সেন্ট্রাল রোডে নৃশংসতা, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব নাকি অন্য কিছু
Published: 20th, May 2025 GMT
রাজধানীর নিউ মার্কেট থানাধীন সেন্ট্রাল রোডের ভূতের গলিতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিষয়টিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।
গুরুতর জখম ওই যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম মুন্না (৩২)। তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) রাতে নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি অপরাধীদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’’
তবে ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। ভিডিওতে দেখা যায় রবিবার (১৮ মে) রাত ১১ টা ৩২ মিনিটে মুন্নাকে সাদা প্যান্ট ও নেভি ব্লু ফুলহাতা জামা পরা এক যুবক প্রথমে শূন্যে তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলছে। এরপর তাকে লাথিমারাসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। কিছু সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দুজন তরুণকে আসতে দেখা যায়। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা তরুণটি নেমে এসে প্রথম তরুণের সঙ্গে যোগ দেয়। লাথির সঙ্গে চলতে থাকে এলোপাথাড়ি ধারালো অস্ত্রের কোপ। মুন্না মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও চলতে থাকে দুর্বৃত্তের তাণ্ডব। এবার নৃশংসতায় যোগ দেয় মোটরসাইকেলের চালক। কালো পাঞ্জাবি ও হেলমেট পরা ওই ব্যক্তি নিজের কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুন্নাকে পুনরায় কুপিয়ে বাকিদের মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এখানেই নৃশংসতার শেষ নয়। যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল মুন্নার শরীরের ওপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আশপাশের লোকজন মুন্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয় মুন্না। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন (পঙ্গু) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এবং ঘটনা পরিকল্পিত। এলাকার সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব নিয়ে ঘটনা কিনা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে ঘটনার পরপরই পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। রাতেই নিউ মার্কেট থানা পুলিশ অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করে। ইতোমধ্যে আসামিদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা/এম/আর
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। প্রায়ই রাতে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে ডাকাতের কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এসকল ডাকাত সদস্যদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত এক মাসে কালিয়াকৈর থানা ও মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি অভিযান চালিয়ে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে ছয়টি পিকআপও জব্দ করেছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সুমন হোসেন ও সোহাগ নামে দুজন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি। এসময় তাদের দখলে থাকা একটি পিকআপ জব্দ করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের ডাকাতি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের তিন গ্রেপ্তার করা হয়। উপজেলার মৌচাক ফকিরবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে কালিয়াকৈর-মাওনা আঞ্চলিক সড়ক ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে তাদের উৎপাত বেশি।
সড়কে পুলিশ টহল থাকলেও ডাকাত সদস্যরা বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে এরপর সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে। এছাড়াও মাওনা কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি করে তারা। পুলিশ এরপর থেকেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে।
মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আব্দুস সেলিম বলেন, “ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। তবে আমরা ডাকাতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। গত ১ মাসে আমাদের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ১৫ জন ডাকাত সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পাঁচটি পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, “রাতে আমাদের টহল পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গত এক মাসে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন তথ্য মিলেছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস