লারার রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা না করেই কেন ইনিংস ঘোষণা, জানালেন মুল্ডার
Published: 7th, July 2025 GMT
‘প্রশ্নটা আমাকে করতেই হবে…’ এরপর শন পোলকের কণ্ঠে অবধারিত সেই জিজ্ঞাসা—আপনার সামনে ব্রায়ান লারার চার শ রান ছাড়িয়ে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক হওয়ার সুযোগ ছিল, তবুও মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ৩৬৭ রানে অপরাজিত থাকার সময় কেন ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন?
উইয়ান মুল্ডার এরপর দিলেন সেই উত্তর, যার জন্য অপেক্ষা ক্রিকেট দুনিয়ার সবার, ‘প্রথম কথাটা শুরুতে বলি—আমার মনে হয়েছে নতুন বল নেওয়ার জন্য যথেষ্ট রান আছে।’ প্রথম কথা মানে অবশ্যই দ্বিতীয় কোনো কারণও আছে। এক ইনিংসে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙার সুযোগ তো আর বারবার আসে না। তা জানেন মুল্ডারও। তিনিই ছিলেন অধিনায়ক, তাই রেকর্ড গড়ার সব সুযোগই ছিল।
আরও পড়ুনমুল্ডার আর ৫ ওভার ব্যাট করলে কী হতো, প্রশ্ন শামসির২ ঘণ্টা আগেকিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেটার জানিয়েছেন, যদি আবার এমন সুযোগ আসে তাহলেও নাকি একই কাজ করবেন—আর তা লারার প্রতি সম্মান জানিয়ে, ‘বাস্তবতা হচ্ছে ব্রায়ান লারা কিংবদন্তি। তাঁর ৪০০ রান ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তাঁর মতো কারও এই রেকর্ড থাকাটা বিশেষ কিছু। আমার মনে হয় যদি আবার সুযোগ পাই, সম্ভবত একই কাজ করব।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়ে টেস্টের কেবল দ্বিতীয় দিন চলছিল। সামনে সময়ও ছিল অনেক। ৫ উইকেটে ৬২৬ রান তোলার পর ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ১৭০ রানে অলআউট করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলো অন করতে নামা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৫১ রান করেছে, পিছিয়ে আছে ৪০৫ রানে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।