প্রভিশন সংরক্ষণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন নির্দেশনা
Published: 7th, July 2025 GMT
শেয়ার ও ইক্যুইটি, বন্ড ও ডিবেঞ্চার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং কমার্শিয়াল পেপারে বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে নতুন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বর) শেয়ার ও ইক্যুয়িটি, বন্ড ও ডিবেঞ্চার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং কমার্শিয়াল পেপারে বিনিয়োগের বিপরীতে যথাযথ প্রভিশন সংরক্ষণ করবে। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলো নির্ধারিত ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রভিশন সংরক্ষণের বিবরণীর হার্ডকপি ও সফটকপি বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে পাঠাতে হবে।
সোমবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে।
আরো পড়ুন:
পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ২২৮ শতাংশ
এনসিসি ব্যাংকের ব্যাংকিং কার্যক্রম ৫ দিন বন্ধ
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর প্রস্তুত করা বিবরণীগুলো তাদের আর্থিক অবস্থার যথাযথ প্রতিফলন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ঋণ, লিজের পাশাপাশি শেয়ার ও ইক্যুয়িটি, বন্ড ও ডিবেঞ্চার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, কমার্শিয়াল পেপারে বিনিয়োগ ও তাদের সাবসিডিয়ারি, সহযোগী প্রতিষ্ঠানে ইক্যুয়িটি বিনিয়োগে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যথাযথ প্রভিশন হিসাবের প্রয়োজন। এমতাবস্থায় ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর উল্লিখিত বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হলো।
তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ
তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইক্যুয়িটি, বন্ড ও ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্ণিত সিকিউরিটিজগুলোর বাজারমূল্য ক্রয়মূল্য অপেক্ষা কম হলে দুইয়ের পার্থক্যকে ‘বিনিয়োগজনিত ক্ষতি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ভিত্তি তারিখে সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক তহবিলের (শেয়ার ও ইক্যুয়িটি, বন্ড ও ডিবেঞ্চার) পৃথক গেইন বা লসনিট অব করে প্রভিশন সংরক্ষণ করা যাবে।
অ-তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এরূপ প্রতিষ্ঠানের ইক্যুয়িটি শেয়ার, প্রেফারেন্স শেয়ার এবং বন্ড ও ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে অ-তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ইক্যুয়িটি শেয়ারে (সাবসিডিয়ারি ও সহযোগীসহ) বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভিত্তি তারিখে উক্ত ইক্যুয়িটি শেয়ারের (প্রেফারেন্স শেয়ার ব্যতীত) মূল্য তাদের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী নীট সম্পদ মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। এই পদ্ধতিতে শেয়ারের নির্ধারিত মূল্য উক্ত শেয়ারের ক্রয়মূল্য অপেক্ষা কম হলে, দুইয়ের পার্থক্য ‘বিনিয়োগজনিত ক্ষতি’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি যদি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের ইক্যুয়িটি শেয়ারে বিনিয়োগ করে থাকে, যাদের ধারাবাহিকভাবে ভিত্তি তারিখ পূর্ববর্তী ৩ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী নেই অথবা বিনিয়োগকৃত কোম্পানিটির কোনো অস্তিত্ব নেই অথবা ধারাবাহিকভাবে ৩ বছর কোনো মুনাফা প্রদান করেনি, এরূপ ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের সমপরিমাণ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে।
অ-তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নন-কনভার্টিবল প্রেফারেন্স শেয়ার, বন্ড ও ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো হিসাববর্ষ শেষে উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদেয় সুদ বা লভ্যাংশ (নগদ) ফাইন্যান্স কোম্পানি না পেয়ে থাকলে বর্ণিত সিকিউরিটিজগুলোর বিনিয়োগের বিপরীতে সুদ বা লভ্যাংশ (নগদ) অনাদায়ী হওয়ার পর বিনিয়োগ হিসাবে প্রদর্শিত মূল্যের উপর যেভাবে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রথম হিসাববর্ষ শেষে ২৫ শতাংশ, দ্বিতীয় হিসাববর্ষ শেষে ৫০ শতাংশ, তৃতীয় হিসাববর্ষ শেষে ১০০ শতাংশ এবং স্বল্পমেয়াদি বন্ড বা ডিবেঞ্চারের ক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তিতে সমুদয় অর্থ ফেরত পাওয়া না গেলে মেয়াদপূর্তির অব্যবহিত হিসাববর্ষ থেকে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্য সুদের (বিনিয়োগের উপর ধার্যকৃত সুদ যা আদায় হয়নি) দফাগুলো সৃষ্টির তারিখ থেকে ৬ মাস বা তদূর্ধ্ব কিন্তু ১ বছরের কম সময়কাল পর্যন্ত অসমন্বিত থাকলে তা সন্দেহজনক মানে শ্রেণিকরণপূর্বক এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং ১ বছর বা তদূর্ধ্ব সময়কাল পর্যন্ত অসমন্বিত থাকলে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণপূর্বক এ সব দফার বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
তালিকাভুক্ত কিংবা অ-তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্য লভ্যাংশ নগদ আদায় ব্যতীত আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। এছাড়া মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে আগের জারি করা নির্দেশনা অনুসরন করতে হবে।
ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন য ন স ক ম প ন বন ড ও ড ব ঞ চ র ব ন য় গ র ব পর ত হ স ববর ষ শ ষ আর থ ক ব বরণ
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং