ঘরবাড়ি বা অফিসের নির্মাণকাজ যত গুরুত্ব দিয়েই করা হোক না কেন, বছর ঘুরে এলেই এসবে লাগে বিশেষ যত্ন৷ আমাদের দেশে বর্ষাকালেই সাধারণত বাড়ি-অফিসের ভবনগুলোতে নানামুখী সমস্যা দেখা দেয় বেশি। তার মধ্যে দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে ভাব অন্যতম। শুধু স্যাঁতসেঁতে ভাবই নয়, ড্যাম্প দেয়ালকে সুরক্ষা দিতে দরকার বাড়তি যত্ন।

দেয়াল নষ্টের যত কারণ

নানা কারণে দেয়াল ড্যাম্প হতে পারে। তবে আমাদের দেশে মোটামুটি যে কারণগুলো বেশি দেখা যায় তার মধ্যে আছে—

অতিরিক্ত বৃষ্টি: টানা বৃষ্টি হলে পানি দেয়ালের ফাঁকফোকর দিয়ে চুইয়ে ছাদ বা জানালার পাশ দিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। বিশেষ করে যদি ছাদ বা দেয়ালের প্লাস্টার বা রং পুরোনো হয়ে যায়। দেয়ালে ফাটল থাকলে পানি ঢুকে সহজেই দেয়াল ভিজে যায়।

অতিরিক্ত আর্দ্রতা: বর্ষাকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ও আর্দ্রতা থাকে অনেক বেশি। এই আর্দ্রতা দেয়ালে ঘনীভূত হয়ে ড্যাম্প বা স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি করে।

ভূগর্ভস্থ পানি উঠে আসা: বাড়ির ভিতে বা মাটির কাছাকাছি অংশে পানির স্তর বেড়ে গেলে সেই পানি নিচ থেকে দেয়ালের ভেতর দিয়ে ওপরে উঠে আসে। বর্ষাকালে এটি বেশি হয়।

অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল: ঘর বদ্ধ হলে বা আলো-বাতাসের চলাচল কম থাকলে আর্দ্রতা দেয়ালে জমে স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি করে।

স্যানিটারি বা ড্রেনেজ পাইপে ফাটল: বৃষ্টি ছাড়াও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, বাথরুম, রান্নাঘর বা পানির ট্যাংকের টাইলস বা পাইপে ছিদ্র দেয়ালে ড্যাম্প তৈরির একটি অন্যতম কারণ।

যে জায়গাগুলোতে বাড়তি নজর দিতে হবে

ঘরের দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে ভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে দেয়াল ফুলে যায়। যে কারণে দেয়ালের রং নষ্ট হয়। দেয়ালে দীর্ঘদিনের ড্যাম্পের সমস্যায় ঘরে মোল্ড বা ফাঙ্গাসও বাসা বাঁধে। ঘরের কর্নার, ছাদের সিলিং ও দরজা-জানালার আশপাশের জায়গাগুলোতে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়; দুর্গন্ধও হয়। এসব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাড়ি বা অফিসের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থা বুঝে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হয়।

ওয়াশরুম: যেকোনো মৌসুম হোক না কেন, বাড়ির অন্যান্য জায়গার চেয়ে ওয়াশরুমে আর্দ্রতা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই ওয়াটারপ্রুফিং–ব্যবস্থা ভালো না থাকলে এখান থেকেই শুরু হতে পারে ফাঙ্গাসের বিস্তার। ওয়াশরুমে ওয়াটার কোটিং তাই খুব জরুরি। দেয়াল বা ফ্লোর সব জায়গায় ওয়াটারপ্রুফ গ্যাপ ফিলার বা সলিউশন পানির বিন্দু বিন্দু লিকেজ থেকে বাঁচায়।

ছাদ এবং পানির ট্যাংক: কড়া রোদ হোক আর মুষলধারে বৃষ্টি, বাইরের ঝড়-ঝাপটা, আবহাওয়ার বৈরীভাব, ট্যাংক থেকে পানি পড়া, ফাটল—সব ছাদের ওপর দিয়েই যায়। বছরের পর বছর চলতে থাকা এই বৈরিতা ছাদের কার্নিশ আর কোণাগুলোকে দুর্বল করার জন্য দায়ী। ছাদে পানি প্রতিরোধী সুরক্ষা না থাকলে প্রতিনিয়ত পানির লিকেজ বেডরুম থেকে শুরু করে পুরো বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশনকেই দুর্বল করে ফেলে। এ জন্য ওয়াটারপ্রুফ পলিমার বা সিমেন্ট ভালো করে ফাটলের লাইনে দিতে হবে।

অন্দর: ওয়াশরুম বা ছাদে ওয়াটারপ্রুফ ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অন্দরের দিকে তেমন একটা খেয়াল করা হয় না। ইন্টেরিয়র লিকেজ শুরু মানে পুরো ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট। সাধারণত বাথরুমের পাশের দেয়ালগুলো অন্দরের দেয়ালে ড্যামেজ তৈরি করে। ড্যাম্প দেয়ালের কারণে ঘরে বাজে গন্ধ হতে পারে, আসবাব নষ্ট হওয়ার জন্যও অনেক সময় দায়ী থাকে ড্যাম্প দেয়াল। তাই অন্দরে রং করার সময় রংটা ওয়াটারপ্রুফ কি না, খেয়াল রাখা উচিত।

আরও পড়ুনঅন্দরসজ্জার রং নির্বাচনের আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত০৩ জুন ২০২৫দেয়ালের সুরক্ষায়ড্যাম্প দেয়ালকে সুরক্ষা দিতে দরকার বাড়তি যত্ন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ স রক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে জেলা পর্যায়ে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ খামারবাড়ি'র আয়োজনে ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় জেলা পর্যায়ে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আ.জা.মু. আহসান শহীদ সরকার'র সভাপতিত্বে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঢাকা'র মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা'র অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (প্রশাসন ও অর্থ উইং) খামারবাড়ি  ঢাকা'র উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মুরাদুল হাসান ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকা'র ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল কাইয়ুম মজুমদার।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ জহিরুল হক'র সঞ্চালনায় সভায় প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকা'র সিনিয়র মনিটরিং অফিসার ড. মোছাঃ শারমিন সুলতানা। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদা হাসনাত।

সভায় জেলার বীজ প্রত্যয়ন অফিসের কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপপরিচালক, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র, ৫ উপজেলার কৃষি অফিসার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, জেলা কৃষি বিপনন অফিসের কর্মকর্তা, উপসহকারি পরিচালক, বিএডিসি, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৫জন উদ্যোগক্তা এবং কৃষিপন্য রপ্তানিকারক অংশগ্রহণ করেন।

প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্যেশ্য হলো-মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী, স্থানীয় গ্রহণযোগ্য ফসলের শস্যবিন্যাস ভিত্তিক নিবিড় ও চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, খাদ্য ঘাটতি হ্রাসকরণ, নিরবিচ্ছিন্ন পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্যিক কৃষি, উদ্যোগক্তা তৈরি, মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ