Samakal:
2025-05-17@22:23:31 GMT

বিরামহীন ভাঙছে বামনী নদী

Published: 17th, May 2025 GMT

বিরামহীন ভাঙছে বামনী নদী

কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহী ও মুছাপুর ইউনিয়নবাসীর দুঃখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বামনী নদী। তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় গত ৩৫ বছর ধরে বিরামহীন ভাঙছে এই নদী। ভাঙনে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা হয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক লোক। 
নদী ভাঙন রোধে তীরে ব্লক স্থাপন, বামনী নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ ও বামনী রেগুলেটর চালু করার দাবিতে চর এলাহী ইউনিয়নবাসী গত মঙ্গলবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। 
চর এলাহী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.

হানিফ (৬৫) বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন নদী ভাঙন রোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। এখন তো তিনি পলাতক। কিন্তু নদী ভাঙনের দুর্ভোগ ঠিকই রয়ে গেছে।’ একই ইউনিয়নের চর ল্যাংটা গ্রামের বাসিন্দা মো. শরীফ (৬৮) বলেন, ‘আমি ৫২ বছর ধরে এই এলাকায় বাস করছি। একসময় আমার তিন একর ফসলি জমি ছিল। সবই নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনবার বসতবাড়ি ভাঙনের শিকার হয়েছে। আমি এখন ভূমিহীন।’
স্থানীয় আব্দুর রশিদ (৭০) বলেন, তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে চর ল্যাংটা গ্রামে বসবাস করছেন। পাঁচ একর জমি সরকার থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। পুরোজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ছয় ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে তিনি এখন ভূমিহীন। নদী ভাঙনের কারণে তিনবার তিনি বসতবাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। 
জসিম উদ্দিন (৬০) বলেন, ‘প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা নৌকায় ভোট দিলে বামনী নদীতে ক্রসডেম বাঁধ হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাঁধ আর হয়নি।’  মো. জহির বলেন, চর এলাহী ইউনিয়ন ভেঙে সন্দ্বীপের পাশে উড়িরচর জেগেছে। ওই চরের হাজার হাজার একর জমি সন্দ্বীপ, রামগতি এলাকার মানুষের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করেছেন কাদের মির্জা ও রেজ্জাক চেয়ারম্যান।’
বামনী নদী পাড়ের বাসিন্দা মৃত মাহমুদুল হকের স্ত্রী মরিয়মের নেছা (৮০) বলেন, তার বাড়ী ৭-৮ বছর আগে নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনি নদীর পাড়ে ছোট একটি ঝুপড়িতে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। সেফালী বেগম (৫০) বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও নদীর পারে ঝুপড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকার বাঁধ নির্মাণ করলে বছর বছর আমাদের ঘর স্থানান্তর করতে হতো না।’ ব্যবসায়ী ওমর ফারুক (৪০) বলেন, ‘বামনী নদী চর এলাহীর ৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক গিলে খেয়েছে। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকোশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, ‘বামনী নদীর ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণে একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ের মধ্যে রেগুলেটরটি খুলে দিতে। এতে নদী ভাঙন কমে আসবে।’
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিরামহীন ভাঙছে বামনী নদী

কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহী ও মুছাপুর ইউনিয়নবাসীর দুঃখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বামনী নদী। তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় গত ৩৫ বছর ধরে বিরামহীন ভাঙছে এই নদী। ভাঙনে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা হয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক লোক। 
নদী ভাঙন রোধে তীরে ব্লক স্থাপন, বামনী নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ ও বামনী রেগুলেটর চালু করার দাবিতে চর এলাহী ইউনিয়নবাসী গত মঙ্গলবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। 
চর এলাহী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. হানিফ (৬৫) বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন নদী ভাঙন রোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। এখন তো তিনি পলাতক। কিন্তু নদী ভাঙনের দুর্ভোগ ঠিকই রয়ে গেছে।’ একই ইউনিয়নের চর ল্যাংটা গ্রামের বাসিন্দা মো. শরীফ (৬৮) বলেন, ‘আমি ৫২ বছর ধরে এই এলাকায় বাস করছি। একসময় আমার তিন একর ফসলি জমি ছিল। সবই নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনবার বসতবাড়ি ভাঙনের শিকার হয়েছে। আমি এখন ভূমিহীন।’
স্থানীয় আব্দুর রশিদ (৭০) বলেন, তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে চর ল্যাংটা গ্রামে বসবাস করছেন। পাঁচ একর জমি সরকার থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। পুরোজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ছয় ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে তিনি এখন ভূমিহীন। নদী ভাঙনের কারণে তিনবার তিনি বসতবাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। 
জসিম উদ্দিন (৬০) বলেন, ‘প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা নৌকায় ভোট দিলে বামনী নদীতে ক্রসডেম বাঁধ হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাঁধ আর হয়নি।’  মো. জহির বলেন, চর এলাহী ইউনিয়ন ভেঙে সন্দ্বীপের পাশে উড়িরচর জেগেছে। ওই চরের হাজার হাজার একর জমি সন্দ্বীপ, রামগতি এলাকার মানুষের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করেছেন কাদের মির্জা ও রেজ্জাক চেয়ারম্যান।’
বামনী নদী পাড়ের বাসিন্দা মৃত মাহমুদুল হকের স্ত্রী মরিয়মের নেছা (৮০) বলেন, তার বাড়ী ৭-৮ বছর আগে নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনি নদীর পাড়ে ছোট একটি ঝুপড়িতে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। সেফালী বেগম (৫০) বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও নদীর পারে ঝুপড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকার বাঁধ নির্মাণ করলে বছর বছর আমাদের ঘর স্থানান্তর করতে হতো না।’ ব্যবসায়ী ওমর ফারুক (৪০) বলেন, ‘বামনী নদী চর এলাহীর ৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক গিলে খেয়েছে। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকোশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, ‘বামনী নদীর ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণে একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ের মধ্যে রেগুলেটরটি খুলে দিতে। এতে নদী ভাঙন কমে আসবে।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ