নিখোঁজের এক দিন পর পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী মরদেহ উদ্ধার হলেও ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের হাবলিপাড়া মসজিদ থেকে রোববার সকালে মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার হয়। এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি মেয়েটি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মাইকিংয়ের পর রাতে সরাইল থানায় জিডি করা হয়। 

লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রোববার রাতেই তার মা বাদী হয়ে সরাইল থানায় ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় হামিদুর রহমান (৩০) ও সাইদুল ইসলামকে (২১) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। 

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডিও বিষয়টি তদন্ত করছে। 

এদিকে পরিবারের সদস্যদের দাবি, পূর্ববিরোধের জেরে নয়, পাশবিকতার মনোবৃত্তি থেকেই ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তার প্রবাসী বাবা দেশে ফিরছেন। লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স বাড়ির আঙিনায় রাখা হলে শাহবাজপুর গ্রামসহ আশপাশ এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ময়নাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমান।

মেয়েটির মা জানান, হামিদুর মেয়ের লাশ মসজিদের দোতলায় পড়ে থাকার খবর দেন তাকে। তিনি তার ভাশুরকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের বিবস্ত্র লাশ উপুড় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার গলায় সালোয়ার প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে তিনি সেখানেই জ্ঞান হারান। 

তিনি আরও বলেন, ‘দুপর আড়াইটার দিকে মেয়ে মাদ্রাসারা অনুষ্ঠানে যায়। বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে এসে আমাকে দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে বাইরে যায়। আমাদের কোনো শত্রু নেই। যে বা যারা তাকে এভাবে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি মেয়েটি আত্বাকুয়া নুরানি তাহাফ্ফুজে কোরআন মাদ্রাসার নুরানি বিভাগে পড়ত। সেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ মো.

শফিউল্লাহ বলেন, ওই মেয়েটি বড় ভাই এ মাদ্রাসায় আমপারা শেষ করে কোরআন ছবক নিয়েছে। এ উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সেও যোগ দেয়। সে মাদ্রাসা থেকে খাবারের প্যাকেট নিয়ে বাড়িতেও ফেরে। বিকেল থেকেই শুনি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বাড়ির লোকজন মাদ্রাসার ছাদে এসে তাকে খুঁজেও গেছে। তিনি বলেন, রোববার সকাল ৭টার দিকে মসজিদে গিয়ে তার লাশ দেখেছি, তখনও তাজা রক্ত শুকায়নি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত খুনিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মসজিদের দক্ষিণ পাশ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আশফাকুল মতিন খসরু স্মৃতি পাঠাগার। সেখানে কয়েক মাস আগ পর্যন্ত ঢাকা থেকে একজন চিকিৎসক এসে বিন্যামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। এখন সেখানে কিছু লোক আড্ডা বসায়। 

সরাইল থানার ওসি মোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, আটক দু’জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থেই মামলার অগ্রগতির বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় র বব র মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

করাচিতে পাঁচতলা ভবন ধসে নিহত ১৪

পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচির লিয়ারি এলাকার বাগদাদি মহল্লায় একটি পুরোনো পাঁচতলা আবাসিক ভবন ধসে পড়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

শনিবার (৫ ‍জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জিও নিউজ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, করাচির লিয়ারি এলাকায় স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ: বিচার-পুনর্বাসন আর কবে?

বরগুনায় সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

পাকিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন তারা এবং এ পর্যন্ত ভবনটির ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৪ জনের মরদেহ তারা উদ্ধার করতে পেরেছেন। ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন চাপা পড়ে থাকায় সামনে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।

ঘটনাস্থল এবং উদ্ধার তৎপরতা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন করাচি’র মেয়র মুর্তাজা ওয়াহাব। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ধসে পড়া ভবনটি ১৯৭৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং কয়েক বছর আগে ভবনটিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা করেছিল নগর প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।

দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা তাদের ক্লান্তি নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্ট ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধার পরিষেবার নেতৃত্বদানকারী আবিদ জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হতে আরো আট থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

দক্ষিণ করাচির জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আরিফ আজিজ জানিয়েছেন, ভবনটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ বসবাস করছিলেন।

লায়ারিতে ভবন ধসের ঘটনায় ইতোমধ্যে শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আয়াজ সাদিক। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারকে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

ভবন ধসের ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাঈদ গনি। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ বছরেও হলো না ৬৫০ মিটার সেতু
  • নির্বাচনে কোন দল কত ভোট পেতে পারে, জানালেন তরুণরা
  • আগামী নির্বাচনে ৩৮.৭৬% ভোট পেতে পারে বিএনপি
  • আতশবাজি নিয়ে কটাক্ষের শিকার প্রিয়াঙ্কা
  • সীমান্ত বাণিজ্যে নতুন আশা ‘প্রশস্ত’ বিলোনিয়া সড়ক
  • মৌলিক সংস্কার না হলে স্বৈরাচারী কাঠামো বিরাজমান থাকবে
  • করাচিতে পাঁচতলা ভবন ধসে নিহত ১৪