হ্যাটট্রিক স্বীকৃতি অর্জন করলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
Published: 7th, July 2025 GMT
দেশের অন্যতম বেসরকারি বিমানসংস্থা ইউএস‑বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২৪ সালের জন্য ‘বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন অব দ্যা ইয়ার’ পুরস্কার লাভ করেছে। দেশের জনপ্রিয় ট্রাভেল পাক্ষিক সংবাদপত্র দি বাংলাদেশ মনিটর সংস্থাটিকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে। এবার নিয়ে হ্যাটট্রিক, অর্থাৎ তৃতীয়বারের মতো এই সম্মান অর্জন করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলায়েন্স।
গত ৫ জুলাই রাজধানী ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম, জুরি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম, শেয়ার ট্রিপের প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হকসহ অন্যান্য অতিথিরা।
এছাড়া বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ও বেস্ট ইমপ্রুভড এয়ারলাইন্স ক্যাটাগরিতে গোল্ড, বেস্ট অন-টাইম পারফরমেন্স, বেস্ট এয়ারপোর্ট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে সিলভার এবং মোস্ট কাস্টমার ফ্রেন্ডলি এয়ারলাইন ক্যাটাগরিতে ব্রোঞ্জ এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। অতিথিদের কাছ থেকে বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ও বেস্ট ইমপ্রুভড এয়ারলাইন্স ক্যাটাগরিতে গোল্ড পুরষ্কার গ্রহণ করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ মো. কামরুল ইসলাম।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন মনে করেন ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রতি সব ধরনের স্বীকৃতি যাত্রীদের আস্থার প্রতিদান। এ ধরনের স্বীকৃতি ভবিষ্যতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স উত্তরোত্তর আরও ভালো করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
উল্লেখ্য, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২৪, ২০২৩, ২০২২ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশ মনিটর কর্তৃক ‘বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন’ পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিল। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।
যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে
২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।
শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’
গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’