কংফুর প্যাচে মিলল ৪৩ কোটি বছর পুরোনো মাছের পূর্ণাঙ্গ ফসিল
Published: 5th, June 2025 GMT
২০১৯ সাল। চীনের চংকিং প্রদেশে তিন জীবাশ্মবিদ কাজের বিরতিতে একে অপরের সঙ্গে মজা করছিলেন। হঠাৎ করে একজন কুংফুর জটিল প্যাঁচ মেরে আরেকজনকে একটি পাথরের ঢিবির উপর আছড়ে ফেললেন। যাকে আছড়ে ফেলা হয়েছিল, তিনি ব্যাথা পেলেন ঠিক। কিন্তু তার শরীরের চাপে নমনীয় সেই পাথর ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল এমন এক মূল্যবান জিনিস, যা পরে তুমুল আলোড়ন তুলেছে জীব বিজ্ঞানী মহলে। ওই তিন জীবাশ্মবিদ মনের অজান্তেই আসলে আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে পুরোনো মাছের ফসিল, যা ৪৩ কোটি বছর ধরে ফসিল আকারে সংরক্ষিত।
ডিসকভারি নিউজের এক খবরে বলা হয়, ওই তিন জীবাশ্মবিদ যে মাছের ফসিলটি আবিষ্কার করেছিলেন সেটি ছিলো একটি প্রাগৈতিহাসিক জ্য ফিশ বা শক্ত চোয়ালযুক্ত মাছ।
এর আগেও চীনের চংকিং প্রদেশে নানা প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর ফসিল আবিষ্কার হয়েছে। নিকটবর্তী গুইঝো প্রদেশেও পাওয়া গেছে অনেক প্রাণীর ফসিল। ফলে নতুন জ্য ফিশটির ফসিল আবিষ্কার বিজ্ঞান মহলে আলোড়ন তুলেছে। কারণ কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে দেখা গেছে, এই ফসিলটি পূর্বে পাওয়া যে কোনো মাছের জীবাশ্মের চেয়ে অন্তত ১ কোটি ১০ লাখ বছরেরও বেশি পুরোনো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ফসিলের আবিষ্কারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে ধারণা করা যাচ্ছে যে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীদের চোয়াল প্রায় ৪৫ কোটি বছর আগেই বিবর্তিত হয়েছিল। যদিও এই আবিষ্কারের আগে হাঙরের একটি নতুন প্রজাতির ফসিল পাওয়া গিয়েছিল যা ৪৩ কোটি বছর বয়সী, যার মধ্যে চোয়াল থাকার লক্ষণ ছিলো স্পষ্ট। তবে এত পুরোনো জ্য ফিশের ফসিল এবারই প্রথম মিলল।
সম্প্রতি এই আবিষ্কারের ওপর চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশকারী দলের নেতৃত্ব দেওয়া জীবাশ্মবিদ ঝু মিন বলেন, এটা আসলে স্বপ্নের মতো। আজ আমরা সম্পূর্ণ প্রাথমিক সিলুরিয়ান যুগের একটি মাছের দিকে তাকিয়ে আছি, যা পূর্ববর্তী প্রাচীনতম আবিষ্কারগুলির চেয়ে ১ কোটি ১০ লাখ বছরেরও পুরোনো। এটা আমার কাছে সবচেয়ে উত্তেজনাকর এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং জীবাশ্ম; যা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ব শ মব দ
এছাড়াও পড়ুন:
৯০ বছর বয়সী এই নারীর বিধবা ভাতার টাকা খোয়া গেল কীভাবে
মুঠাফোনে বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছিলেন ৯০ বছর বয়সী আমেনা বেগম। আশা ছিল ঈদে নিজের জন্য নতুন কাপড় কিনবেন, নাতি-নাতনিদেরও কিছু দেবেন। ভালো কিছু খাবেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন, যে মুঠোফোন নম্বরে টাকা এসেছে, সেখানে টাকা নেই, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির কাছে এ কথা শুনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তাঁর ঈদটাই শেষ হয়ে গেল।
আমেনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল জলিলের স্ত্রী।
বয়স্ক এই নারী বলেন, ছোটবেলায় তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়ে। স্বামী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ছেলেরাও এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি ছেলেদের কাছে থাকেন। কিন্তু তাঁরাও হতদরিদ্র, নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়।
আমেনা বেগম বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছেন। ২৯ মে তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরে ভাতার এক বছরের ৬ হাজার ৬০০ টাকা একসঙ্গে আসে। কিন্তু দোকানে গিয়ে শোনেন টাকা অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির ভাষ্য, ওই বৃদ্ধার মুঠোফোন থেকে একটি মুঠোফোন নম্বরে ৩৯ টাকা রিচার্জ করা হয়। পরে ওই নম্বরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা ‘সেন্ড মানি’ করা হয়।
মুঠোফোনটি ব্যবহার করেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবদুস সাত্তার। তিনি বুঝতে পারছেন না কীভাবে তাঁর ফোন থেকে ‘সেন্ড মানি’ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। মা ভাতার টাকা পেলে নিজের প্রয়োজনমতো খরচ করতেন। এবারও টাকা পেয়ে অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। কীভাবে টাকাটা খোয়া গেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি।
যে নম্বরে ওই বৃদ্ধার টাকা গেছে, সেই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, ওই নারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।