আনচেলত্তির স্বপ্নদল: ঘোষণার আগেই ১২ তারকার নাম ফাঁস
Published: 20th, May 2025 GMT
বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি কোচ কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। যদিও আনুষ্ঠানিক পরিচয় হবে ২৬ মে। তবে ইতোমধ্যেই পর্দার আড়ালে তার কাজ শুরু হয়ে গেছে পুরোদমে। আর সেই প্রস্তুতির এক ঝলক যেন আগেভাগেই ফাঁস হয়ে গেল সংবাদ মাধ্যমে।
ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ইতোমধ্যে ২৮ জনের একটি প্রাথমিক স্কোয়াড জমা দিয়েছে ফিফার কাছে। যেখানে আনচেলত্তির পছন্দের রূপরেখা ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। ব্রাজিলীয় সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন ১২ ফুটবলারের নাম। যাদের আনচেলত্তি নাকি ব্যক্তিগতভাবে খেয়াল রাখছেন এবং অনেকের নাম মূল দলে থাকার প্রবল সম্ভাবনা।
দক্ষিণ আমেরিকা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জুনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে ব্রাজিলের সামনে। ৬ জুন ইকুয়েডরের বিপক্ষে এবং ১১ জুন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। এই ম্যাচগুলোর জন্য আনচেলত্তি ঘোষণা করবেন চূড়ান্ত ২৩ সদস্যের দল। তবে তার আগেই আলোচনায় উঠে এসেছে কিছু পরিচিত ও অপ্রত্যাশিত মুখ।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলের ফুটবল প্রধানকে অপসারণ, পুরো বোর্ড বরখাস্ত
ব্রাজিলের নতুন কোচ আনচেলত্তি, দায়িত্ব নিচ্ছেন চলতি মাসেই
আলোচিত ১২ জনের তালিকায় সবচেয়ে চমক জাগানো নাম সম্ভবত অস্কার এবং কুতিনহো। ২০১৪ ও ২০১৮ বিশ্বকাপে দ্যুতি ছড়ানো এই মিডফিল্ডাররা অনেকদিন পর ব্রাজিল দলে ফেরার সম্ভাবনায় উঠে এসেছেন আলোচনায়। বিশেষ করে অস্কার বর্তমানে চীনের লিগে খেলা হলেও আনচেলত্তির রাডারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফ্লামেঙ্গো থেকে সম্ভাব্য ছয় ফুটবলার আনচেলত্তির নজরে রয়েছেন। তারা হলেন- দানিলো, ওয়েলসি, লিও অর্টিজ, অ্যালেক্স সান্দ্রো, জেরসন এবং পেদ্রো। তারা প্রত্যেকে ঘরোয়া লিগে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।
ফায়েনর্ডের ইগার পায়েক্সো, যিনি চলতি মৌসুমে ডাচ লিগে ১৮ গোল ও ১৪ অ্যাসিস্ট করেছেন, তাকেও আনচেলত্তি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। একই সঙ্গে লিলির দীর্ঘদেহি ডিফেন্ডার অ্যালেক্সহান্দ্রো রিবেইরো নিয়েও আনচেলত্তি ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে গ্লোবোর সূত্র জানিয়েছে।
নেইমার জুনিয়রের ফিটনেস নিয়ে যদিও আলোচনা আছে। তবুও তার নাম রয়েছে আলোচিত তালিকায়। এছাড়া ব্রুনো গিমারায়েশ ও করিন্থিয়ানে খেলা গোলরক্ষক হুগো সৌজাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আনচেলত্তির আগমন শুধু খেলোয়াড় বাছাইয়ে নয়, ব্রাজিলীয় ফুটবলের পুরো কাঠামোয় নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করতে যাচ্ছে। একদিকে অভিজ্ঞদের প্রতি আস্থা, অন্যদিকে ঘরোয়া ও ইউরোপিয়ান লিগে খেলানো তরুণদের ওপর নজর—এই দ্বৈত কৌশলে তিনি গড়ে তুলতে চাইছেন বিশ্বজয়ের স্বপ্নদল।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।