রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ এর অন্তর্ভুক্ত একটি জাহাজ সুইডেন ও পোল্যান্ডকে সংযুক্তকারী বিদ্যুৎ ক্যাবলের কাছে সন্দেহজনক গতিবিধি চালিয়েছে। এ সময় পোলিশ সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে জাহাজটি পিছু হটে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক গত বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর বাল্টিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ক্যাবল, টেলিকম লাইন ও গ্যাস পাইপলাইনে একাধিক নাশকতার ঘটনায় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এ অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

টাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা শ্যাডো ফ্লিটের একটি রুশ জাহাজ পোল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যে সংযোগকারী বিদ্যুৎ ক্যাবলের কাছে সন্দেহজনক কার্যকলাপ চালায়। আমাদের সেনাবাহিনীর কার্যকর হস্তক্ষেপে জাহাজটি একটি রুশ বন্দরে ফিরে যায়।’

‘শ্যাডো ফ্লিট’ বলতে রাশিয়ার এমন সব জাহাজকে বোঝানো হয় যেগুলো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তেল, অস্ত্র ও খাদ্যপণ্য পরিবহন করে। ইউক্রেনে হামলার পর এসব জাহাজ আন্তর্জাতিক নজরদারির বাইরে থেকে রাশিয়ার রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এই ঘটনার পর পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়াদিস্লাভ কোসিনিয়াক-কামিশ সাংবাদিকদের বলেন, পোল্যান্ডের একটি টহল বিমান জাহাজটিকে তাড়িয়ে দেয় এবং নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ওআরপি হেওয়েলিউজকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।

পোল্যান্ড নৌবাহিনীর ভাইস-অ্যাডমিরাল ক্রিস্তফ ইয়াওর্স্কি জানান, সন্দেহজনক ওই ট্যাংকারটির নাম ‘সান’ এবং এটা অ্যান্টিগুয়ার পতাকাবাহী ছিল।

ওয়ারশতে অবস্থিত রুশ দূতাবাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। অতীতে মস্কো এমনসব নাশকতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পশ্চিমা দেশগুলো সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করতে এসব অভিযোগ তুলছে বলে জানায়।
উল্লেখ্য, সুইডেনের কারলশাম ও পোল্যান্ডের উত্তরের উস্তকা শহরের মধ্যে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ লেনদেন সহজ করে।

পোল্যান্ডের বিদ্যুৎ গ্রিড অপারেটর পিএসই জানিয়েছে, সুইডেনের সঙ্গে সংযুক্ত বিদ্যুৎ ক্যাবল এখনো সচল আছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দুপুর ১১টা ৩০ মিনিটে ওই লাইনের মাধ্যমে সুইডেনে ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল।

পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোসিনিয়াক-কামিশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ঘটনা প্রমাণ করে আমরা কতটা বিপজ্জনক সময়ের মধ্যে বাস করছি আর বাল্টিক সাগরে পরিস্থিতি কতটা জটিল।’ তিনি আরও বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পর বাল্টিক সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এটি এমন এক অঞ্চল, যেখানে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাজনিত ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়া ও পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

ঘটনা সম্পর্কে সুইডেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পল জনসন বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ তিনি জানান, সুইডেন ঘটনাস্থলের আশেপাশে যেকোনো পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ ক য বল মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বাল্টিক সাগরে রুশ জাহাজের সন্দেহজনক তৎপরতা, পাল্টা পদক্ষেপ পোল্যান্ডের

রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ এর অন্তর্ভুক্ত একটি জাহাজ সুইডেন ও পোল্যান্ডকে সংযুক্তকারী বিদ্যুৎ ক্যাবলের কাছে সন্দেহজনক গতিবিধি চালিয়েছে। এ সময় পোলিশ সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে জাহাজটি পিছু হটে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক গত বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর বাল্টিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ক্যাবল, টেলিকম লাইন ও গ্যাস পাইপলাইনে একাধিক নাশকতার ঘটনায় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এ অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

টাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা শ্যাডো ফ্লিটের একটি রুশ জাহাজ পোল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যে সংযোগকারী বিদ্যুৎ ক্যাবলের কাছে সন্দেহজনক কার্যকলাপ চালায়। আমাদের সেনাবাহিনীর কার্যকর হস্তক্ষেপে জাহাজটি একটি রুশ বন্দরে ফিরে যায়।’

‘শ্যাডো ফ্লিট’ বলতে রাশিয়ার এমন সব জাহাজকে বোঝানো হয় যেগুলো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তেল, অস্ত্র ও খাদ্যপণ্য পরিবহন করে। ইউক্রেনে হামলার পর এসব জাহাজ আন্তর্জাতিক নজরদারির বাইরে থেকে রাশিয়ার রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এই ঘটনার পর পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়াদিস্লাভ কোসিনিয়াক-কামিশ সাংবাদিকদের বলেন, পোল্যান্ডের একটি টহল বিমান জাহাজটিকে তাড়িয়ে দেয় এবং নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ওআরপি হেওয়েলিউজকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।

পোল্যান্ড নৌবাহিনীর ভাইস-অ্যাডমিরাল ক্রিস্তফ ইয়াওর্স্কি জানান, সন্দেহজনক ওই ট্যাংকারটির নাম ‘সান’ এবং এটা অ্যান্টিগুয়ার পতাকাবাহী ছিল।

ওয়ারশতে অবস্থিত রুশ দূতাবাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। অতীতে মস্কো এমনসব নাশকতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পশ্চিমা দেশগুলো সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করতে এসব অভিযোগ তুলছে বলে জানায়।
উল্লেখ্য, সুইডেনের কারলশাম ও পোল্যান্ডের উত্তরের উস্তকা শহরের মধ্যে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ লেনদেন সহজ করে।

পোল্যান্ডের বিদ্যুৎ গ্রিড অপারেটর পিএসই জানিয়েছে, সুইডেনের সঙ্গে সংযুক্ত বিদ্যুৎ ক্যাবল এখনো সচল আছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দুপুর ১১টা ৩০ মিনিটে ওই লাইনের মাধ্যমে সুইডেনে ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল।

পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোসিনিয়াক-কামিশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ঘটনা প্রমাণ করে আমরা কতটা বিপজ্জনক সময়ের মধ্যে বাস করছি আর বাল্টিক সাগরে পরিস্থিতি কতটা জটিল।’ তিনি আরও বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পর বাল্টিক সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এটি এমন এক অঞ্চল, যেখানে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাজনিত ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়া ও পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

ঘটনা সম্পর্কে সুইডেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পল জনসন বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ তিনি জানান, সুইডেন ঘটনাস্থলের আশেপাশে যেকোনো পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ