সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি ব্লাস্টের
Published: 24th, June 2025 GMT
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্ত এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ বিচারের জোর দাবি জানিয়েছে আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্লাস্ট জানায়, গত রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানী উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ উত্তরার পাঁচ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে নূরুল হুদাকে আটক করে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ডিবি হেফাজতে নিয়ে যায়।
ব্লাস্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্র এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়— আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনে একদল পুরুষ নূরুল হুদাকে মারছে এবং তাঁর গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপমানজনক আচরণ করছে।
এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার ও সংবিধানের লঙ্ঘন এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ এবং ৩৫(৫) অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিক আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী, আইনানুগ প্রক্রিয়া ব্যতীত বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে, এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না এবং কোনো ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর শাস্তি প্রদান বা আচরণের করা যাবে না।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একাধিক রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো ধরনের বিচারবহির্ভূত শাস্তি দিতে পারে না। পাশাপাশি দণ্ডবিধির ধারা-৩২৩ ও ৩২৫ ধারায় কোনো ব্যক্তিকে স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত প্রদানকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলা হয়েছে। জনসমক্ষে সংঘটিত এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবলমাত্র সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন নয়, এটি বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি চরম অবজ্ঞা।
গতকাল মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) গণমাধ্যমে আলাদা বিবৃতি পাঠিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি বা জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদার প্রতি অপমানজনক ও সহিংস আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষিত শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা চিকিৎসক বরখাস্ত
চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণের ভিডিও ভাইরালের পর পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-৩ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালী হাসপাতালে র্যাবের অভিযান, ৭ দালালের কারাদণ্ড
জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে রোগের চিত্র, বাড়ছে বিরল সংক্রমণ
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘তার আচরণ ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য করে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি প্রচলিত নিয়মে খোরপোশ ভাতা পাবেন।’’
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বরখাস্তের আদেশ আমরা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত তার পরিবর্তে স্থায়ীভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। যেহেতু তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছিলেন, তাই গত শুক্রবার থেকে তাকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. রাহিমুল।”
গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনদের সঙ্গে ডা. আবুল কাশেমের অশালীন আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকেও তাকে শোকজ করা হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ কপি শেয়ার করে লিখেছেন, “পঞ্চগড় জেলার একমাত্র সদর হাসপাতালকে আমরা জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে দেখতে চাই, যেখানে সেবা হবে মুখ্য। আমরা ডাক্তারদের পাশে থাকতে চাই, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেগুলো সমাধান করতে চাই। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু কোনো পদবী বা পেশাকে অপব্যবহার করে কেউ যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, সাধারণ মানুষের ন্যূনতম আত্মসম্মানকে মূল্য না দেয়, তাহলে আমরা নির্দ্বিধায় সাধারণ মানুষের কণ্ঠ হয়ে কাজ করব। অন্যায় করে আর কেউ পার পেয়ে যাবে না ইনশাআল্লাহ।”
ঢাকা/নাঈম/বকুল