুর্কমেনিস্তানে বিপক্ষে নিয়মরক্ষার ম্যাচে নেমেছে বাংলাদেশ।
বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার মিয়ানমার ম্যাচের একাদশ এই ম্যাচেও অপরিবর্তিত রেখেছেন। ম্যাচের তিন মিনিটেই স্বপ্নার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর শামসুন্নাহার গোল করেন ৬ মিনিটে। শামসুন্নাহার তার দ্বিতীয় গোলটি করেন ১৩ মিনিটে। ম্যাচের ১৬ মিনিটে মনিকার গোল। ১৭ মিনিটে গোল করেন ঋতুপর্না। এতে ১৯ মিনিটে গোলরক্ষক পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন তুর্কমেনিস্তানের কোচ। ২০ মিনিটে তহুরার গোলে স্কোর হয় ৬-০।
এরপর প্রায় ২০ মিনিট গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪০ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ে দুর্দান্ত গোলে বাংলাদেশের স্কোর ৭-০ করেন ঋতুপর্না চাকমা। ম্যাচে এটি ঋতুপর্নার দ্বিতীয় গোল।
কাগজে-কলমে বাংলাদেশ এই ম্যাচে ফেভারিট। সাম্প্রতিক সময়ে জর্ডান, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমারের মতো দলকে হারিয়েছে যারা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। এতে তুর্কমেনিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারানোর প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের।
বাংলাদেশ একাদশ: রুপ্না চাকমা (গোলরক্ষক), আফিদা খন্দকার (অধিনায়ক), শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, কোহাতি কিসকু, মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমা, স্বপ্না রাণী, ঋতুপর্ণা চাকমা, শামসুন্নাহার ও তহুরা খাতুন।