জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নেই। এটি এখন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে এই কর্মসূচি করে এনসিপি।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘ইসি এখন আর কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এক্সিস্ট করে না। এটি বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এটা বিএনপির একটা মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতা দিয়েছে জনগণ, এই সরকার জনগণের রক্তের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রক্তের ম্যান্ডেটে বসে আপনারা বিএনপির পক্ষে কাজ করতে পারেন না। আপনারা বিএনপির কাছে নগর ভবন ছেড়ে দিতে পারেন না। আপনারা বিএনপির কাছে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ইলেকশন কমিশন ছেড়ে দিতে পারেন না।’

নির্বাচন কমিশনে নিজেদের লোক বসিয়ে বিএনপি নিজেদের ৩১ দফার কথা ভুলে গেছে বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘৩১ দফা হলো জনগণকে বোকা বানানোর কিছু কাগজপত্র।’

ইসিসহ সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিএনপি দখল করেছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। জনগণের করের টাকায় চলা এসব প্রতিষ্ঠানকে দখলমুক্ত করতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি বলেন, ‘যদি আপনারা না করতে পারেন, তাহলে উপদেষ্টা প্যানেলে যারা বিএনপির রয়েছে, তাদের আপনারা দ্রুত গতিতে বের করে দিন।’

‘বিএনপিপন্থী’ উপদেষ্টারা এসি রুমে বসে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘কেউ করছে বিচারালয়ে, কেউ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে, আর কেউ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।’

বিএনপি লাশের রাজনীতি শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদের বক্তব্য গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। তিনি ভারতের প্রেসক্রিপশনে দেশে মুজিববাদী সংবিধান রাখার জন্য কাজ করছেন।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু সংবিধান নিষিদ্ধ হয়নি। সংবিধান নিষিদ্ধের জন্য তারা সংবিধান পোড়ানো কর্মসূচি করবেন। বাংলাদেশে কোনো মুজিবীয় সংবিধান থাকবে না।

ইসিকে পুনর্গঠন করার পর সংস্থাটির সক্ষমতা প্রমাণে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এনসিপির এই মুখ্য সমন্বয়কারী।

আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে আজকের মতো কর্মসূচি শেষ হয়। এনসিপির নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাবি আদায়ে তাঁদের কর্মসূচি চলবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ন ন স র দ দ ন প ট য় র ব এনপ র আপন র সরক র এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’

শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু

নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’

তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’

বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’

ঢাকা/রায়হান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • জনগণের সঙ্গে এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল