দুই নারীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। এক দিন পর হামলাকারী থানায় উল্টো অভিযোগ করেন। দুই নারীকে ধরে আনে কক্সবাজারের চকরিয়া থানা পুলিশ। থানায় ১০ ঘণ্টা আটকে রেখে আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে গত ২৩ জুন চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী (২৭)। ওই মামলায় শাহরিয়ার রোস্তম মানিককে একমাত্র আসামি করা হয়। তিনি চকরিয়া পৌরসভার কাহারিয়াঘোনা মাস্টারপাড়ার নূর মোহাম্মদ বাবুর ছেলে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ডিবি পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দেন।

ওই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভাড়া বাসায় বাদী এবং আরেক নারী ও তাঁর শিশুসন্তান থাকেন। ৮ জুন রাত ৮টার দিকে বাসায় আসেন মানিক। অন্য নারীর স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছেন জানিয়ে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার পর অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। চিৎকার করলে বাদী এগিয়ে যান। তখন তাঁকে গলা চেপে ধরেন মানিক। দুইজনে ধস্তাধস্তির সময় তাঁর এক হাতের আঙুল কামড়ে মাংস ছিঁড়ে ফেলেন মানিক। এরপর বাইরে থেকে দরজা আটকে পালিয়ে যান।

মামলার বাদী বলেন, তারা চকরিয়া থানায় অভিযোগ করতে গেলে মানিক ও তাঁর কয়েক সহযোগী মামলা না করে আপসের হুমকি দেন। পরদিন দুপুরে চকরিয়া থানায় এজাহার জমা দিলে তা মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয়নি। তখন তারা ২৩ জুন আদালতে মামলার আবেদন করেন। বিচারক তা আমলে নিয়ে কক্সবাজার ডিবিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এদিকে ২৫ জুন হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চকরিয়া থানায় পাল্টা মামলা করেন মানিক। এতে ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

ভুক্তভোগী নারী জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ চকরিয়া থানার এসআই মো.

শফিকুল ইসলাম রাজা তাদের ওসির কথা বলে থানায় নিয়ে যান। সেখানে জানতে পারেন, তাদের নামে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২ ঘণ্টা থানার হাজতে আটকে রাখা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়। এরপর আমরা আদালতে নালিশি মামলার কাগজপত্র দেখাই। রাত ৯টায় ওসির সঙ্গে দেখা করি। বিষয়টি খুলে বলি। আমাদের মামলার কথা শুনে ওসি, এসআই বেকায়দায় পড়েন। এরপর রাতে সমঝোতার চেষ্টা করেন। কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার পর জোর করে আমাদের কাছ থেকে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেন। রাত সোয়া ২টার দিকে আমাদের থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’

স্ট্যাম্পে ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ উল্লেখ আছে জানিয়ে বাদী আরও বলেন, ওই নারীর আড়াই বছরের সন্তান থাকায় কৌশলে থানা থেকে বের হতে স্ট্যাম্পে সই করেছেন তিনি। সেখানে একজন অ্যাডভোকেটও ছিলেন। যুবকের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘দুই পক্ষ মামলা উঠিয়ে নেবে এবং ক্ষতিপূরণ দেবে বলে আপস হয়েছে। সেখানে একজন আইনজীবীও ছিলেন।’

চকরিয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষ তাদের মামলা তুলে নেবে মর্মে আপস করেছে। এ কারণে আসামি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

এপিপি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, ‘আসামি ধরার পর পুলিশ কীভাবে আপস করে, এটি বুঝে আসছে না। তবে আদালত ছাড়া থানায় মামলা আপস করার সুযোগ নেই। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চকর য়

এছাড়াও পড়ুন:

এসআই সুকান্ত দাশ গ্রেপ্তার

পুলিশের এসআই সুকান্ত দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি যৌথ দল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকা থেকে এসআই সুকান্ত দাসকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে তুলে দেয় স্থানীয়রা। পরে রাতেই তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

সুশান্ত দাশকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার দুপুর থেকে কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ৯টায় ছাত্ররা চলে গেলে তালা ভেঙে কার্যালয় থেকে বের হন পুলিশ কর্মকর্তারা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে ফের কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছিল ছাত্ররা।

খুলনা সদর থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় এসআই সুকান্তের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন ও গণগ্রেপ্তার চালানোর অভিযোগ ছিল। অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। অভ্যুত্থানের পর সুকান্তকে প্রথমে ঢাকায়, পরে চুয়াডাঙ্গায় বদলী করা হয়।

কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, সদর থানায় দায়ের হওয়া একটি বাড়ি ভাঙচুর মামলায় সুকান্তকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। একজন সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তার সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণ করতে সময় লেগেছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর সভাপতি আল শাহরিয়ার জানান, আমাদের প্রধান দাবি মানা হয়েছে। আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেএমপি কমিশনারকে না সরালে খুলনা অচলের হুঁশিয়ারি
  • রাজধানীতে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের আরোহী বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী নিহত
  • কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে আবার বিক্ষোভ
  • কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ
  • পুলিশের এসআই সুকান্ত দাসকে কারাগারে প্রেরণ  
  • সেই এসআই গ্রেপ্তার, এবার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে কেএমপি ঘেরাও
  • সেই এসআই গ্রেপ্তার, কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে আজও বিক্ষোভ
  • আলোচিত এসআই সুকান্ত অবশেষে গ্রেপ্তার
  • এসআই সুকান্ত দাশ গ্রেপ্তার