রাজধানীর মিরপুর–১৩ নম্বর সেকশনের শ্যামলপল্লী বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক বসতঘর পুড়ে গেছে। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট গিয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয় বহু পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই।

ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম সমকালকে জানান, রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। এর ১৫ মিনিটের মধ্যেই মিরপুর ফায়ার স্টেশনের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে মিরপুর ফায়ার স্টেশনের আরও দুইটি ইউনিটসহ কুর্মিটোলা ও পল্লবী ফায়ার স্টেশন থেকে অতিরিক্ত চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যোগ দেয়। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় ১০টা ২৫ মিনিটে।

ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম জানান, তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক সালেহ উদ্দিন ঘটনাস্থলে বলেন, বস্তিটি অগ্নিদুর্ঘটনার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বস্তিতে যাওয়ার রাস্তাও বাঁশ দিয়ে তৈরি। সেখানেও আগুন জ্বলছিল। ফলে রাস্তার আগুন নেভানোর পর বস্তিতে যেতে হয়েছে। ঘরগুলো বাঁশ–কাঠের মতো দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি এবং একটি ঘরের সঙ্গে আরেকটি লাগোয়া হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। কতগুলো ঘর পুড়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে সময় লাগবে। তবে সংখ্যাটি একশ’র মতো বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন বস ত আগ ন ন ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হবে না মনার, স্নাতকে ভর্তি নিয়েও দুশ্চিন্তা কেটেছে

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কলেজছাত্রী মনা বেগমকে (১৮) আর হামাগুড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না। প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর রাজধানীর দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সহযোগিতায় তাঁকে একটি তিন চাকার বৈদ্যুতিক সাইকেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহায়তাও করা হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকেলে শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ও কয়েকজন শিক্ষক এলাপুর ফাঁড়ি চা-বাগানে মনার বাড়িতে গিয়ে বিশেষ যানটি তুলে দিয়েছেন।

মনাকে সহায়তাকারী দুই শিক্ষক হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এস এস এম সাদরুল হুদা ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আফসানা আক্তার।

আরও পড়ুনহামাগুড়ি দিয়ে কলেজে যেতেন মনা, এখন অর্থাভাবে স্নাতকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা২৮ অক্টোবর ২০২৫

জহির উদ্দিন বলেন, কীভাবে সাইকেলটি চালাতে হবে, চার্জ দিতে হবে—এসব মনাকে শিখিয়েছেন মিস্ত্রি। কিছুদিন বাড়িতে চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবন্ধিতাকে হার মানিয়ে এত দূর আসতে পেরেছে ওই ছাত্রী। সাইকেল চালানোও তাঁর পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।

জহির উদ্দিন আরও বলেন, প্রথম আলোয় সংবাদ পড়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মনার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর (মন) স্নাতকে ভর্তিসহ লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহনের কথা জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া সম্প্রতি ঢাকার এক ব্যবসায়ীও মনার পাশে দাঁড়াতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। এসব সহায়তা পেয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন সবাইকে কৃতজ্ঞতা। আমি স্নাতকে ভর্তি হব, লেখাপড়া বন্ধ করব না।’

মনা এলাপুর বাগানের বাসিন্দা দিন মজুর হারিছ মিয়া ও আমিনা বেগম দম্পতির মেয়ে। মনা এবার স্থানীয় শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–২ দশমিক ৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। জন্মের পর থেকে বাঁ হাত, বাঁ পা, কোমরে জোর না পাওয়ায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন মনা বেগম। ডান হাত আর ডান পায়ের শক্তিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সময় হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা অতিক্রম করে বাসে উঠতেন। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি এবার শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে মনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ