সরাসরি: ২২ বছর আগের শোনা কথার প্রতিধ্বনি হচ্ছে ২০২৫ সালে ইরানেও
Published: 23rd, June 2025 GMT
“আজ আমাদের কাছে এমন এক শক্তি আছে, যা দিয়ে একটি বিপজ্জনক ও আগ্রাসী শাসনব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার মাধ্যমে একটি জাতিকে মুক্ত করা সম্ভব। নতুন কৌশল ও নিখুঁত অস্ত্রের মাধ্যমে আমরা সামরিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারি, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সহিংসতা না চালিয়েই।”
এই কথাগুলো শুনলে মনে হতে পারে, এগুলো গতকালই ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর কোনো মার্কিন নেতা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়।
এই কথাগুলো বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ; ২০০৩ সালের ১ মে, ইউএসএস আব্রাহাম লিঙ্কনে দাঁড়িয়ে, যখন তিনি ইরাকে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শেষ হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছিলেন। আজ যখন ইরানের সঙ্গে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমান সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে, তখন বিশ্বনেতারা এমন ভাষা ও বক্তব্য ব্যবহার করছেন, যা আশঙ্কাজনকভাবে ২০ বছর আগের ইরাক যুদ্ধের প্রাক্কালীন সময়ের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
প্রতিশোধ: ইসরায়েলে নতুন করে জোরদার হামলা শুরু করেছে ইরান
পুতিন বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ‘অকারণ’
পরিচিত সতর্কতা, একই রকম যুক্তি
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালাচ্ছে যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে। অন্যদিকে, ইরান দৃঢ়ভাবে বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার একই দাবি করে আসছেন, ইরান শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলবে। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে উপস্থিত হয়ে ইরাকে হামলার আহ্বান জানান, দাবি করেন বাগদাদে গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) তৈরি হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার কথাও তখন বলেছিলেন।
পরবর্তীতে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আগ্রাসন চালায় কিন্তু সেখানে কোনো ডব্লিউএমডি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক উস্কানিমূলক বক্তব্য ইরানের কথিত পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে এখন স্পষ্টভাবে ‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের’ ইঙ্গিত দিচ্ছে।সেই একই পথ, ইরাকের মতো। যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র বহুবার বিতর্কিতভাবে করে গেছে।
আবার কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে?
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের তথাকথিত ‘ঐচ্ছিক জোট’ পরিচালিত যুদ্ধ ইরাককে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল। এতে লাখো ইরাকি নিহত হন, প্রায় ৪ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা প্রাণ হারান এবং দেশটিতে গভীর সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও স্থায়ী অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
পেছনে ফিরে তাকালে সেই ২০০৩ সালের যুদ্ধের আগে ব্যবহৃত ভাষ্যগুলো আজকে ইরানের সঙ্গে আশঙ্কাজনকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ মনে হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সে সময় পুরো বিশ্বকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিল যে, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে; যদিও যুদ্ধের পর সেগুলোর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এখন ২০২৫ সালে ইরানকে কেন্দ্র করে যেন একই কৌশল আবার ফিরে এসেছে; একইরকম বক্তৃতা, একই ধরনের ‘বিপদ দেখানোর ভাষা’ এবং একই ধরনের সামরিক প্রস্তুতির যৌক্তিকতা তৈরি।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ২০০৩ স ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
কলেজে শিক্ষা কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত
অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন আবেদনে শিক্ষা কোটা–২–এর ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সব কলেজ অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১০ আগস্ট আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি কর্তৃক জারি করা ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন আবেদনে এডুকেশন কোটা–২ (ইকিউ–২) স্থগিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পাঠানো হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষা কোটায় ভর্তিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্যাডারদের সন্তানদের জন্য নির্ধারিত কোটা ঘিরে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে।
আরও পড়ুনএকাদশ শ্রেণি: ভর্তিতে ‘শিক্ষা কোটায়’ অনিয়ম১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা–১) এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি স্কুল–কলেজ ও কার্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা–২) রাখা হয়েছে। তবে পৃথক কোটা হওয়া সত্ত্বেও অধীন দপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের অনেকেই শিক্ষা কোটা–১–এ আবেদন করে নির্বাচিতও হয়েছে। পরে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এবার স্থগিত করা হয়েছে আগের সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুনকিউএস গ্লোবাল এমবিএ র্যাঙ্কিং ২০২৬: শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস স্কুলগুলো২ ঘণ্টা আগে