কেরানীগঞ্জে একটি পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় বিস্ফোরণে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। রবিবার (২২ জুন) ভোরের দিকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের খেজুরবাগ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, ডোবার ওপর অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ করায় ডোবায় থাকা ময়লা আবর্জনায় সৃষ্ট বায়োগ্যাসের চাপ অথবা ভবনের পাশে থাকা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। 

দগ্ধরা হলেন- ফারুক হোসেন (৪০), তার স্ত্রী শিউলি (৩০) এবং তাদের ৮ বছর বয়সী সন্তান আল সামির।

আরো পড়ুন:

আশুলিয়ায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৬, ধসে পড়েছে দেয়াল

ঢাবিতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণ

দগ্ধ ফারুক বলেন, “খেজুরবাগ এলাকার পাকিজা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকি। রাতে পরিবারের সবাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আজ ভোরের দিকে বিস্ফোরণের আওয়াজে ঘুম থেকে উঠে দেখি, আমার স্ত্রী শিউলীর হাত ও আমার ছেলে সামিরের শরীর ঝলসে গেছে। আমার মুখের বাম পাশও ঝলসে যায়। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আমরা বাসায় ফিরি।”

তিনি আরো বলেন, “মাস খানেক ধরে ঘরের ফ্লোর অতিরিক্ত গরম হয়ে যাচ্ছিল। এই বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানানো হয়। তিনি তা মেরামত করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।”

ভবনের মালিক সহিদ বলেন, “ফ্লোর অতিরিক্ত গরমের বিষয়ে জানালে আমি তা ঠিক করার জন্য দেশে আসি। আমি পাশের রুমেই ছিলাম। প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। এসে দেখি ভবনের নিচতলার দেয়াল বিস্ফোরণে ভেঙে গেছে।” 

ভবনটি নির্মাণে রাজউক অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই ভবনটি ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিয়ে করেছেন। ভবনে মোট ১০টি পরিবার বসবাস করছে বলেও জানান তিনি।

পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু মুহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার বলেন, “বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেছি। বিস্ফোরণে ভবনটির নিচতলার দেয়াল ধসে পড়ে।”

তিনি বলেন, ডোবার ওপর অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ করায় ডোবায় থাকা ময়লা আবর্জনায় সৃষ্ট বায়োগ্যাসের চাপ অথবা ভবনের পাশে থাকা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এই বিষয়ে তদন্ত চলমান।”

ঢাকা/শিপন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন চতল ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসক-স্থাপনা কিছুই নেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে

সখীপুর উপজেলায় ছয়টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এর মধ্যে দুটিতে নেই কোনো স্থাপনা। চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিনটিতেই নেই চিকিৎসা কর্মকর্তা। স্থাপনাবিহীন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুই চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রেষণে রয়েছেন অন্য কর্মস্থলে। চলমান উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সেবা দিচ্ছেন উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা, প্রসূতিবিদ ও ফার্মাসিস্ট।
বড়চওনা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র কার্যালয়ের বেহাল অবস্থা। দেখলে মনে হবে পরিত্যক্ত। তবুও উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা (সেকমো) ও ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৮০ শতাংশ জমি‌ই দখল হয়ে গেছে। বাকি ২০ শতাংশেও নেই সীমানা প্রাচীর। আবাসিক ভবনটিও বসবাস অযোগ্য। চিকিৎসা কর্মকর্তা নেই ৮-১০ বছর। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বড়চওনা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরে এমন তথ্য-চিত্র পাওয়া গেছে।
বড়চওনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে কাদা ও ময়লার স্তূপ জমে আছে। হাটের আবর্জনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির আশপাশেই ফেলা হয়। ফলে স্থাপনার চারপাশেই দুর্গন্ধ। ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ। দেয়াল ফেটে গেছে। টিনের চাল মরিচা ধরে ফুটো হয়ে গেছে। দরজা-জানালা ভাঙা। বৃষ্টি নামলেই ঘরের ভেতরে পানি জমে। ফলে কক্ষের ভেতর সংরক্ষণে রাখা কাগজ ও আসবাব ভিজে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারটি সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী। আবাসিক ভবনটিও এক যুগ ধরে বসবাসের অযোগ্য। ভেতরে পোকা-মাকড় বাসা বেঁধেছে। আশপাশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে।
সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা জামিনি আক্তার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। বড়চওনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস প্রেষণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকায় কর্মরত। এ ছাড়া বহেড়াতৈল কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা মরিয়ম আক্তার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, স্থাপনাবিহীন যাদবপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা জান্নাত আরা জ্যোতি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ও স্থাপনাবিহীন হাতিবান্ধা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেষণে কর্মরত আছেন। এ ছাড়া বাঘেরবাড়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা শামসুল আলম নিজ কর্মস্থলেই কাজ করছেন।
সেবা নিতে আসা নুরভানু নামে এক হাঁপানি রোগীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়তই এ কেন্দ্রে সেবা নিতে আসি। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য সখীপুর হাসপাতাল অথবা দূরে কোথাও যেতে হয়। গরিব হওয়ায় অন্যত্র যাওয়ার সামর্থ্য নেই।’
বড়চওনা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি বেহাত হওয়ার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা জমির উদ্দিন জানান, জমিটি উদ্ধার করে সীমানা প্রাচীর ও ভবন নির্মাণের দাবি তাদের। তাঁর অভিযোগ, এ সেবা কেন্দ্রে গত ৮-১০ বছরে একজন চিকিৎসা কর্মকর্তার দেখা মেলেনি।
বড়চওনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত সেকমো আবদুল মালেক সিদ্দিকী সমকালকে বলেন, ‘ডাক্তার ও অফিস সহায়ক না থাকায় তাদের কাজ ফার্মাসিস্ট ও আমাকেই করতে হচ্ছে। আবাসিক ভবন পরিত্যক্ত থাকায় ১২ কিলোমিটার দূরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।’ তাঁর দাবি, প্রতিদিন এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৮০ থেকে শতাধিক রোগী সেবা নিতে আসেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেহানা পারভীনের ভাষ্য, জমিটি উদ্ধারে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। চিকিৎসা কর্মকর্তাদের সংযুক্তি বাতিল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন পাঠানো হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর আশা, শিগগিরই বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাসখানেক ধরে গরম হচ্ছিল ঘরের মেঝে, বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩
  • গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে
  • চিকিৎসক-স্থাপনা কিছুই নেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে
  • লোহাগাড়ায় জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, দুর্ঘটনার ঝুঁকি