ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার নোবেল, যা বললেন প্রাক্তন স্ত্রী
Published: 20th, May 2025 GMT
বিতর্কিত কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেমরা থানা। অভিযোগ রয়েছে, এক নারীকে দীর্ঘ সাত মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও মারধর করেছেন।
নোবেলকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। এ নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। নোবেলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসে সালসাবিল লেখেন, “আমি বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছি। আমি কারো বিরুদ্ধে কোনো প্রকারের মামলা দায়ের করিনি।”
নোবেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের একাংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সালসাবিল। এ বিষয়ে তিনি লেখেন, “নোবেলের সঙ্গে আমার অনেক দিন দেখা হয় না ঠিক, কিন্তু ফোনে কথা হয়। আর অভিযোগ শুনলাম, ‘সাত মাস ধরে নোবেল আটকে রেখে ধর্ষণ’— আসলে ওর সঙ্গে সাত মাস কারো পক্ষে থাকা সম্ভব এটা আমার বিশ্বাস হয় না। কারণ ও নেশাগ্রস্ত, তাহলে সে কীভাবে কাউকে আটকে রাখবে?”
আরো পড়ুন:
পরিস্থিতি-ব্যবস্থা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন: বাঁধন
ওয়াইফাই সংযোগ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে কুবি শিক্ষার্থীরা
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী একজন কলেজছাত্রী। গত বছরের নভেম্বরে তাকে বাসায় নিয়ে আসেন নোবেল। এরপর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং তাকে বাসায় আটকে রাখেন।
খানিকটা ব্যাখ্যা করে ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, “বিয়ের কোনো বৈধতা ছাড়াই সাত মাস ওই নারীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তিনি এসব ঘটনার ভিডিওও ধারণ করেছিলেন।”
ভুক্তভোগী নারীর উপর নির্যাতনের একটি ভিডিও কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ওই নারী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে ডেমরা থানায় একটি মামলা রুজু হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর নোবেল আত্মগোপনে চলে যান এবং সীমান্ত পার হয়ে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করেন। এজন্য তিনি একটি মাইক্রোবাসও ভাড়া করেছিলেন। তবে সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।