Samakal:
2025-07-07@23:15:40 GMT

কোনো এক মায়াবীর মোহনায়...

Published: 7th, July 2025 GMT

কোনো এক মায়াবীর মোহনায়...

ইশতেহার 
নাঈমুল হাসান তানযীম 

আমি সত্য বলি অকপটে 
অধিকারের কথা বলে যাই দীপ্ত কণ্ঠে–
আমাকে প্রাণের ভয় দেখায় লোকে,
ইঙ্গিত দেয়—
গুম, খুন কিংবা জীবননাশের।

অথচ, তারা জানে না
আমাকে হত্যার পরেই
আবার সূচিত হবে নয়া ইনকিলাব 
আমার শাহাদাতের পরে
আবার রাজপথ ধরে হেঁটে যাবে 
বিপ্লবী কাফেলার বিজয়-স্লোগান।

 

কদম ফুলের ঘ্রাণ
শারমিন নাহার ঝর্ণা

বর্ষায় অসীম আকাশটা সিক্ত
মেঘবালিকার ভালোবাসায়,
ঝরঝর বৃষ্টিতে গভীর আহ্লাদে
ভিজেছে মৃত্তিকার শরীর।
ভেজা কাদা মাটির গন্ধ লেপ্টে আছে
সবুজ থকথকে দুর্বাঘাসে।
খোলা জানালা দিয়ে ধেয়ে আসে
অপেক্ষারত হৃদে কদম ফুলের ঘ্রাণ,
বর্ষার মোহনীয় রূপে সজীব হয় প্রাণ।
 

 

মন খারাপের আয়োজন 
গোলাম সরোয়ার  

মন ভালো নেই আজ বহুদিন,
হাসি-কান্নার মাঝে শূন্যতা জমে গেছে।
সবকিছু ঠিক আছে বললেও,
ভেতরের অশান্তিটা থামে না কিছুতেই।

রাতের পর রাত যায় ঘুম আসে না চোখে,
পুরোনো কিছু স্মৃতি চোখের পাতায় 
হালকা জলের মতো জমে থাকে।
ভালো থাকার অভিনয়টাই এখন ক্লান্তিকর।

মন ভালো নেই তাই সমুদ্র দেখতে
শত মাইল পেরিয়ে যাওয়ার দরকার নেই।
প্রত্যেক মানুষের ভেতর সমুদ্র আছে। 
দুঃখের সমুদ্র, এবং পানিটা হলো নোনা!

 

 

পুষ্পস্নান
রকিবুল ইসলাম

তোমার অম্বরে রবির দীপ্তি,
প্রবল খরায় বারির আবাহন!
আমি দাহ হই, মরি খরতাপে,
বহেনা ধরায় দখিনা-পবন।
তোমারে রাঙায় সাতরঙা আবির,
হর্ষ আমোদে জোড়ায় নয়ন।
আমার আকাশ ঢাকা মেঘে, 
অবিরত চলে দুঃখের দহন। 
যাতনারা এসে ভিড় করে,
করে যায় মোরে চুম্বন।
স্বর্গীয় সুখের নিবিড় আলিঙ্গনে,
আবিষ্ট তুমি কর পুষ্পস্নান।
 

 

নির্বাক নীরবতা
শোয়েব সিফাত শিমুল

জানো, নিস্তব্ধ রাতের একা পথে
চাঁদের আলোও মলিন মনে হয়।
জোনাকি ভেসে চলে নিঃশব্দে—
কোনো এক মায়াবীর মোহনায়।

সেখানে নিস্তব্ধতাও ভয় পায়,
উত্তর চায় অব্যক্ত অনুভবে।
ঘড়ির কাঁটায় জমে থাকা স্মৃতি
কুয়াশা হয়ে ভেসে যায় নিঃশ্বাসে।
 

 

ভাঙনের সুর 
জি এম রুহুল আমিন 

বার্ধক্যের জরাজীর্ণ কোষ-কলাগুচ্ছ
ডাস্টবিনের জঞ্জাল যেন মনে হয়, 
স্নায়ুতন্ত্রে জাগে না আর উষ্ণ কাঁপন 
সহজে মেনে নেয় সহজ পরাজয়। 

কণ্ঠস্বরে গীতিময় তরঙ্গের মেলোডি 
মুছে যায় প্রায়শ্চিত্তের পীড়নে,
জীবনের প্রান্তরে দুঃস্বপ্নের ক্রান্তিকাল
শরাহত প্রাণ কাঁদে ভালোবাসা বিনে।

খরাক্রান্ত হৃদয়ে বিবর্ণ পুষ্পগুলো 
অকালে ঝরে যায় বিষণ্নতা ছুঁয়ে,
ডাকে না কেউ, ভালোবাসার উৎসবে
চোখের পাতায় সব স্বপ্ন যায় ধুয়ে।

অস্তাচলে সূর্যের চোখ স্পষ্টত মলিন
গতিহারা নদীর বুকে জাগে বালুচর,
জানিনে পথের শেষ আরও কত দূরে 
ভাঙনের ভয়ে কাঁপে বিমর্ষ অন্তর।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনক

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনক বলে এক পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। এ সময়ের বিভিন্ন ঘটনায় মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সোমবার এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।  

এতে বলা হয়, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও বাংলাদেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দেশের মানুষ এখনও স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পায়নি। স্বাধীনতার পর ২০২৪ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল সবচেয়ে ভীতিকর ও চরম উদ্বেগজনক। গত আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ছাত্র-জনতার মাঝে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আস্বাদনের আকাঙ্খা  সৃষ্টি হলেও তার প্রতিফলন মূলত ঘটেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্টরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারেনি। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা হতাশাজনক। নতুন বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের প্রত্যাশা থাকলেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্বের ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি এতে নতুন কিছু বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। রমজান মাসে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দ্রব্যমূল্য ও দুই ঈদযাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। ’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু, গণপিটুনিতে নির্যাতন ও হত্যা, নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও নির্যাতনে মৃত্যু, শ্রমিকদের ওপর হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, মাজারে হামলা ও ভাঙচুর, কারাগারে মৃত্যু, সভা-সমাবেশে বাধা প্রদান, আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাসহ বেশ কিছু সামাজিক অপরাধ ঘটেছে যা জনমনে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করেছে। শেখ হাসিনার বক্তব্য নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ৫, ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদন এবং সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের অফিস ও নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।  জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারের রায় ঘোষণার পর বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সাথে শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত ১২ মে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সব সংগঠনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ শিক্ষার্থীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। রাজধানীতে বিভিন্ন দাবি আদায়ে রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। আদালত ও কারা ফটকে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা; থানা ও পুলিশের ওপর হামলা করে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে । দেশে সন্ত্রাসবাদ দমন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে ও বিশেষ অভিযানে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, ভারত সীমান্তে সংঘর্ষ, উত্তেজনা, বিএসএফের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ, উসকানি, বাংলাভাষী মানুষদেরকে পুশইন করা, এমনকি নিরীহ বাংলাদেশিকে হত্যা, আহত ও গ্রেপ্তার এবং মিয়ানমারের আরাকান আর্মি কতৃক বাংলাদেশি জাহাজ আটক, সীমান্তে গুলি, মাইন ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের মত বিভিন্ন ঘটনা মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ