মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টি, সড়কে ভোগান্তি
Published: 5th, July 2025 GMT
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে আজ শনিবার সারা দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারা দিনই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে, সাগর থাকবে উত্তাল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। বৃষ্টিতে নগরের ভাঙা সড়কগুলো আরও বেহাল হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজ সকাল ৯টার পর থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, সাগর উত্তাল থাকায় ৩ নম্বর সতর্কসংকেত থাকবে। দিনের প্রথম জোয়ার শুরু হয়েছে গতকাল রাত ২টা ২৭ মিনিটে। ভাটা হয় আজ সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে। দ্বিতীয় ধাপে জোয়ার শুরু হবে বেলা ৩টা ৯ মিনিটে, আর ভাটা রাত ৯টা ৪ মিনিটে।
সকালের বৃষ্টিতে অফিসগামী মানুষের ভোগান্তি দেখা যায়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয় নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায়। নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় তাঁর অফিস। মিসবাহ বলেন, তাঁর বাসা রৌফাবাদের সমবায় আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কে। বৃষ্টির কারণে এলাকার মাটির সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি সড়ক এখন বেহাল। এর মধ্যে নগরের প্রধান সড়ক যেমন রয়েছে, তেমনি অলিগলির সড়কও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নগরের স্ট্র্যান্ড রোড, হাটহাজারী সড়ক, ফকির মোহাম্মদ সড়ক, কবির আহমদ সওদাগর সড়ক, আকমল আলী সড়ক, প্রাণহরি দাস সড়ক, হালিশহর আবাসিক এলাকার একাধিক সড়ক, শুলকবহরের আবদুল হামিদ সড়ক, নূর আহমদ সড়ক, জুবিলী সড়ক, আমবাগান সড়ক, শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়ক, সিডিএ অ্যাভিনিউ, কে বি আমান আলী সড়ক।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সড়ক ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে সড়কগুলো ঠিকভাবে সংস্কার করা হয় না। মাঝেমধ্যে সংস্কার করা হলেও তা জোড়াতালির সংস্কার। বৃষ্টি কিংবা ভারী গাড়ি চলাচল করলে অল্প দিনের মধ্যে সড়কগুলো ভেঙে পুরোনো চেহারায় ফেরে। এই কারণে তাঁরা যাতায়াতে যেমন কষ্ট পাচ্ছেন, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে নগরের বেশ কিছু সড়কের অবস্থা খারাপ। সুয়ারেজ প্রকল্পের জন্য ওয়াসা এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএ বিভিন্ন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। এসব কারণে কয়েকটি সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই মুহূর্তে বড় ধরনের সংস্কার করা যাচ্ছে না। আপাতত প্রাথমিকভাবে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে সংস্কার করে দেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স স ক র কর ম হ ম মদ র সড়ক দ সড়ক নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদের মোতাওয়াল্লি নিয়োগ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫০
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের মোতাওয়াল্লি নিয়োগ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের মথুরাপুর জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন– নজরুল ইসলাম, রায়হান কবীর, রহিম উদ্দিন, হাম্মদ মিয়া, ইসরাফিল, নুনু মিয়া, ফজলু মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া, নিজাম উদ্দিন, শামীম আহমদ মনা, শামসু মিয়া, সুলেয়মান মিয়া, জুয়েল আহমদ, আলতা মিয়া, রোমান মিয়া, জনি, রব্বান মিয়া প্রমুখ। আহতদের মধ্যে নজরুল ইসলাম (৫৫), রায়হান কবীর, রহিম উদ্দিন (৩৮), হাম্মদ মিয়া (২৮) ও নিজাম উদ্দিনকে (৩৬) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মথুরাপুর জামে মসজিদের নতুন মোতাওয়াল্লি নিয়োগ, পুরাতন মোতাওয়াল্লিকে অব্যাহতি ও মসজিদের অর্থের হিসাব-নিকাশ নিয়ে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মসজিদের হিসাব-নিকাশ নিয়ে এর আগে কয়েক দফা গ্রাম্য পঞ্চায়েত বসে কোনো সুরাহা হয়নি। শুক্রবার আগের মোতাওয়াল্লি আলাল মিয়া অব্যাহতি চেয়ে হিসাব-নিকাশ দিতে চান। তখন গ্রামের নজরুল ইসলাম পক্ষ ও শামীম আহমদ মনা পক্ষের লোকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে শামীম আহমদের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করে। পরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষের অনেকে আহত হন। গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নজরুল ইসলাম বলেন, জুমার নামাজের সময় মসজিদের মোতাওয়াল্লির পদত্যাগের বিষয়ে কথাকাটাকাটির সময় প্রতিপক্ষ শামীম আহমদ মনার লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে তাদের পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ অভিযোগ অস্বীকার করে শামীম আহমদ মনা বলেন, মসজিদের মোতাওয়াল্লি ৩৬ হাজার টাকার কোনো হিসাব দিতে পারেননি। তারা হিসাব চাইলে নজরুল ইসলাম পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি মসজিদ কমিটির সদস্য নন।
এ ব্যাপারে মোতাওয়াল্লি আলাল মিয়া বলেন, তিনি হিসাব-নিকাশ দিতে চাইলে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো পক্ষ এখনও অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।