ভিক্ষাবৃত্তি না ছাড়ায় বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে গলা টিপে ধরেন ছেলে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবা। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া সায়দুল্লাহ মিয়া হাউজিং সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মামলা করেছেন আসমা বেগম। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব।

নিহত ব্যক্তির নাম হাফিজ উদ্দিন (৭৫)। অভিযুক্ত ছেলে আল আমিন (২৫) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তারা নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দড়িহাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হাফিজ উদ্দিন স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে ভৈরবে থাকতেন। মেয়ে আসমা বেগমের (২০) বিয়ে হয়েছে। ছেলেকে বিয়েও দিয়েছিলেন, তবে সংসার টেকেনি। বয়সের কারণে তিনি কাজ করতে পারছিলেন না, তাই ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। তবে আল আমিন চাইতেন, তার বাবা যেন ভিক্ষা করা বন্ধ করেন। কিন্তু হাফিজ উদ্দিন এ অনুরোধ শোনেননি। বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। গতকাল রাতে একই ইস্যুতে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আল আমিন তার বাবার গলা চেপে ধরেন ও ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই হাফিজ উদ্দিন মারা যান। মৃত্যুর আগে হাফিজ উদ্দিনের গোঙানির শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তখন ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতিবেশী তিথি বেগম বলেন, আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকত তারা। আল-আমিন অটো চালাত। ঘরের সব কাজও তিনি করতেন। তবে তার বাবার সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মাঝে মাঝেই ঝগড়া হতো। মধ্য রাতে এক প্রতিবেশী আমাদের খবর দেয়। আমরা এস দরজা ধাক্কাধাক্কি করি। কিন্তু আলআমিন ঘরের দরজা খোলেনি। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেই আমরা। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ও আলআমিনকে আটক করে। 

ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আবু তালেব বলেন, আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাবাকে মেরে ফেলার একটিমাত্র কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি। সেটি হলো বাবার ভিক্ষা পেশার প্রতি রাগ। এ ছাড়া আর কোনো কারণ আছে কি না, তা–ও দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত আলআমিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ব ব ক হত য

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে জেলা পর্যায়ে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ খামারবাড়ি'র আয়োজনে ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় জেলা পর্যায়ে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আ.জা.মু. আহসান শহীদ সরকার'র সভাপতিত্বে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঢাকা'র মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা'র অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (প্রশাসন ও অর্থ উইং) খামারবাড়ি  ঢাকা'র উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মুরাদুল হাসান ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকা'র ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল কাইয়ুম মজুমদার।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ জহিরুল হক'র সঞ্চালনায় সভায় প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকা'র সিনিয়র মনিটরিং অফিসার ড. মোছাঃ শারমিন সুলতানা। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদা হাসনাত।

সভায় জেলার বীজ প্রত্যয়ন অফিসের কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপপরিচালক, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র, ৫ উপজেলার কৃষি অফিসার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, জেলা কৃষি বিপনন অফিসের কর্মকর্তা, উপসহকারি পরিচালক, বিএডিসি, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৫জন উদ্যোগক্তা এবং কৃষিপন্য রপ্তানিকারক অংশগ্রহণ করেন।

প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্যেশ্য হলো-মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী, স্থানীয় গ্রহণযোগ্য ফসলের শস্যবিন্যাস ভিত্তিক নিবিড় ও চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, খাদ্য ঘাটতি হ্রাসকরণ, নিরবিচ্ছিন্ন পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্যিক কৃষি, উদ্যোগক্তা তৈরি, মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ