শাহজাদপুরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে কৃষক নিহত, আহত ১৫
Published: 20th, May 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নজরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের বাগদোনাল গ্রামে এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন।
নিহত কৃষক নজরুল ইসলাম বাগদোনাল গ্রামের মৃত সিরাজুল প্রামাণিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে বাগদোনাল গ্রামের লোকজন মাঠে ধান কাটতে গেলে একই ইউনিয়নের কৈলাসচর গ্রামের লোকজন পূর্ব শত্রুতার জেরে বাগদোনাল গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। হামলায় বাগদোনাল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম মারা যান।
শাহজাদপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তারা লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। ওসি আসলাম আলী বলেন, ‘কৈলাসচর ও বাগদোনাল গ্রামের গ্রামবাসীর মধ্যে ফুটবল খেলা ও ধান কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। ওই দ্বন্দ্বের জেরে আজ সংঘর্ষে একজন নিহত হন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।’
এদিকে, দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি বলে জানান ওসি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ স ঘর ষ ন হত স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে স্ত্রী ও বাবা-মাকে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ি, ফিরে দেখেন ঘর থেকে কোটি টাকার স্বর্ণালংকার চুরি
তরুণ ব্যবসায়ী আসিফ তাঁর স্ত্রী ও বাবা-মাকে নিয়ে রাজধানীর ডেমরার মুসলিমনগরে নিজেদের ছয়তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় বসবাস করেন। ঈদুল আজহার দুই দিন পর (৯ জুন) আসিফ তাঁর স্ত্রী, বাবা-মাকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে যান। এক দিন শ্বশুরবাড়িতে থেকে ১০ জুন রাত আটটায় মা খালেদা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে আসিফ ডেমরার নিজের বাসায়। আসিফ দেখতে পান শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে দরজার তালা যেমন লাগিয়ে গিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই রয়েছে। কিন্তু ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান, ড্রয়িং রুমের মেঝেতে এলোমেলোভাবে জামাকাপড় পড়ে আছে।
আসিফের মা দেখতে পান, তাঁর কক্ষের আলমারি ভাঙা। তখন আলমারির বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকার খুঁজতে থাকেন তিনি। কোথাও স্বর্ণালংকারের ব্যাগ খুঁজে না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন। আসিফ তখন মাকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন। পরে আসিফ নিজের শয়নকক্ষে গিয়ে দেখতে পান, বাসার কাপড়চোপড় এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। আলমারির দরজার তালা ভাঙা। তখন আলমারিতে রাখা স্ত্রীর স্বর্ণালংকারের ব্যাগ দেখতে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। আসিফ তখন বাসার অন্য আরেকটি আলমারির দিকে খেয়াল করেন। দেখতে পান সেই আলমারির তালাও ভাঙা। আলমারির বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকারের সেই ব্যাগও সেখানে নেই। স্ত্রী, মা, নানি, মামির সব স্বর্ণালংকার চুরি হওয়ায় আসিফ তখন আরও হতাশ হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে আসিফ বাসার তৃতীয় তলার আরেকটি শয়নকক্ষের জানালার একটি গ্রিল কাটা অবস্থায় দেখতে পান। আসিফের মা সেখানে এসে তাঁকে বলেন, ‘আসিফ, আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে…।’
আসিফ তখন মুন্সিগঞ্জে অবস্থান করা তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে বাসায় চোর ঢোকার তথ্য জানান। আসিফের ফোন পেয়ে তাঁর স্ত্রী ওই রাতেই মুন্সিগঞ্জ থেকে ডেমরার বাসায় চলে আসেন। আলমারিতে বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা স্বর্ণালংকারের ব্যাগটি দেখতে না পেয়ে কাঁদতে থাকেন তিনি। আসিফের স্ত্রীর কান্না দেখে তাঁর মা খালেদাও তখন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। পুত্রবধূকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন তিনি।
এ বিষয়ে আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের সময় আমার শ্বশুরবাড়ি যাওয়াটাই কাল হয়েছে। আমার ভাবনাতেই ছিল না, আমরা বাসায় না থাকলে বাসার গ্রিল কেটে চোর ঢুকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ২৮ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে। আর মায়ের ২১ ভরি। আমার নানির সাড়ে চার ভরি আর মামির সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে। মোট আমাদের বাসা থেকে এক কোটি টাকা (৬০ ভরি স্বর্ণ) মূল্যের স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে।’
আসিফদের শয়নকক্ষের যে জানালার গ্রিল কাটা, সেখানে আর কোনো ভবন নেই। বেশ দূরে রয়েছে একটা ভবন। আসিফ বলেন, ‘আমাদের বাসার প্রবেশপথে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) রয়েছে। কিন্তু সেটি যে নষ্ট ছিল, সেটা আমাদের জানা ছিল না। আর বাসার পেছনে থাকা তৃতীয় তলার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিল কেটে চোর ঢুকেছে। ওই পাশে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই।’
চোর শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ
ঘরে চুরি হওয়ার তিন দিনের মাথায় গত ১৩ জুন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ডেমরা থানায় মামলা করেন আসিফ। এরপর এক মাস হতে চললেও কোটি টাকার স্বর্ণ চুরির সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এতে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন আসিফ।
আক্ষেপ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চুরির এত দিন পার হয়ে গেল, পুলিশ কাউকে ধরতে পারল না। চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার না হওয়ায় আমার স্ত্রী ও মায়ের মন অনেক খারাপ। প্রায় সময় মা আমার কান্নাকাটি করেন। স্ত্রীর মনেও অনেক ক্ষোভ জন্মেছে, কেন পুলিশ চোর ধরতে পারছে না?’
আসিফ জানান, ১০ জুন রাতে বাসায় ঢুকে যখন তাঁরা বুঝতে পারেন স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে, তখন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। ডেমরা থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা আসেন রাত ১০টার পর। তিনতলার যে কক্ষের জানালার গ্রিল কাটা হয়েছে, সেটির ছবি তোলেন তাঁরা। পরে চুরি যাওয়া ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার আর নগদ ৫ লাখ টাকা চুরি হওয়ার তথ্য লিখে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
এ মামলা তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাসা থেকে ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বাসার কাছের একটি সিসিটিভির ফুটেজ জোগাড় করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তাতে একজন যুবকের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁকে শনাক্ত করা এবং চোর খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।